সেলাই মেশিনে চলে পারভীনের সংসার
কাঞ্চন কুমার || রাইজিংবিডি.কম
প্রবাসীর দেওয়া সেলাই মেশিন পেয়ে খুশি পারভীন
মেয়েটির নাম পারভীন। বছর দেড়েক হলো স্বামী মারা গেছেন। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে শ্বশুর ও স্বামীর বড় ভাই রুবেলের সংসারে থাকেন। দিনমজুর শ্বশুর ও রাজমিস্ত্রির সহকারী রুবেলের অভাবের সংসারেই তার ঠাঁই। সেই থেকে সেলাই মেশিন দিয়ে বাজার করার ব্যাগ বানিয়ে তা বিক্রি করে সংসারের সহযোগিতা করে আসছিলেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার পারভীন।
কিছু দিন আগে ভেড়ামারায় অগ্নিকাণ্ডে ছয়টি বাড়ি পুড়ে যায়। এসময় দুর্ভাগ্যক্রমে পারভীনের বাড়িসহ সেলাই মেশিনটিও পুড়ে যায়। এতে আরও অসহায় হয়ে পড়ে পারভীন।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘জীবন রহমান মোহন’ নামের এক প্রবাসীর নজরে আসে। সেই ব্যক্তি পারভীনসহ ওই পরিবারকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কিনে দিয়েছেন নতুন সেলাই মেশিন। এতে অসহায় পারভীন আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছেন।
পারভীন বলেন, ‘রুবেল ভাই একা এত বড় সংসার তার একার পক্ষে চালানো কঠিন হয়ে যেত, কষ্ট হতো। আমি ব্যাগ সেলাই করে বানিয়ে বিক্রি করে বাড়তি টাকা সংসারে যোগান দিতে পারায় সচ্ছলতা ছিল। ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস যখন হারিয়ে ফেলছিলাম, ঠিক তখনই আলোর বার্তা নিয়ে পোড়া বাড়িতে হাজির এক প্রবাসী যুবক।’
রুবেল বলেন, ‘পারভীন কাজের মধ্যে থাকায় মানসিকভাবে ভালো থাকে। ভাই আমাদের ছেড়ে চলে গেছে, এখন এরাই আমার কাছে আমানত। প্রবাসী জীবন রহমান ভাই যে উপকার করলো, তা ভুলবার নয়।’
এ বিষয়ে প্রবাসী জীবন রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘প্রতিটা দুর্ঘটনার পর থাকে পেছনের কিছু অসহায়ত্বের কথা। প্রকৃত অসহায়রা সমাজের চোখ এড়িয়ে যায়। আমি ওইগুলোকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখি।’
‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারি অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতির কথা। আমার এক বন্ধুকে সাহায্যের জন্য পরিবারের সবচেয়ে অসহায় ব্যক্তির খোঁজ করতে বলি। পারভীনরা ভালো থাকলে ভালো থাকবে দেশ। আমি নারী উদ্যোক্তা তৈরি করার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমার সীমিত আয়, এর মধ্যেই সব কিছু করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল মারুল বলেন, ‘সমাজের বিত্তবানরা যদি অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতো, তাহলে অনেক ভালো হতো। জীবন রহমান নামের ওই যুবক ইতোপূর্বেও অনেককে সহযোগিতা করেছেন। পারভীনের পুড়ে যাওয়া শেলাই মেশিন উপহার দিয়ে তিনি ওই পরিবারকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ করে দিয়েছেন।’
কুষ্টিয়া/মাহি
আরো পড়ুন