ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ধানের ন্যায্য মূল্যে খুশি কৃষকেরা

রুমন চক্রবর্তী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০৭, ১ মে ২০২১   আপডেট: ১৭:১৩, ১ মে ২০২১
ধানের ন্যায্য মূল্যে খুশি কৃষকেরা

কিশোরগঞ্জ হাওর। যেখানে কৃষকরা শুষ্ক মৌসুমে তপ্ত রৌদ্রে গায়ের চামড়া পুড়িয়ে চাষাবাদ করে থাকেন। জেলার উল্লেখযোগ্য ধানের মধ্যে সবচেয়ে সুনামের সঙ্গে সারাদেশে যে ধান বিক্রি হয়, সেটি হলো বোরো ধান। আর সেই ধান ফলিয়ে কৃষকরা বরাবরই থাকেন শঙ্কায়। কখনো অনাবৃষ্টি, কখনো পাহাড়ি ঢল আবার কখনো বা মহাজনের ঋণের চাপ।

এসবের মধ্যেও কৃষক ফসল ফলায় ও কাটে, মাড়াই করে ঘরে তোলে। কিন্তু প্রকৃতি যদি বিরূপ আচরণ না করে, তাহলে হয়তো তাদের চোখে খুশির আভাসটাই বেশি পাওয়া যায়। সেদিক থেকে যতই দিন গড়াচ্ছে, কৃষকের চাপ ততই কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে সরকার। যখন থেকে সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্যে ধান কেনা শুরু করেছে, তখন থেকেই কৃষকের মুখে খুশির পরশ দেখা যাচ্ছে। 

কিশোরগঞ্জে সরকারিভাবে অভ্যন্তরীণ বোরো ধান কেনা শুরু হয়েছে। এর মধ্যে চারটি উপজেলায় অ্যাপসের মাধ্যমে এবং বাকি উপজেলায় লটারির মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা হবে। নাম নিবন্ধন করা হবে আগামী ১০ মে পর্যন্ত।

জেলা খাদ্য বিভাগে সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১৩টি উপজেলায় ১০৮০ টাকা মণ দরে অর্থাৎ ২৭ টাকা কেজি দরে ২৩ হাজার ৩৪৬ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জে ১৩টি এলএসডি গুদামে ধারণ ক্ষমতা ২৬ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। বর্তমানে সেখানে খাদ্য মজুদ আছে ৫ হাজার ৬৩৭ মেট্রিক টন। গত বছরের তালিকা হালনাগাদ করে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সব উপজেলায় ধান কেনা শুরু হবে। 

সরকারিভাবে ধান বিক্রি করতে আসা কয়েকজন কৃষক রাইজিংবিডিকে বলেন, সঠিক সময়ে সঠিক দামে ধান বিক্রি করতে পেরে আমরা আনন্দিত। তবে অনেক সময় প্রকৃতি আমাদের সঙ্গ দেয় না। তাই হয়তো লাভের মুখ দেখা হয় না। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতেও ন্যায্য মূল্যে সরকারিভাবে ধান বিক্রি করে পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকতে পারবো।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ (ভারপ্রাপ্ত) মো. সাইদুর রহমান রাইজিংবিডিকে জানান- কিশোরগঞ্জ সদর, পাকুন্দিয়া, কটিয়াদী ও ভৈরবে অ্যাপসের মাধ্যমে নাম নিবন্ধন করে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা হবে। আগামী ১০ মে পর্যন্ত নাম নিবন্ধন করা হবে। এরপরই পুরোপুরি ধান কেনা শুরু হবে। তবে অন্য উপজেলাগুলোতে লটারির মাধ্যমে ধান কেনা হবে। তাই ওইসব উপজেলায় আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ধান কেনা শুরু করা যাবে।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও জেলা ধান-চাল ক্রয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, ‘আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনা শুরু করা যাবে বলে আমরা আশা করছি। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ধান কেনা হবে। যারা বাদ যাবে, তাদের কাছ থেকে পরের বছর ধান কেনা হবে।’

এর আগে বুধবার (২৮ এপ্রিল) সকালে কিশোরগঞ্জ সদর এলএসডি গোডাউন প্রাঙ্গণে দেশের অন্যান্য জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একযোগে ধান ক্রয়ের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাদির মিয়া, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাগুফতা ইয়াসমিনসহ খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। 

উল্লেখ্য, এবার জেলায় ১ লাখ ৬৫ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে, যা থেকে প্রায় পৌনে ১১ মেট্রিক টন ধান উৎপন্ন হবে। এরই মধ্যে জেলায় ৭০ ভাগ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। 

কিশোরগঞ্জ/মাহি 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়