ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

শরিফা চাষে সফল গাংনীর বাহাউদ্দীন

মহাসিন আলী, মেহেরপুর  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২০, ৫ আগস্ট ২০২২  
শরিফা চাষে সফল গাংনীর বাহাউদ্দীন

কৃষক বাহাউদ্দীনের গাছের শরিফা ((আতা) ফল

বিলুপ্ত প্রায় দেশিয় ফল শরিফা। যার আঞ্চলিক নাম মেওয়া। অনেকের কাছে এই ফলটিকে আতা ফল হিসেবেও পরিচিত। আর এই ফলের বাগান করে সফলতা পেয়েছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চেংগাড়া গ্রামের ব্যাংকার বাহাউদ্দীন। এই ফল বাজারে বিক্রি করেও আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন তিনি। তার এই সফলতা দেখে এখন এলাকার অনেক তরুণরা শরিফা (আতা) বাগান করার অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন।

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও চেংগাড়া গ্রামের বাসিন্দা দাউদ হোসেনের ছেলে বাহাউদ্দীন। তিনি দীর্ঘদিন যমুনা ব্যাংকে চাকরি করেছেন। তবে বাগান করে সফলতা পাওয়ার পর তিনি চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। 

বাহাউদদ্দীন জানান, কৃষিখাতে ব্যাতিক্রমী কিছু করার চিন্তা থেকেই বছর পাঁচেক আগে চার বিঘা জমিতে শরিফা ফলের বাগান করেন। স্থানীয়ভাবে বীজ সংগ্রহ করে তা রোপণ করেন তিনি। প্রথম বছরে বাগানের পেছনে তার খরচ হয় মাত্র ২০ হাজার টাকা। পরের বছর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি । সে বছর বাগানে উৎপাদিত শরিফা স্থানীয় ফল বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে পান ৮০ হাজার টাকা। স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে বেশি লাভবান হওয়ায় আরো চার বিঘা জমিতে ফলটির বাগান করেছেন তিনি। গত বছর তিনি ২০ হাজার টাকা খরচ করে পেয়েছেন তিন লাখ টাকা। 

গাছেন ডালে শোভা পাচ্ছে পুষ্টিগুণে ভরপুর শরিফা ফল

বাহাউদ্দীন বলেন, ‘অনুকূল আবহাওয়া আর নিজের অদম্য পরিশ্রম এবং কৃষি অফিসের পরামর্শে এবছর বাগানে প্রচুর ফল এসেছে। আর ১৫ দিন পর বাগান থেকে ফল সংগ্রহ শুরু হবে। এ বছর ছয় লাখ টাকার ফল বিক্রি হবে বলে আমি আশা করছি।’ 

স্থানীয় ফল ব্যবসায়ী কাজল লতা বলেন, ‘শরিফা ফল খেতে খুবই সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা ব্যাপক। বাগান থেকে ফল সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে ও অন লাইনের অর্ডারে ঢাকাতে পাঠানো হয়। অনলাইনেও বেচা-কেনা বেশ ভালো হয়। বাগান থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে কিনে  ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করি এই ফলটি। এতে লাভ হয় বেশি।’ 

শরিফা চাষে আগ্রহী কলেজ শিক্ষক রফিকুল আলম বলেন, ‘স্থানীয় ব্যাবসায়ীদের কাছে গল্প শুনে বাগান দেখতে গেছিলাম। শুনেছি স্বল্প খরচ আর অল্প পরিশ্রমে বেশি লাভবান হওয়া যায়। বাহাউদ্দীনের শরিফা চাষের সফলতার গল্প শুনেই বাগান করার ইচ্ছা হয়েছে। ইতোমধ্যে দুই বিঘা জমি প্রস্তুত ও বীজ সংগ্রহ করেছি আমি।’

শরিফা বাগানে কৃষক বাহাউদ্দীন

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার লাভলী খাতুন বলেন, ‘শরিফা একটি বিলুপ্ত প্রায় দেশি প্রজাতির ফল। সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এ ফল আবাদে খরচ অনেক কম ও রোগ বালাই একেবারই নেই। এই ফল বাজারে বিক্রি করে প্রচুর লাভ করা যায়। মেহেরপুর জেলায় শুধুমাত্র গাংনী উপজেলার চেংগাড়া গ্রামের বাহাউদ্দীন এটির বাগান করেছেন। তাকে দেখে অনেক তরুণ শরিফা বাগানের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে।’ 

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়