ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

দেহের গঠন অনুসারে কোন খাবার খাবেন? (শেষ পর্ব)

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০৮, ৭ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দেহের গঠন অনুসারে কোন খাবার খাবেন? (শেষ পর্ব)

প্রতীকী ছবি

* বালি ঘড়ির মতো শরীর

আওয়ারগ্লাস বা বালি ঘড়ির টাইপের লোকেরা শরীরের শীর্ষভাগ ও নিম্নভাগে সমানভাবে ওজন বহন করে এবং তাদের কোমর বেশ সরু। নারীরা এ ধরনের বডি টাইপ প্রত্যাশা করে, কারণ এতে যৌন আবেদনময়ী দেখায়। কিন্তু একটি সমস্যা হলো: এ টাইপের শরীরে ১০ পাউন্ড ওজন বেড়ে গেলেও সহজে লক্ষ্য নাও করতে পারেন, কারণ এ ওজন শরীর জুড়ে সমানভাবে বণ্টিত হয়। সারকথা হচ্ছে, যেকোনো অতিরিক্ত ওজন হার্টের স্বাস্থ্যকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করতে পারে।

যা খাবেন: যেহেতু আওয়ার টাইপের দেহে অগোচরে ওজন বেড়ে যায়, তাই আপনাকে স্মার্ট স্ন্যাকসে ঝুঁকতে হবে। চিপস অথবা ক্রিম বিস্কুটের পরিবর্তে উচ্চ মানের জটিল উৎস থেকে কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করা উচিত, বলেন ডা. গ্লাসম্যান। শরীরের গোপন ওজন এড়ানোর জন্য সর্বোত্তম স্ন্যাক ফর্মুলা হচ্ছে শাকসবজি। আপনি প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খেলেও ক্যালরি খুব বেশি বেড়ে যাওয়ার ভয় নেই। শাকসবজি পেটকে ভরিয়ে তোলার পাশাপাশি আপনাকে তৃপ্তও করবে। আওয়ারগ্লাস টাইপের লোকদের জন্য কিছু উত্তম খাবার হলো গাজর, অ্যাভোকাডোর ভর্তা, সেলেরি, আমন্ড বাটার, শসা ও ছোলা।

যা খাবেন না: আপনার আবেদনময়ী ফিগারের অন্যতম কারণ হতে পারে উচ্চ লেভেলের নারী হরমোন, যেমন- ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন। এগুলোর স্বাস্থ্য উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও ইস্ট্রোজেন হচ্ছে একটি চর্বি-সঞ্চয়কারী হরমোন, যা ওজন বাড়াতে পারে- এটি ইস্ট্রোজেন আরো বৃদ্ধি করতে পারে। আপনার প্রাকৃতিক হরমোন ছন্দ বিঘ্নিত হলে (যেমন- মানসিক চাপের কারণে) ক্ষুধা ও মিষ্টি খাবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা বেড়ে যেতে পারে, বলেন ডা. গ্লাসম্যান। প্যাস্ট্রি, ক্যান্ডি, আইসক্রিম ও অন্যান্য উচ্চ চিনি ও উচ্চ চর্বির খাবার যখন তখন খাবেন না, বিশেষ দিন বা উৎসবে খেতে পারেন।

* রুলারের মতো শরীর

আপনার শরীরের গঠন পাতলা হলে এবং তেমন কোনো বাঁক বা বক্রতা না থাকলে আপনি সম্ভবত একটা রুলার! চর্বি সঞ্চয়ের প্রসঙ্গে রুলার টাইপের দেহ সবচেয়ে ভাগ্যবান: এ টাইপের লোকদের ওজন সহজে বাড়ে না, এমনকি চেষ্টা করলেও। কিন্তু তাই বলে আপনার ডায়েটে যা ইচ্ছে তা যোগ করতে যাবেন না, আপনাকেও স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণ করতে হবে, বলেন ডা. সিপুলো। বেশিরভাগ রুলার টাইপের লোক মনে করেন যে, তারা যেটা ইচ্ছে সেটা খেতে পারবেন ও জিমে না গেলেও সমস্যা নেই। এটা তাদের ভুল ধারণা। আপনাকে স্থূল না দেখালেও আপনার উচ্চ শতাংশে বডি ফ্যাট থাকতে পারে, যা বিভিন্ন রোগ ও স্বাস্থ্য সমস্যার প্রবণতা সৃষ্টি করে।

