ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জিয়ার লাশ নিয়ে সংসদে বিতর্ক, শেখ সেলিম বললেন বাক্স সরিয়ে ফেলুন

সংসদ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪৫, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৮:৪৫, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
জিয়ার লাশ নিয়ে সংসদে বিতর্ক, শেখ সেলিম বললেন বাক্স সরিয়ে ফেলুন

আওয়ামী লীগের সিনিয়র সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, সেখানে কোনো লাশ নেই, তা ৪০ বছর আগেই প্রমাণিত। একটি বাক্স রয়েছে। তিনি সেটা সরিয়ে ফেলার দাবি তোলেন। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, লাশ থাকলে তার স্ত্রী সন্তানকে দেখানো হয়নি কেন? 

তিনি বলেন, তখন ক্ষমতায় থেকেও বিএনপি লাশ থাকার প্রমাণ দিতে পারেনি। যদি লাশ থেকে থাকে আগামী এক মাসের মধ্যে প্রমাণ দিতে হবে। ভবিষ্যতে সংসদে লাশ নিয়ে কোনো কথা না হয় সেই বিষয়ে তিনি ব্যবস্থা নিতে স্পিকারের কাছে দাবি করেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে পরে পয়েন্ট অব অর্ডারে এ কথা বলেন তিনি।

এছাড়াও এর আগে চন্দ্রিমা উদ্যান থেকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের লাশ থাকা-না থাকা নিয়ে সংসদে তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির এমপিরা।

‘বাংলাদেশ জাতীয় আর্কাইভস বিল, ২০২১’ বাছাই কমিটিতে পাঠানো ও সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হয়। বিএনপির সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন প্রথম ইস্যুটি তোলেন। বিষয়টি নিয়ে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির এমপিরা বক্তব্য পাল্টা বক্তব্য দেন। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ জিয়ার লাশ থাকার বিষয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক সমাধানের প্রস্তাব দেন।

বিলটি বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবে আলোচনাকালে বিএনপির সদস্য মোশারফ হোসেন বলেন, জিয়াউর রহমানের লাশ সেখানে (চন্দ্রিমা উদ্যান) আছে কি নাই, সেটা বড় বিষয় নয়। সেখানে যে লাশ নাই, তা আপনারা (আওয়ামী লীগ) কিভাবে জানলেন? এত বছর ধরে ক্ষমতায় আছে। এটা নিয়ে আগে কথা বলেন নাই কেন? এখন কেন বলছেন?

জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ইতিহাস বিকৃতি বিএনপিও করে।  তারা বলে স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান। এই বিষয়ে আমাদের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা রয়েছে।  আর তিনি (জিয়াউর রহমান) বেঁচে থাকতে কখনোই বলতে শুনিনি, দেখিনি উনি নিজেকে স্বাধীনতার ঘোষক বলেছেন। তাদের প্রথমে ইতিহাস বিকৃতি বন্ধ করতে হবে।  তারপর আওয়ামী লীগ যদি ইতিহাস বিকৃতি করে থাকে, সেটা বন্ধের আহ্বান বিএনপি জানাতে পারে।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, সংসদ ভবন নিয়ে লুই কানের যে নকশা সেখানে কোথায় রয়েছে যে চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের লাশ দাফন করতে হবে।  সেখানে লাশ আছে কিনা সেটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।  বেগম জিয়া স্বামী মনে করে কাকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান।  তারই উচিত এই প্রশ্ন করা ওনার স্বামীর লাশ সেখানে আছে কিনা? বিজ্ঞনিভিত্তিক তথ্যের ভিত্তিতে তারই নির্ণয় করা উচিত। আপনারা দলের নেতা ভেবে কাকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।  ওখানে কি কারো মৃতদেহ আছে? নাকি অন্য কারো মৃতদেহ আছে।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, একজন সংসদ সদস্য  বলেছেন, সঠিক ইতিহাস আসতে নাকি শত বছর লাগে।  মৃত্যুর ৪০ বছর পরে সঠিক ইতিহাস বের হলে সমস্যা কোথায়? জিয়াউর রহমানের লাশ আছে কি নাই। এটা বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণের ব্যবস্থা আছে। আপনারা (বিএনপি) নিরপেক্ষ একটা কমিটি করেন। সরকার সহযোগিতা করবে।  সত্য উৎঘাটনে ভয়ের কি আছে?

তিনি বলেন, আপনাদের দলের নেত্রীকে বলেন- যদিও তিনি সাজাপ্রাপ্ত।  প্রধানমন্ত্রীর অনুকম্পা নিয়ে সাজা স্থগিত নিয়ে বসবাস করছেন। আইনের সুযোগ থাকলে তার নেতৃত্বে কমিটি করেন।

বিএনপির দলীয় সংসদ হারুনুর রশীদ বলেন, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ তার বক্তব্যে চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের লাশ থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।  ১৯৭৯ সালে সংসদ ছিলো। সেখানে আওয়ামী লীগও ছিলো। মানিক মিয়া এভিনিউতে যে জানাজা হয়েছিলো, তাতে সাংসদরা উপস্থিত ছিলেন।  শোক প্রস্তাবের ওপর সংসদে দীর্ঘ আলোচনায় তারা অংশ নিয়েছিলেন। সেগুলো প্রসেডিংসের মধ্যে রয়েছে। আমার কথায় যদি কোনো অপ্রাসঙ্গিক থাকে তা এক্সপাঞ্জ করুন।

তিনি বলেন, কারো যদি অপমৃত্যু হয়। তাহলে তার ময়নাতদন্ত লাগে। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পরে লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে।  সামরিক আদালতে বিচারও হয়েছে। এটা অসত্য কিছু নয়। আজকে জেনারেল এরশাদ বেঁচে থাকলে তিনি লজ্জা পেতেন। লজ্জা পেয়ে মুখ ডাকতো।

 আসাদ/এসবি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়