হঠাৎ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দেওয়ার নেপথ্যে
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পুরোনো কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করে এত দ্রুত সময়ে নতুন কমিটি গঠন করার বিষয়টি সপ্তাহখানেক আগেও কেউ টের পায়নি।
গত ১২ এপ্রিল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ছাত্রদল নেতাদের মতবিনিময়ের পরই আসলে এ নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। সরাসরি ভোটে নির্বাচিত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি হঠাৎ করে ভেঙে দেওয়া নিয়ে এখনও নানা ধরনের আলোচনা চলছে সংগঠনটির ভেতর-বাইরে।
পড়ুন: ছাত্রদলের নতুন সভাপতি শ্রাবণ, সম্পাদক জুয়েল
২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর গোপন ভোটে ফজলুর রহমান খোকন সভাপতি ও ইকবাল হোসেন শ্যামল ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর ৬০ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন তারা। এর পর আড়াই বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে ব্যর্থ হন সাবেক কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
এ ছাড়াও হঠাৎ করে কমিটি ভেঙে পাঁচ সদস্যের নতুন কমিটি করার নেপথ্যে আরো কিছু কারণ আছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারক। তারা জানান, ভোটে নির্বাচিত হলেও সাবেক কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সাংগঠনিক ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন।
সাংগঠনিক ব্যর্থতা ছাড়াও সারা দেশের জেলা শাখাসহ ইউনিট কমিটি গঠনে তাদের বিরুদ্ধে অনিয়মের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়েছেন দলের হাইকমান্ড। সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ ছিল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শ্যামলের বিরুদ্ধে। কথিত তৃতীয় শক্তির সঙ্গে উত্তরায় কয়েকটি বৈঠকে অংশ নেওয়ার সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে।
পড়ুন: আ.লীগ বাবার পরিবারচ্যুত সন্তান হলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে শ্যামলের একটি বক্তব্যের অডিও সম্প্রতি নেতাদের হাতে এসেছে। তদন্ত করে তার সত্যতাও মিলেছে। এটা জানার পরই তারেক রহমান ছাত্রদলের কমিটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশনা নেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, আগের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকনের বিরুদ্ধে কমিটি গঠনে কিছু অনিয়মের অভিযোগ ছাড়া বড় কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে, তাতে ভবিষ্যতে বিএনপিতে তার জায়গা হবে কি-না সন্দেহ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সাবেক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল বলেন, উত্তরায় বৈঠক, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বক্তব্যের অভিযোগ কোনটাই সত্য নয়। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি হবে— এটাই স্বাভাবিক। আর যে কোনো কমিটি হওয়ার আগে নানা ধরনের অভিযোগ ওঠে, এটাই আমাদের কালচার। যদিও এর সঙ্গে বাস্তবের মিল থাকে না।
পড়ুন: ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক অপহরণ মামলার আসামি
প্রসঙ্গত, রোববার কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণকে সভাপতি এবং সাইফ মাহমুদ জুয়েলকে সাধারণ সম্পাদক করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ‘সুপার ফাইভ’ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়।
ঢাকা/এনএইচ
আরো পড়ুন