ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

জাপা নেতাকর্মীদের সঙ্গে দোকান কর্মচারীদের সংঘর্ষ, আহত ৪

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:৫০, ৩ জুলাই ২০২২   আপডেট: ০০:৩৯, ৪ জুলাই ২০২২
জাপা নেতাকর্মীদের সঙ্গে দোকান কর্মচারীদের সংঘর্ষ, আহত ৪

মোটরবাইক রাখাকে কেন্দ্র করে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সঙ্গে এক রেস্তোরার কর্মচারীদের সংঘর্ষে ৪ জন আহত হয়েছেন।

রোববার (জুলাই ৩) সন্ধ্যা সাতটার দিকে রাজধানী কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে গুরুতর আহত একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার নাম আনোয়ার হোসেন (৪০)। তিনি লালবাগ থানা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি। অপর আহতরা হলেন যুব সংহতি দক্ষিণের সভাপতি দ্বীন ইসলাম শেখ, জাপা কর্মী তুহিন ও আকবর।

এ ঘটনায় হোটেল মালিকের ভাইসহ অজ্ঞাত আরও ৮জনকে আসামি করে করে রাত সাড়ে দশটার দিকে যুব সংহতি নেতা দ্বীন ইসলাম বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি বলেও জানান জাতীয় পার্টির সহকারি দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম।

রাত সাড়ে দশটার দিকে তিনি বলেন, হোটেল মালিকের ভাইসহ কর্মচারীরা বিনা কারণে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে চারজনকে আহত করেছে। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রমনা থানায় মামলা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সাতটার দিকে জাতীয় পার্টির কাকরাইল অফিসে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কার্যালয়ে কর্মীসভা চলছিল। দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপিসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন। কর্মীসভায় যোগ দিতে জাপার এক নেতা কাকরাইলের দলীয় কার্যালয়ের পাশে মজার হাড়ি রেস্তোরার সামনে মটর বাইক পার্কিং করলে হোটেলের দাড়োয়ান বাধা দেয়। এ নিয়ে বাক বিতন্ডার এক পর্যায়ে যুব সংহতি নেতা দ্বীন ইসলামসহ আরও কয়েকজন নেতাকর্মী গাড়ি সরিয়ে বিষয়টি সেখানেই মিমাংসা করার চেষ্টা করেন।

এসময় দোকানের মালিকের ভাই মানুসহ দোকান কর্মচারীরা এসে জাপা নেতাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। এতে উপস্থিত নেতাকর্মীরা মারমুখি হয়ে উঠেন। বিষয়টি নিয়ে দোকান কর্মচারীদের সঙ্গে জাপা নেতাকর্মীদের হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে মারামারি লেগে যায়। দোকানের কর্মচারীরা হোটেল থেকে লাকড়ি, গাছের টুকরো এনে জাপা নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে। জাপা নেতাকর্মীরাও চেয়ার ছুড়ে মারে। প্রায় আধঘন্টা সংঘর্ষ চলাকালে দোকান কর্মচারীদের হামলায় আহত হন জাপার লালবাগ থানার সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেনসহ চারনেতা। এসময় দোকান কর্মচারীরা দলের মহাসচিবের গাড়ি ভাঙ্গচুর করে।

পরে স্থানীয় রমনা থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় পুলিশের সামনে ঘটনার বিচার চেয়ে জাপা নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। দলের মহাসচিবের উপস্থিতিতে এমন হামলার ঘটনা মেনে নেওয়া হবে না বলে পুলিশকে জানালে রমনা থানার এস আই রুমেন জাপা মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে কটুক্তি করেন। এতে উপস্থিত নেতাকর্মীরা আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতর থেকে সভাস্থল ছেড়ে ছুটে আসেন দলের কো চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপিসহ সিনিয়র নেতারা। পরে এমপি বাবলা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফোন করে দোকান কর্মচারীদের হামলা ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে এসআই রুমেনের কটুক্তির বিষয়ে জানিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানালে রমনা জোনের এডিসি, ওসিসহ পুলিশ কর্মকর্তারা জাপার কাকরাইল কার্যালয়ে আসেন।

পুলিশ কর্মকর্তারা সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপিসহ দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠক করেন। ঘটনার বিস্তারিত শুনে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত হোটেল কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং মহাসচিবের বিরুদ্ধে কটুক্তিকারী এসআই রুমেনের বিরুদ্ধে তদন্তপুর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন রমনা জোনের এডিসি। পুলিশের আশ্বাসে এমপি বাবলার হস্তক্ষেপে দলের নেতাকর্মীরা রাত সাড়ে দশটার দিকে দলীয় কার্যালয় ছেড়ে যান।

দলের কো চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি জানান, কর্মসুচী চলাকালে বিনা উস্কানিতে হোটেল কর্মচারীরা আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে। আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছি তিনি সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। যত বড় সন্ত্রাসীই হোক না কেন, অপকর্ম করে কেউ রেহাই পাবে না।

নঈমুদ্দীন/নাসিম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়