ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

ফেসবুকের মাধ্যমে অসহায়ের পাশে প্রবর্তন

তানভীর সিদ্দিক টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ১৮ জুন ২০২০   আপডেট: ০২:৪২, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
ফেসবুকের মাধ্যমে অসহায়ের পাশে প্রবর্তন

অনেকে ভাবতে পারেন, ফেসবুক বুঝি এই প্রজন্মের ভার্চুয়াল আড্ডার জায়গা। এখানে সময়ের অপচয় ছাড়া কিছুই হয় না! তাদের এই ধারণা বদলে যাবে যদি তারা ‘স্বেচ্ছাসেবী গ্রুপ, ঝিনাইদহ’র ফেসবুক পেইজে যান। এই পেইজ থেকেই কয়েকজন তরুণ অসহায়, দুস্থদের জন্য এই করোনাকালে সহায়তা কার্যক্রম চালাচ্ছেন। 

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। সচেতনতার জন্য এ সময়  সবাইকে ঘরে থাকতে হচ্ছে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ও বন্ধ। ফলে তরুণদের একটা বড় অংশ স্বেচ্ছা গৃহবন্দী। এবং তারাই মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশি সোচ্চার। বিষয়টিকে কাজে লাগাতে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ফেসবুকে একটি গ্রুপ খোলেন নাহিদুজ্জামান সম্রাট। 

সম্রাট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইটি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।  লকডাউনে ঝিনাইদহ নিজ বাড়িতে ফিরে ভাবছিলেন এই দুর্যোগকালে কীভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়। এ সময় তার ভাবনার সঙ্গী হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রিপা কুণ্ডু এবং প্রাইম ইউনিভার্সিটির সিএসই বিভাগের সাজ্জাদকে। ফেসবুকের মাধ্যমেই আরও কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়। এর আগে সম্রাট তার ইচ্ছের কথা জানিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে চান তারা- জানতে পেরে দলের সঙ্গে একে একে যুক্ত হন তিথী, অলিভ, আশিক, সায়েম, সবুজ, লিজা, মাজেদুল, সানি, শিহাব এবং প্রান্ত। এদের নিয়েই স্বেচ্ছাসেবী দল গড়ে ওঠে। কাজের এক পর্যায়ে এসএসসি ব্যাচ-২০১৮ নামে আরেকটি গ্রুপ যুক্ত হয় তাদের সঙ্গে।

এবার তারা ফেসবুকে একটা গ্রুপ খোলেন ‘স্বেচ্ছাসেবী গ্রুপ, ঝিনাইদহ’ নামে। দলের নাম রাখেন ‘প্রবর্তন’। ফেসবুক গ্রুপে একটি মোবাইল নাম্বার উল্লেখ করে বলা হয়: এই নাম্বারে ফোন করলেই মিলবে খাবার কিংবা প্রয়োজনীয় সহায়তা। অনেকেই ফোন করে তাদের দুরবস্থার কথা জানাতে থাকেন। সে অনুযায়ী স্বেচ্ছাসেবীরা নিজেদের মোটরসাইকেল নিয়ে খাবার বা প্রয়োজনীয় দ্রব্য নিয়ে ছুটে যেতে লাগলেন অসহায় মানুষের দ্বারে দ্বারে। এভাবেই ঝিনাইদহ পৌরসভার প্রায় ৩০টি ওয়ার্ডে তারা তাদের সেবা কার্যক্রম চালু রেখেছেন।  

নাহিদুজ্জামান সম্রাট বলেন, ‘আমাদের পেছনে কোনো দাতব্য প্রতিষ্ঠান নেই। আমরা শিক্ষার্থীরা দায়িত্ববোধের জায়গা থেকেই কাজটি করছি। আমি যেমন অনলাইনে টিউশনি করে অর্থ উপার্জন করে এখানে দিচ্ছি, তেমনি অনেকে যে যার সামর্থ অনুযায়ী সাহায্য করছে।’

দিনমজুর এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষরাই মূলত প্রবর্তনের সেবা পাচ্ছেন। প্রথম ধাপে তারা ৬০টি পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে। দ্বিতীয় ধাপে ১০০টি। এভাবে অর্থ যত সংগ্রহ হয়েছে সাহায্যের পরিমাণও বেড়েছে। চতুর্থ ধাপে ২৫০টি পরিবারকে সাহায্য করার পর এখন পঞ্চম ধাপের কাজের জন্য অর্থ সংগ্রহ করছে প্রবর্তন। তারা মনে করে, স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে জাতির এই দুর্দিনে তারা যেমন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, অন্যদেরও তেমনি এগিয়ে আসা উচিত।

 

ঢাকা/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়