ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

হাসপাতালে খালেদা জিয়ার এক মাস

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৫৯, ২৭ মে ২০২১  
হাসপাতালে খালেদা জিয়ার এক মাস

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার এক মাস পূর্ণ হলো আজ (২৭ মে)।  গত ২৭ এপ্রিল তাকে রাজধানীর বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৭ মে) খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য প্রফেসর ডা. এফ. এম. সিদ্দিকী রাইজিংবিডিকে বলেন, বর্তমানে তিনি (খালেদা জিয়া) কোভিড পরবর্তী বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন।  তবে আগের তুলনায় শারীরিক অবস্থা অনেকটা স্থিতিশীল তার। 

জানা গেছে, গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়া এবং তার বাসার ৮ জন স্টাফের করোনা শনাক্ত হয়।  ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মতো খালেদা জিয়ার করোনা পরীক্ষা করলে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপর তার শারীরিক কিছু জটিলতা দেখা দিলে ২৭ এপ্রিল তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

হাসপাতালে থাকা অবস্থায় গত ৩ মে খালেদা জিয়া শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।  সেখানে তাকে অক্সিজেন সাপোর্ট এবং ইনসুলিন দেওয়া হয়। এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে ১০ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ডের অধীনে সিসিইউতে চিকিৎসা দেওয়া হয়। 

সিসিইউতে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ৫ মে রাতে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ধানমন্ডির বাসায়, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানোর জন্য আবেদনপত্র নিয়ে যান। পরদিন আইনগত বিষয়ে জানার জন্য সেটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় থেকে আবেদনপত্র আইনমন্ত্রীর বনানীর বাসভবনে নিয়ে যান আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার।

খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার ব্যাপারে ৭ মে সন্ধ্যায় সরকারের অনুমতি পাওয়ার প্রত্যাশা করেছিলেন তার পরিবারের সদস্যরা। এই ব্যাপারে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের সদস্য অধ্যাপক ডা. এফ. এম. সিদ্দিকী বলেছিলেন, ‘অনুমতি পেলে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এবং প্রস্তুতি নেবে মেডিক্যাল বোর্ড। অনুমতি পাওয়ার পরই খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে তাকে বিদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।’

এদিকে, খালেদা জিয়ার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে নবায়ন করা পাসপোর্ট পরদিন (৮ মে) পাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছিলেন তার বোন সেলিমা ইসলাম।  তিনি বলেন, ‘সরকারি অনুমতি পওয়ার পর খালেদা জিয়াকে প্রথমে ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হবে। এরপর সিঙ্গাপুর থেকে যুক্তরাজ্য বা সৌদি আরব, যেকোনো দেশে নেওয়া হতে পারে। ’

চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতির বিষয়ে তার পরিবারের করা আবেদনপত্রটি ৯ মে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।  ১০ মে খালেদার বিদেশে চিকিৎসা বিষয়ে পরিবারের আবেদন নামঞ্জুর করে সরকার।  এই ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আইনের বাইরে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার কোনো সুযোগ নেই।  এজন্য বিএনপি চেয়ারপারসনের আবেদন মঞ্জুর করতে পারছি না।

অন্যদিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় খালেদা জিয়ার সাজা ও দণ্ডাদেশ স্থগিত করে যেভাবে তাকে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, তাতে এখন আর তাকে বিদেশে যেতে দেওয়ার সুযোগ নেই।

খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন নামঞ্জুর বিষয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের এমন সিদ্ধান্তে আমরা নিঃসন্দেহ হতাশ ও ক্ষুব্ধ।  তাকে উন্নত চিকিৎসার অনুমতি না দেওয়ায় দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে হতাশা ও উদ্বেগ।

মেসবাহ/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়