যা খাবেন: রুলার টাইপের লোকেরা পেট না ভরা পর্যন্ত খেতে পারবেন- অত্যধিক কিংবা অত্যল্প নয়, বলেন ডা. সিপুলো। তিনি আরো বলেন, ‘এ টাইপের লোকদের ডায়েটে কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট ও প্রোটিনের ভারসাম্য থাকা উচিত। তাদের ডায়েটে এমন অপ্রক্রিয়াজাত খাবারের অন্তর্ভুক্তি গুরুত্বপূর্ণ যেখানে ওই খাবারের সকল পুষ্টিগুণ অটুট রয়েছে।’ নিয়মিত ব্যায়ামেরও গুরুত্ব রয়েছে। খাবার ও শরীরচর্চায় সচেতন থেকে আপনার রুলার সদৃশ দেহকে সুরক্ষিত রাখতে পারেন ও বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকিকে নিচে নামাতে পারেন। অনেক রুলার টাইপের লোক সাইকেল চালনা ও দৌঁড়ের মতো স্পোর্টস পছন্দ করেন, তাই আপনিও এ ধরনের কার্যক্রমে যুক্ত থাকলে নিশ্চিত হোন যে যথেষ্ট পরিমাণে স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট খাচ্ছেন, বলেন ডা. সিপুলো।

যা খাবেন না: যেহেতু রুলার টাইপের শরীরে নিম্ন ওজনের প্রবণতা রয়েছে, তাই খাবার সীমিতকরণের ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন থাকতে হবে। ব্যক্তিভেদে রুলার টাইপের দেহের জন্য কোন খাবার সবচেয়ে ভালো তা খুঁজে বের করতে হবে, আন্দাজে কোনো একটি খাবার সীমিত করে কিংবা বেশি খেয়ে লাভ নেই। এ ধরনের শরীরে পেশি গঠন করতে চাইলে প্রোটিন পাউডার, শেক ও মাংস অত্যধিক পরিমাণে খাবেন না। ডা. সিপুলো বলেন, ‘আজকাল লোকেরা প্রচুর প্রোটিন খেয়ে থাকেন। কিন্তু শরীরের প্রতি কিলোগ্রাম ওজনের জন্য মাত্র ১ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন হয়।’

* কোন আইসক্রিমের মতো শরীর

এ টাইপের লোকেরা দেখতে যেন কোন আইসক্রিম! তাদের বুক, গলা ও কাঁধ বেশ প্রশস্ত, কিন্তু দেহের নিম্নভাগ কোন আইসক্রিমের মতো সরু। এ টাইপের লোকদের দেহের উপরিভাগ পেশিপূর্ণ হলেও তাদের পেটের অংশ চর্বি সঞ্চয়ের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, পেটের সঞ্চিত চর্বি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।

যা খাবেন: প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট খেতে হবে, এ কার্বোহাইড্রেট যেন অপ্রক্রিয়াজাত শস্য ও জটিল উৎস থেকে আসে, বলেন ডা. গ্লাসম্যান। এসব খাবার আপনাকে দীর্ঘমেয়াদি শক্তি সরবরাহ করবে। এ টাইপের কার্বোহাইড্রেট ক্যানসারের ঝুঁকি দূর করতে পারে পারে, হার্ভার্ড টি.এইচ. চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথ অনুসারে। আপনার কিচেনে কুইনোয়া, বার্লি, বিনস, বাদামি চাল, মসুর ডাল ও মিষ্টি আলু রাখুন।

যা খাবেন না: যাদের কোন আইসক্রিমের মতো শরীর রয়েছে তাদেরকে ফ্যাট জাতীয় খাবারে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে, বলেন ডা. গ্লাসম্যান। কিন্তু এর অর্থ এটা নয় যে চর্বিমুক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারে হামলে পড়বেন, আপনি কি ধরনের ফ্যাট খাচ্ছেন তাতে স্মার্টনেসের পরিচয় দিন। পেট ভরাতে পুষ্টিকর স্যূপের জন্য একসঙ্গে অপ্রক্রিয়াজাত শস্য, ব্রোথ ও শাকসবজি ব্যবহার করতে পারেন। আপনি স্বাস্থ্যকর ফ্যাট খাবেন, কিন্তু এমসিটি (মিডিয়াম চেইন ট্রাইগ্লাইসেরাইড) ও পিইউএফএ (পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড) ফর্মের ফ্যাট এড়িয়ে চলতে হবে, এগুলো শরীরে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এসব খাবার অল্প পরিমাণে ব্যবহার করবেন: কোকোনাট অয়েল, চিজ, বাটার, ক্যানোলা অয়েল, ভেজিটেবল অয়েল ও সিড অয়েল।

তথ্যসূত্র : দ্য হেলদি

পড়ুন :


ঢাকা/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়