ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

করোনাকালে শিশুর মতো ঘুমানোর উপায়

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:২৭, ১৯ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
করোনাকালে শিশুর মতো ঘুমানোর উপায়

করোনাভাইরাস মহামারিতে ঘুমের গুরুত্ব আবারো আলোচনায় চলে এসেছে। চিকিৎসকদের মতে, কোভিড-১৯ থেকে দ্রুত সুস্থ হতে অথবা জটিলতার ঝুঁকি কমাতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। ভাইরাস সংক্রমণে যথেষ্ট বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছে। ঘুমের চেয়ে ভালো বিশ্রাম আর কিছু হয় না। পর্যাপ্ত ঘুম শরীরকে সংক্রমণের বিরুদ্ধে ভালোভাবে লড়াই করতে সুযোগ দেয়।

কিন্তু অনেকেরই ঘুমের সমস্যা রয়েছে বলে যতটুকু ঘুমানো প্রয়োজন ততটুকু ঘুমাতে পারেন না, ফলে সংক্রমণ শক্তিশালী আক্রমণের সুযোগ পেয়ে যায়। এখানে কি করলে শিশুর মতো ভালোভাবে ঘুমানো যাবে তা সম্পর্কে বলা হলো।

ঘুমের শিডিউল মেনে চলুন: ঘুমানোর স্বাস্থ্যসম্মত রুটিন হলো নিয়মিত নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো ও নির্দিষ্ট সময়ে জেগে ওঠা। যারা ঘুমের রুটিন অনুসরণ করেন তারা ভালোভাবে ঘুমাতে পারেন।

প্রাকৃতিক আলোর সংস্পর্শে থাকুন: জানালাগুলো খুলে দিন ও নিজেকে যথাসম্ভব প্রাকৃতিক আলোর সংস্পর্শে রাখুন। মেজাজের উন্নয়ন ঘটাতে ও শারীরিক ঘড়ি নিয়ন্ত্রণে এটা গুরুত্বপূর্ণ। এটা নির্মল বাতাস পাওয়ারও উপায়।

শরীরকে সক্রিয় রাখুন: প্রতিদিন ব্যায়াম বা পরিশ্রম করলে শরীর সহজে ঘুমানোর জন্য যথেষ্ট ক্লান্ত হতে পারে, ফলে গভীর ঘুমে তলিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়। চোখে ঘুম না এলে হালকা পরিশ্রম করে আবার বিছানায় গেলে সহজে ঘুমিয়ে পড়া সম্ভব হবে।

দিনের ঘুম সীমিত করুন: রাতে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হতে দিনের ঘুম কমিয়ে ফেলা গুরুত্বপূর্ণ। দিনে বেশি ঘুমালে স্লিপ প্রেসার কমে যায় ও অনিদ্রারোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। প্রয়োজন না হলে বিকালে ঘুমাতে যাবেন না।

সামাজিক জীবন বজায় রাখুন: মিডিয়ার খারাপ খবর উদ্বেগে ভোগাতে পারে। এছাড়া মনে দুশ্চিন্তা ভর করার মতো আরো অনেক কারণ রয়েছে, যা ঘুমচক্রের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখলে উদ্বেগ কমে যায়। একা বাস করলে বা পরিবার থেকে দূরে থাকলে বা ভাইরাস মহামারিতে সোশ্যাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সামাজিক সম্পর্ক রক্ষা করা যায়।

ডায়েটে মনোযোগ দিন: বিকালে বা রাতে কফি পান করবেন না, কারণ এই পানীয় স্নায়বিক দুর্বলতা সৃষ্টি করে ও ঘুম বিলম্বিত করে। বিছানায় যাওয়ার আগে অতিরিক্ত খাবার খেলেও চোখে ঘুম আসতে দেরি হতে পারে। কিছু লোক প্রচুর কফি বা খাবার খেলেও ঘুম যেতে কোনো সমস্যা হয় না।

ঘুমানোর আগে ডিভাইস পরিহার করুন: প্রযুক্তি হলো আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্মার্টফোন, ট্যাব ও ল্যাপটপের মতো নতুন প্রযুক্তিতে অনেকে আসক্ত হয়ে পড়েন। প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহারে ঘুমচক্র ব্যাহত হয়। তাই ভালোভাবে ঘুমাতে বিছানায় যাওয়ার কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে এসব ডিভাইসের ব্যবহার বন্ধ করে দিন। তা না পারলে স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা কমাতে ‘নাইট মোড’ চালু করুন।

ঘুম না এলে বিছানা ছেড়ে দিন: বিছানায় ঘুমাতে যাওয়ার আধ ঘণ্টার মধ্যে ঘুম না এলে আর শুয়ে থাকবেন না। ঘুম বিলম্বিত হলে বিছানা ছেড়ে হালকা পরিশ্রম করুন। অথবা বই পড়তে পারেন, মিউজিক শুনতে পারেন ও ব্রিদিং এক্সারসাইজ/ইয়োগা করতে পারেন।এরপর আবার ঘুমাতে গেলে দ্রুত ঘুম চলে আসতে পারে।

মানসিক চাপ কমিয়ে ফেলুন: প্রত্যেক মানুষেরই কিছু না কিছু মানসিক চাপ রয়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত মানসিক চাপ শরীর ও মন উভয়েরই জন্য ভালো নয়। মানসিক চাপের তীব্রতায় ঘুম বিঘ্নিত হয়, তাই এটা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মানসিক চাপ কমাতে পছন্দমতো স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট টেকনিক অনুসরণ করুন।

ঘুমের ওষুধ এড়িয়ে চলুন: অনেকেই দু’একদিন ভালোমতো ঘুম না হলে ঘুমের ওষুধ সেবন করে থাকেন, কিন্তু এই সহজ সমাধানের পেছনে যে মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে তা বুঝতে চান না। দীর্ঘমেয়াদে ঘুমের ওষুধ সেবনে ঘুমের সামান্য সমস্যা প্রকট হতে পারে। হয়তো মানসিক চাপে ভালোভাবে ঘুমাতে পারছেন না। তাই ঘুমের ওষুধের দিকে না ঝুঁকে সঠিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত হোন।

তথ্যসূত্র: দ্য কনভারসেশন

পড়ুন: ঘুম বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর (প্রথম পর্ব)



ঢাকা/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়