ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

শত তরুণের কর্মসংস্থান যখন ‘পিৎজা বার্গ’ 

রাফসান বিন রাজ্জাক, এআইইউবি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১০, ৬ ডিসেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৩:১৪, ৬ ডিসেম্বর ২০২১
শত তরুণের কর্মসংস্থান যখন ‘পিৎজা বার্গ’ 

ঢাকার অলিগলিতে জমে উঠেছে পছন্দের খাবারের নানারকম ব্র্যান্ড। ঢেলে সাজানা হচ্ছে খাবারের ডালি। এই সেক্টরে প্রতিযোগিতা চলছে তরিৎ গতিতে। এ যাত্রায় পিৎজা-বার্গারের নাম থাকবে সামনের সারিতেই। একটা সময় ভাবা হতো এসব ফাস্টফুড জাতীয় খাবার শুধু তরুণদেরই পছন্দ, আসলে চিত্রটা ভিন্ন। নানাবয়সী মানুষ ধীরে ধীরে আসক্ত হয়েছেন এসব খাবারে। প্রতিয়োগিতায় থেমে নেই মীর মেহেদী। হয়েছেন রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী। তিনিও গড়ে তুলেছেন ‘পিৎজা বার্গ’ নামে রেস্তোরাঁ। 

মীর মেহেদীর জন্ম ১৯৯১ সালে একটি অতি সাধারণ পরিবারে। ছোটবেলা থেকে তার উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন ছিল না। পরিবারেরও প্রত্যাশা ছিল তিনি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করবেন। উদ্যোক্তা হওয়ার চিন্তাটা তার মাথায় আসলো নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ পড়াকালীন। মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করার স্বপ্ন দেখতে থাকা মীর মেহেদীর হঠাৎ মনে হয়, চাকরি করলে তিনি নিজের পুরো সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারবেন না। এই চিন্তা থেকে তার উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নের জন্ম। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয় সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সুস্বাদু রেস্তোরাঁ ‘পিৎজা বার্গে’। গ্র্যাজুয়েশনের পরপরই তিনি হয়ে ওঠেন উদ্যোক্তা।

মীর মেহেদী চেয়েছিলেন নতুন কিছু করতে। তার রেস্টুরেন্টের এমন নাম রাখার কারণ হচ্ছে, যেন সবাই বুঝতে পারেন, পিৎজা বার্গে পিৎজা এবং বার্গার দুটোই পাওয়া যায়। এ ছাড়াও, পাওয়া যায় এপিটাইজিং ড্রিংক ও সেট মেন্যু। 

পিৎজা বার্গের আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু হয় ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে। বর্তমানে পিৎজা বার্গের ব্রাঞ্চ মোট ৯টি। মীর মেহেদীর পরিকল্পনা হলো কয়েক বছরের মধ্যে প্রতি জেলায় পিৎজা বার্গের ব্রাঞ্চ তৈরি করা। এরপর নেবেন আরও বড় পদক্ষেপ। দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক মহলেও তিনি এই নামে তৈরি করবেন বাংলাদেশের রেস্তোরাঁ। পিৎজা বার্গের জনপ্রিয়তার মূল কারণ এর ভিন্ন স্বাদ। 

রেস্তোরাঁর পিৎজাগুলোরও তিনি অভিনব নাম দিয়েছেন। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাহিদা হলো মিটি অনিয়ন, সসেজ কার্নিভাল, মিট মেশিন, ফোর ফ্লেভারের। অনেক রকম চিজ, টপিংয়ের ব্যবহারে পিৎজাগুলোর স্বাদে কোনো কমতি রাখা হয় না। 

মীর মেহেদীর বলেন, প্রথম দিকে জনপ্রিয়তা পাওয়া যেমন কঠিন, ধরে রাখা আরও কঠিন। তাই চেষ্টা করি আমাদের পিৎজার স্বাদ প্রতিনিয়ত উন্নত করার। সব ব্রাঞ্চে স্বাদ ঠিক রাখার জন্য আলাদা কন্ট্রোল টিম রেখেছি। আর পিৎজার ডো কিংবা টপিং তৈরি করা হয় সেন্ট্রাল কিচেনেই, বেকিং অংশটুকু করা হয় ব্রাঞ্চের কিচেনে। পিৎজার উপকরণের প্রায় ৮০ শতাংশই বাইরের দেশ থেকে আমদানি করা হয়।

পুরো টিমে, ম্যানেজমেন্ট, কাস্টমার সার্ভিস, একাউন্টস, মার্কেটিং টিম মিলিয়ে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী এখন আমার সঙ্গী, বলেন তিনি। 

পথচলার শুরুতে এই উদ্যোমী তরুণকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা এবং সমর্থন দিয়েছে তার পরিবার। বন্ধুদের মধ্যে হিয়া নামের একজন বন্ধু তাকে মার্কেটিংয়ে সাহায্য করেছেন। সূচনার ঝক্কি পেরিয়ে সময়ে সময়ে আরও অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে। কোভিড প্যান্ডেমিকে অন্যসব প্রতিষ্ঠানের মতো মীর মেহেদীকেও লড়াই করতে হয়েছে টিকে থাকার জন্য। অভিযোজনের এই লড়াইয়ে টিকে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোই দিনশেষে মুখ দেখে সফলতার, এভাবে তৈরি হয় একেকজন সফল উদ্যোক্তার গল্প।

/মাহি/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়