ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

পালস অক্সিমিটারে ভুল তথ্যের যত কারণ

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ২৫ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
পালস অক্সিমিটারে ভুল তথ্যের যত কারণ

পালস অক্সিমিটার হলো একটি প্রচলিত ছোট যন্ত্র যা রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা পরিমাপ করতে ব্যবহার করা হয়। চলমান কোভিড-১৯ মহামারিতে এর ব্যবহার বহুগুণে বেড়ে গেছে। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা দেখে ফুসফুসের অবস্থা মনিটর করা যায়। রোগীর অবস্থা বিপজ্জনক পর্যায়ে গেছে কিনা তা এ যন্ত্রের রিডিং (পরিমাপ) দেখে বলা যায়। রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে কিনা অথবা অক্সিজেন থেরাপির প্রয়োজন আছে কিনা অথবা আইসিইউতে নিতে হবে কিনা তা সম্পর্কে ধারণা পেতে পালস অক্সিমিটার ব্যবহার করা হয়। এ যন্ত্র দিয়ে হৃদস্পন্দনও পরিমাপ করা যায়।

ফুসফুসে সমস্যা থাকলে রিডিংয়ে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কম দেখাবে। পালস অক্সিমিটারে স্বাভাবিক রিডিং হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ শতাংশ। ৯০ শতাংশের কমকে নিম্ন মাত্রা বিবেচনা করা হয়, যা হাইপোক্সেমিয়া হিসেবে পরিচিত। ফুসফুস যত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, শরীরের পক্ষে অক্সিজেন গ্রহণ তত কঠিন হবে। পালস অক্সিমিটার ব্যবহার করেই ফুসফুস কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধারণা করা যায়। এ যন্ত্র ব্যবহারকালে কিছু বিষয়ে খেয়াল না রাখলে রিডিংয়ে ভুল আসতে পারে। এখানে পালস অক্সিমিটারের রিডিংকে প্রভাবিত করে এমন বিষয়গুলো উল্লেখ করা হলো।

অপর্যাপ্ত রক্তপ্রবাহ: শরীরের যেখানে পালস অক্সিমিটার ব্যবহার করবেন সেখানে পর্যাপ্ত রক্ত প্রবাহিত না হলে রিডিংয়ে ব্যাপক প্রভাব পড়বে। শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় হাত-পা ঠান্ডা থাকলে রিডিং নেয়ার প্রয়োজন নেই, কারণ তখন হাত-পায়ে রক্ত চলাচল কম থাকে বলে ভুল তথ্য আসবে। রক্তচাপ ৮০ এর উপরে না থাকলে স্বাভাবিক রিডিং আসবে না। ঠান্ডা, ভয়, আঁটসাঁট পোশাক ও কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে রক্তচাপ কমে যেতে পারে।

বেশি নড়াচড়া: পালস অক্সিমিটার ব্যবহারের সময় যারা বেশি নড়াচড়া করেন তাদের রিডিংয়েও ভুল আসতে পারে। শরীরকে কাঁপুনির মধ্যে রাখে এমন স্বাস্থ্য সমস্যাও রিডিংয়ে প্রভাব ফেলতে পারে। যানবাহনে রিডিং নিলেও ভুল আসতে পারে। রিডিং নেয়ার সময় আঙুল যেন না কাঁপে।

নেইল পলিশ: নখের নেইল পলিশ আলোকে ব্লক করতে পারে, যা রিডিংকে প্রভাবিত করবে। তাই পালস অক্সিমিটারে যে আঙুলে রাখবেন তাতে নেইল পলিশ লাগাবেন না অথবা ব্যবহার করে থাকলে তুলে ফেলুন। হাতে মেহেদি অথবা রঙও ব্যবহার করবেন না।

অতিরিক্ত আলো: অত্যধিক বা উজ্জ্বল আলোও পালস অক্সিমিটারের রিডিংকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই বেশি আলো ছড়াচ্ছে এমন উৎসকে ঢেকে দিয়ে অথবা দূরে সরে গিয়ে রিডিং নিতে হবে। যেকোনো ধরনের রেডিয়েটেড লাইট অথবা আল্ট্রাভায়োলেট রিডিংয়ের ওপর অবশ্যই প্রভাব ফেলবে।

স্বাস্থ্য সমস্যা: কিছু রোগেও পালস অক্সিমিটারের রিডিংয়ে ভুল আসতে পারে। আপনি রক্তস্বল্পতায় ভুগলে অথবা রেনড’স সিন্ড্রোম থাকলে ভুল তথ্য পেতে পারেন। রক্ত চলাচলে সমস্যা তৈরি করে এমন রোগেও রিডিং অস্বাভাবিক হতে পারে। ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ী রোগে অক্সিজেনের মাত্রা কম দেখাতে পারে, এটাকে ঠিক ভুল বলা যাবে না।

অন্যান্য: অক্সিজেনের মাত্রা ৭০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে পালস অক্সিমিটার সঠিক রিডিং দিতে সক্ষম নাও হতে পারে। প্রেসার কাফ পরে থাকলেও রিডিংয়ে ভুল আসতে পারে। সঠিকভাবে পালস অক্সিমিটার ব্যবহার করতে না জানলেও ভুল তথ্য আসবে।

পড়ুন: করোনা শনাক্তে পালস অক্সিমিটার: যা জানা জরুরি

 

ঢাকা/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়