ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

গাইবান্ধার কচুর মুখি যাচ্ছে সারাদেশে

সিদ্দিক আলম দয়াল, গাইবান্ধা  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২১, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৬:৩৯, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১
গাইবান্ধার কচুর মুখি যাচ্ছে সারাদেশে

কচুর মুখি চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন গাইবান্ধার চার উপজেলার কৃষকরা। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় এ জাতের কচু চাষ করে পরিবারের পুষ্টি চাহিদার পাশাপাশি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তারা। আর কচু প্রক্রিয়াজাত কাজে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে শত শত নারীর। 

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী এ জেলায় এবার ৫৩৫ হেক্টর জমিতে কচুর মুখি চাষ হয়েছে।  

কৃষি বিভাগের হিসাবে গাইবান্ধার সাঘাটা, গোবিন্দঞ্জ, পলাশবাড়ী ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া কচুর মুখি চাষের উপযোগী। ধানসহ অন্য ফসলের চেয়ে কচুর মুখি চাষাবাদে খরচ কম। তাই ৪ উপজেলার মহিমাগঞ্জ, পবনাপুর, জামালপুর, কিশোরগাড়ি, গাইবান্ধার বোয়ালীসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের প্রায় ২ হাজার কৃষক এবার কচুর মুখি চাষ করেছেন।

ফলনও হয়েছে আগের চেয়ে অনেক ভালো। গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলার আমলাগাছি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে সবুজ আর সবুজ কচু পাতা। কেউ কেউ দুহাত দিয়ে কচুর গোড়া ছিড়ে মাটির নিচ থেকে হাতড়িয়ে কচু উত্তোলন করছেন। আবার সেই কচু বাজারজাত করতে মাটি পরিষ্কার করছেন। তারপর পানিতে ধুয়ে বেপারীদের কাছে অথবা বাজারে বিক্রি করছেন। 

গ্রামের কচু চাষি জহুরুল ইসলাম জানান, তার ৪ বিঘা জমিতে এবার কচু চাষ করেছেন। খরচ হয়েছে বিঘা প্রতি ১২ হাজার টাকা। কিন্তু বিঘা প্রতি কচু উৎপাদন হবে অন্তত ১০০ মণ। তা বিক্রি হবে অন্তত ৪০ হাজার টাকা। অল্প সময়ে ভালো লাভের কারণে তিনি আগামীতেও অন্য ফসলের পাশাপাশি কচুর চাষ করতে ভুলবেন না। 

পলাশবাড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান মোকসেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ জানান, তার এলাকায় কয়েকটি ইউনিয়নে কচুর চাষ হয়ে থাকে। মৌসুম এলেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কচুর পাইকার বা ক্রেতা আসেন ট্রাক নিয়ে। আমলাগাছি গ্রামে ট্রাক নিয়ে অপেক্ষা করে জমি থেকে কচু কিনে নিয়ে যান ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে। পলাশবাড়ির আমলাগাছি গ্রামে কচুর মুখি প্রতি কেজি ১২ থেকে ১৪ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অথচ এই কচু বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয় অন্তত ২০ টাকা কেজিতে।  

সাদুল্লাপুরের রসুলপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা কচু চাষি আকবর হোসেন বলেন, এসব কচু তোলা, ধোয়া থেকে প্রক্রিয়াকরণ কাজে কর্মসংস্থান হয়েছে শত শত নারীর। তারা বাড়ির কাজ শেষ করে বারতি সময়ে দিনে ১ থেকে ২ মণ কচু পরিষ্কার করে ৮০ থেকে ১০০ টাকা আয় করছেন। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদ্প্তরের উপ-পরিচালক মো. মাসুদার রহমান বলেন, চার উপজেলার উৎপাদিত কচু জেলার চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। এ ধরনের কচু চাষে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় জেলায় কচু চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে অল্প খরচে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি জেলার সবজি চাহিদা পুরণ হচ্ছে।

/মাহি/ 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়