ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন করে স্বাবলম্বী প্রফুল্ল

আবু নাঈম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২০, ২৭ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন করে স্বাবলম্বী প্রফুল্ল

পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার প্রফুল্ল রায়ের জীবন চিত্র বদলে দিয়েছে ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) খামার।

ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন তিনি। এই কম্পোস্ট বিক্রি করে তিনি মাসে আয় করেন ১০ হাজার টাকা।

জানা গেছে, প্রকৃতির লাঙ্গল হিসেবে পরিচিত কেঁচো এবং গোবরই ভার্মি কম্পোস্টের প্রধান উপকরণ। সিমেন্টের তৈরি রিং, স্লাবে পরিমাণ মত গোবরের সঙ্গে কেঁচো ছেড়ে চটের বস্তা দিয়ে এক মাস ঢেকে রাখলেই তৈরি হয় উন্নত মানের ভার্মি কম্পোস্ট তথা কেঁচো সার।

সরেজমিনে উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের লতিঝারী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কমন ইন্টারেস্টেড গ্রুপ (সিআইজি) সমবায় সমিতির উদ্যোগে এবং ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম (এনটিপি) প্রকল্পের সহযোগিতায় প্রফুল্ল রায়ের মত আরো অনেকেই বাড়ির উঠানে একচালা টিনের ঘর করে রিং, স্লাব দিয়ে উৎপাদন করছে ভার্মি কম্পোস্ট। গ্রামটির নাম দেয়া হয়েছে ভার্মি কম্পোস্ট পল্লী। লতিঝারী সিআইজি পুরুষ সমাবায় সমিতি নামের একটি সংগঠনও রয়েছে তাদের।

সংগঠনে মোট ৩০ জন সদস্য থাকলেও উৎপাদন ও বিপণনে এগিয়ে আছেন প্রফুল্লই। এ বিষয়ে তিনি জানান, প্রতি মাসে এক হাজার কেজি ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) উৎপাদন করেন প্রফুল্ল রায়। প্রতি কেজি দশ টাকা দরে মোট ১০ হাজার টাকা বিক্রি হয় এই কম্পোস্ট। উৎপাদিত এই কম্পোস্ট যাচ্ছে জেলার বিভিন্ন এলাকায়। নিজেদের সবজি ক্ষেতে ব্যবহার করার জন্য গ্রামের কৃষকরাও প্রফুল্ল রায়ের খামার থেকে কিনছেন উন্নতমানের এই ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার)। উপকৃতও হচ্ছেন কৃষকরা। এতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমছে আর পরিবেশবান্ধব কেঁচো সার ব্যবহারের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

প্রফুল্ল রায় রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন এবং মাটির উত্তম স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নামের এক প্রযুক্তির আওতায় কেঁচো লালন-পালন, গোবর সংগ্রহ, রিং, স্লাবে দেয়া, কম্পোস্ট তৈরির পর সেগুলো সংগ্রহ করা, কম্পোস্ট প্যাকেজিং এবং বাজারজাতকরণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। পরে নিজের আবাদি জমিতে ব্যবহারের জন্য স্বল্প পরিসরে উৎপাদন শুরু করি। দিন দিন চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এখন বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন ও বাজারজাত করছি।’

প্রফুল্ল রায় আরও বলেন, ‘ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন করে আমি বেশ লাভবান হয়েছি। প্রতি কেজি সার ১০ টাকা দরে বিক্রি হয়। আমি প্রতি মাসে প্রায় ১০ হাজার টাকা বাড়িতে বসে আয় করতে পারি। এখন আগের থেকে আমার পরিবার সচ্ছল হয়েছে। এবং আমার দেখাদেখি এলাকার আরও অনেকে এই কাজ শুরু করেছেন। তারাও ভাল করছেন। আগে অনেকে বেকার ছিল, তারা এই সার উৎপাদন করে বর্তমানে ভাল আয়-রোজগার করছেন।’

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক রাইজিংবিডিকে জানান, বর্তমানে রাসায়নিক সারের অতিব্যবহারে জমির উর্বরতা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে। কিন্তু পরিবেশবান্ধব এই কম্পোস্ট মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমেছে। এই কম্পোস্ট ব্যবহারে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাবে। কৃষি অফিস এই ধরনের উদ্যোগে যাবতীয় উপকরণ, প্রশিক্ষণ ও কেঁচো দিয়ে পরিবেশবান্ধব কম্পোস্ট উৎপাদনে সার্বিক সহযোগিতা করে আসছে।




পঞ্চগড়/বুলাকী

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়