ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সরকার বিভিন্ন সোর্স থেকে টিকা সংগ্রহ করছে: কাদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:২৫, ৮ জুন ২০২১   আপডেট: ১৮:২৮, ৮ জুন ২০২১
সরকার বিভিন্ন সোর্স থেকে টিকা সংগ্রহ করছে: কাদের

ভারতের অভ‌্যন্তরীণ করোনা পরিস্থিতির কারণে টিকা না পেয়ে সরকার বিভিন্ন মাধ‌্যম স‌োর্স থেকে তা সংগ্রহ করছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, চেষ্টার কম‌িত নেই, সঠিক সময়ে টিকা আসবে।

মঙ্গলবার (৮ জুন) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ‌্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে করোনার সুরক্ষার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউ মোকাবিলার পরে এখন দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় আমরা ভালো অবস্থানে রয়েছি।  ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের সীমান্ত এলাকাগুলোতে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে।  প্রাণহানি বাড়ছে। 

‘এই অবস্থায় পরিস্থিতি স্টাবল এই কথা বলা যায় না। সংক্রমণ কিছুটা উর্ধমুখী। মুত্যু ৩০, ৩৫ বা ৪০’র কোটায় আছে।  তাও বলা যায় না। করোনাভাইরাস আমাদের নিয়ন্ত্রণেই চলে এসেছিলো। কিন্তু হঠাৎ করে বৃদ্ধি পায়।  আসলে করোনা আনপ্রেডিক্টেবল।  কখন যে কোন দিকে মোড় নিবে বলা মুশকিল। কাজেই আমাদের সবসময়ই সতর্ক থাকতে হবে।’

বিভিন্ন সোর্স থেকে টিকা সংগ্রহে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন ভারত তাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে করোনা টিকা দিতে পারছে না। তারপরও অন্যান্য সোর্স থেকে সংগ্রহ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর চেষ্টার কোন কমতি নেই। 

‘ইনশাআল্লাহ অন্যান্য দেশ থেকে সময়মতো টিকা সংগ্রহ করতে পারবো। সেই ব্যাপারে সরকার সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। টিকার সংকট নিয়ে বিরোধীদল যেটা বলে আসছে সেটা এখানে সৃষ্টি হবে না।’ 

রাজশাহীতে করোনা পরিস্থিতি খারাপ রূপ নিয়েছে উল্লেখ করে কাদের বলেন, সেখানে হাসপাতালে অক্সিজেনের এবং বেডের কিছুটা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সরকার সেটা সরবারাহ করছে। এখনও ভারতে যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিলো, সেই অবস্থার কারণ আমাদের সৃষ্টি হয় নাই। 

প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন রয়েছেন জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সময়ও তিনি যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। করোনা আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে এটা তার মাথায় আছে। এজন্য তিনি সব বিষয়ে যথাযথ নজর রাখছেন এবং ব্যবস্থা নিচ্ছেন। যেসব জায়গায় সংক্রমণ বেশি, সেখানে আঞ্চলিক লকডাউন দিচ্ছেন। 

তিনি বলেন, করোনা বিষয়ে সরকারের সচেতনতা এবং সতর্কতা নিয়ে যারা প্রশ্ন করেন, তারা বিরোধিতার খাতিরেই বিরোধিতা করেন। এজন‌্য বাজেটও বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই প্রণোদনা প্যাকেজগুলো দেওয়া হলো। এই টাকা কোথায় থেকে আসছে? এটা কি বিরোধীদল দিচ্ছে? এটাতো সরকারি কোষাগার থেকে জনগণকে দিচ্ছে সরকারই।

জীবন ও জীবিকার সমন্বয় করে সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে জানিয়ে কাদের বলেন, আমরা প্রথম ঢেউ অতিক্রম করেছি, দ্বিতীয় ঢেউও অতিক্রম করতে চলেছি। এতে একজন মানুষও অনাহারে মারা গেছেন বলে আমাদের জানা নাই।  সরকার অন্যান্য দেশের তুলনায় সফলভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছেন। এটা বিএনপি আর কতটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে। 

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা দেখেও দেখে না, শুনেও শুনে না।  তারা কানে লাগিয়েছে তুলো। কিছুই শুনতে পায় না। তাদের চোখে ঠুলি। চোখেও দেখতে পায় না। ভালো কিছু তাদের চোখে পড়ে না। শুধু সমালোচনার জন্য দিনরাত বিষোদগার করছে।

এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ফিলিস্তিনে ওষুধ পাঠিয়েছে বলে আমরা শুনেছি। তাদের তো কতগুলো ওষুধ কোম্পানি রয়েছে।  তারা অভাবে আছে তাতো না।  খুবই বড় বড় ওষুধ কোম্পানি আছে। তারা তো এই সময়ে করোনা চিকিৎসা সামগ্রী সরবারাহ করতে পারেন।

বিএনপি সবকিছুতে সরকারের দোষ খোঁজে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি মাঝে মাঝে ভাবি বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। তারা আবার নাকি বলে, যে আওয়ামী লীগই দায়ী। কখন আবার বজ্রপাতে মৃত‌্যুর জন্য শেখ হাসিনার সরকারকে দায়ী করে।  সেটাই আমি ভাবছি।  এটাও তারা করবে।  ঘূর্ণিঝড় আসার সময় বলেছিলো, সরকারের জন্য ঘূর্ণিঝড় হয়েছিলো। বস্তিতে আগুন লেগেছে, সেটার জন্যও আওয়ামী লীগকে দায়ী করে।  আমরা আগুন লাগিয়ে মানুষের দুর্ভোগের সৃষ্টি কেন করবো? আগুন সন্ত্রাস তো তাদের ব্যাপার। 

বিএনপি আন্দোলনের হুমকি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মহাসচিব এখন আবার নতুন করে আন্দোলনের হাঁকডাক শুরু করেছেন। এখন আন্দোলনটা কোন বছর হবে? দেখতে দেখতে ১২ বছর। আন্দোলন হবে কোন বছর? একবার বলে এসএসসি পরীক্ষা, আবার বলে এইচএসসি পরীক্ষার পরে। আবার বলে রোজার ঈদের পরে কিংবা কোরবানির ঈদের পরে। কত ঈদ ও পরীক্ষা চলে গেলো কিন্তু বিএনপির আন্দোলন তো চোখে পড়েনি। 

বিএনপি নির্বাচন বয়কট করে ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, তারা আবারও আগুন সন্ত্রাসের পথে হাঁটছে। আন্দোলনের নামে সহিংস কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হলে আওয়ামী লীগ রাজপথে সমুচিত জবাব দেবে।

আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক রোকেয়া সুলতানা, কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম প্রমুখ।

পারভেজ/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়