ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

থানার জমিতে ওসি’র বিষমুক্ত সবজির বাগান 

অদিত্য রাসেল, সিরাজগঞ্জ  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৩৯, ৪ নভেম্বর ২০২২   আপডেট: ১০:৪২, ৪ নভেম্বর ২০২২
থানার জমিতে ওসি’র বিষমুক্ত সবজির বাগান 

থানার জমির মাচায় ঝুলে রয়েছে লাউ

থানার পতিত জমিতে নিজের পকেটের টাকা খরচ করে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজির আবাদ করেছেন সিরাজগঞ্জের কাজিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল কুমার দত্ত। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিষমুক্ত সবজির বাগান করে প্রশংসিত হচ্ছেন তিনি। তার এই উদ্যেগের ফলে থানায় কাজ করা পুলিশ সদস্যদের খাবারের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ব্যবহার না থাকায় ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছিল কাজিপুর থানার দুই বিঘা জমি। ওসি শ্যামল কুমার দত্ত এই থানায় যোগদানের পর থেকে দৃশ্যপট পরিবর্তন হতে শুরু করে। নিজের পকেটের টাকা ও সহকর্মীদের সহায়তায় পতিত ওই জমিতে ১৭ ধরনের শাক-সবজি চাষ করেন। এই জমির সবজি থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্য ছাড়াও স্থানীয়দের খাবারের চাহিদা পূরণ করছে। একই সঙ্গে থানায় সেবা নিতে আসা মানুষজনও নিজেদের বাড়ির আঙ্গিনায় সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়মিত পরিচর্যায় এক সময়ে পতিত জমিটি সবুজে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ বাগানে কাঁচামরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, বেগুন, ফুলকপি, পাতাকপি, টমেটো, শিম, পেঁপে, চিচিঙ্গার মতো সবজির চাষ হচ্ছে। শাকের মধ্যে রয়েছে লালশাক, পুঁইশাক, ডাটাশাক চাষ হচ্ছে। এছাড়াও রয়েছে লাউ ও চিচিঙ্গার আবাদ।

থানায় অভিযোগ করতে আসা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘থানার জায়গা একসময় আর্বজনার ভাগাড় ছিলো। কিন্তু সেই জায়গায় সবজি বাগান করার কারণে থানার রূপ বদলে গেছে। আমাদের বাড়ির পাশে অনেক পতিত জমি রয়েছে। আমি সেই জায়গায় সবজি ও ফুলের বাগান করবো বলে চিন্তা করছি।’

সবজি বাগান পরিচর্যার দায়িত্বে থাকা কনস্টেবল রেজওয়ানুল হক বলেন, ‘থানায় ডিউটি শেষে অবসর সময়ে সবজি বাগান পরিচর্যার কাজ করি। এতে অনেক ভালো লাগে। বর্তমানে আমাদের শাক-সবজি কিনতে হয় না। বিষমুক্ত সবজি আমাদের খাদ্য ও ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করছে। ‘

ওসি শ্যামল কুমার দত্ত বলেন, ‘প্রায় এক বছর আগে থানা চত্বরের পতিত জমি প্রায় ৫ ফুটের মতো গর্ত ছিলো। এই জমিতে মানুষজন ময়লা আবর্জনা ফেলতেন। বর্ষা মৌসুমে এই জায়গায় অনেক পানি জমে থাকতো। সেখানে বিভিন্ন পোকা-মাকড় আশ্রয়াস্থল গড়ে তুলতো। মাঝে মধ্যে সেই সব পোকা থানার ভেতরেও চলে আসতো। ফলে থানার কার্যক্রম পরিচালনায় বেগ পেতে হতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেওয়ার পর তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে থানার জমিতে সবজির চাষ শুরু করি। ২ বিঘা পতিত জমিতে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি লাগিয়ে চাষা করছি। আর এ কাজে আমার সহকর্মীরা সহায়তা করছেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘ফরমালিন ও কীটনাশক মুক্ত এই সবজি থানার পুলিশ সদস্যদের খাদ্যের চাহিদা মেটাতে ভূমিকা রাখছে। এতে পুলিশ সদস্যদের কিছুটা হলেও অর্থের সাশ্রয় হচ্চে।’ 

কাজিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘থানা চত্বরে সবজি চাষ খুবই ভালো উদ্যোগ। কৃষি অফিস থেকে সবসময় পরামর্শ দিয়ে আসছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশের এমন উদ্যোগ মানুষকে বাড়ির ঘরের সামনের পতিত জমিতে চাষাবাদে উৎসাহ যোগাবে। আর এ কাজে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সবধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।’

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়