ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

টাঙ্গাইলে বাস স্ট্যান্ডে যাত্রীদের জন্য পাঠাগার

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৪, ২১ জুন ২০২২   আপডেট: ১১:০৫, ২২ জুন ২০২২
টাঙ্গাইলে বাস স্ট্যান্ডে যাত্রীদের জন্য পাঠাগার

শুক্রবার (১৭ জুন) বিকালে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে টাঙ্গাইল বাস স্ট্যান্ডে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া শিকদার। বাসের জন্য তিনি দীর্ঘ সময় কাউন্টারে অপেক্ষা করছিলেন। এ ধরনের বিড়ম্বনায় এর আগে তিনি মোবাইল ফোনে সময় কাটাতেন। কিন্তু সেদিন তিনি বই পড়ে সময়টুকু পাড় করেছেন। 

বাস স্ট্যান্ডে পাঠাগার- বিস্ময়ের ব্যাপার বটে! সুমাইয়ার মতো অনেক যাত্রী শহরের নতুন বাস স্ট্যান্ডে পাঠাগার দেখে বিস্মিত হয়েছেন। অপেক্ষমান যাত্রীদের বই পড়ার এমন সুবর্ণ সুযোগ করে দিয়েছে বাতিঘর আদর্শ পাঠাগার। তারা নিজ উদ্যোগে তৈরি করেছে এমন নজির। এ ধরনের পাঠাগারকে তারা বলছে অণু পাঠাগার। আর এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগে খুশি বাসযাত্রীরাও।

টাঙ্গাইল নতুন বাস স্ট্যান্ডের সকাল-সন্ধ্যা বাস কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, দেয়ালে ছোট বুক সেলফে বিভিন্ন ধরনের ২৫টি বই রাখা। অপেক্ষমান যাত্রীরা তাদের পছন্দমতো বই সেখান থেকে নিয়ে পড়ছেন। চলে যাওয়ার সময় সেলফে বইগুলো তারা রেখে যাচ্ছেন।

যাত্রী মাহফুজা আক্তার বলেন, অপেক্ষার এই সময় খুবই বিরক্তিকর। বই পড়ার সুযোগ পেয়ে খুবই ভালো লাগছে। এভাবে মানুষের মধ্যে পাঠাভ্যাস তৈরি হবে এবং সুন্দরভাবে সময় কাটবে। এটি একটি চমৎকার উদ্যোগ!

কথা হয় আরেক যাত্রী খন্দকার মিজানুর রহমানের সঙ্গে। চাকরির জন্য টাঙ্গাইল থেকে ঢাকায় প্রায়ই যাতায়াত করতে হয় তাকে। অনেক সময় বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এ সময় বই পড়ার ব্যবস্থা একটা চমৎকার উদ্যোগ বলে মনে করেন তিনি। 

সকাল-সন্ধ্যা বাস কাউন্টারের ম্যানেজার নিলিম বলেন, ‘বাস কাউন্টারে যাত্রীরা বই দেখে অনেক সময় অবাক হন! আমারও উপকৃত হচ্ছি, যাত্রীরা অযথা খোশগল্প না করে বই পড়ছেন। আমিও সুযোগ পেলে পড়ি।’

জানা যায়, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চৌরাকররা গ্রামে ২০১০ সালে মো. কামরুজ্জামান সোহাগ নিজ বাড়িতে গড়ে তোলেন বাতিঘর আদর্শ পাঠাগার। বর্তমানে পাঠাগারের সদস্য আর বইয়ের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। প্রতিদিন বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাঠাগারটি খোলা থাকে। 

কামরুজ্জামান পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই)। চাকরির পাশাপাশি এলাকার সমমনা তরুণদের নিয়ে বই পড়ার এ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বইপ্রেমী এই উদ্যোক্তা বলেন, ‘যাতায়াতের পথে বাসের জন্য অনেক সময় অপেক্ষা করতে হয়। এ সময় মানুষ গল্পগুজব করে সময় কাটায়। এ ভাবনা থেকেই বাস স্ট্যান্ডে বই রাখার পরিকল্পনা। কার্যক্রমটি আরো সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।’

ইতোমধ্যে জেলার বেশ কয়েকটি বাজারে সেলুন অণু-পাঠাগার চালু করেছেন বলেও জানান কামরুজ্জামান।  
 

কাওছার/তারা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়