ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

করোনার ১৮ উপসর্গ

দেহঘড়ি ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৫৪, ১৫ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ১১:০১, ২৯ আগস্ট ২০২০
করোনার ১৮ উপসর্গ

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের তাণ্ডব এখনো অব্যাহত রয়েছে। তাই ভাইরাসটির তুচ্ছ উপসর্গ সম্পর্কেও সচেতন থাকতে হবে যা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলে দেখা দিতে পারে। যে উপসর্গকে অবহেলা করা হয় তা সত্যিই করোনা সংক্রমণের কারণে প্রকাশ পেলে কোভিড-১৯ টেস্ট করতে দেরি হবে, এর ফলে শরীরে কোনো জটিলতা তৈরি হলে সঠিক সময়ে চিকিৎসা পেতে ব্যর্থও হতে পারেন।

উপসর্গ ছোট হলে যে জটিলতা বড় হবে না এমন কোনো গ্যারান্টি নেই। করোনা সংক্রমণে অনেকের মৃত্যু হয়েছে হঠাৎ করেই। তাদের মধ্যে উপসর্গ দেখা দিলেও তা কোভিড-১৯ এর নয় ভেবে অবহেলা করেছেন। একসময় মারাত্মক জটিলতায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। তাই করোনা সংক্রমণে যত উপসর্গ প্রকাশ পায় সবগুলো সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।

তীব্র জ্বর: সাধারণ জ্বর, ঠাণ্ডা লাগার থেকে করোনা অনেক বেশি বিপজ্জনক। এই ভাইরাসে আক্রান্তদের বেশিরভাগের শরীরে তীব্র জ্বর দেখা দেয়। কারও এর সঙ্গে থাকে শুষ্ক কাশিসহ আরো কিছু লক্ষণ।

শুষ্ক কাশি: শুষ্ক কাশি হচ্ছে করোনা সংক্রমণের অন্যতম প্রধান উপসর্গ। তবে এ ধরনের কাশি অন্যান্য কারণেও হতে পারে। আপনার কাশি এক দিনের বেশি সময় ধরে থাকলে, তা করোনার উপসর্গ কিনা তা নিশ্চিত হতে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন।

গলা ব্যথা: যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) সম্প্রতি করোনার উপসর্গের তালিকায় গলা ব্যথা অন্তর্ভুক্ত করেছে। তবে এটিকে বিরল উপসর্গ হিসেবেই মনে করা হচ্ছে। হেলথ ডটকমকে ইয়েল মেডিসিনের ল্যারিঞ্জোলজিস্ট মাইকেল লারনার বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের ধারণা, করোনাভাইরাসে ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে গলা ব্যথা দেখা দেয়।’

স্বাদ বা ঘ্রাণশক্তি হারানো: করোনায় আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম লক্ষণ হতে পারে স্বাদহীনতা বা গন্ধহীনতা। এমন হতে পারে যে আপনার মধ্যে করোনার অন্য কোনো লক্ষণ নেই, কিন্তু এ দুটির একটি বা উভয়টি আছে। সুতরাং স্বাদহীন বা গন্ধহীন বোধ হলে করোনা টেস্ট করাতে পারেন।

মাথাব্যথা বা প্রলাপ: স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, হাসপাতালে ভর্তি অনেক কোভিড-১৯ রোগীর মধ্যে করোনার স্নায়ুবিক লক্ষণ হিসেবে যেমন মাথাব্যথা, বিভ্রান্তি, প্রলাপ বকা, এমনকি স্ট্রোকের ঘটনাও দেখা গেছে।  

পেট খারাপ: করোনার হালকা একটি উপসর্গ হিসেবে পেট খারাপ বা ডায়রিয়া দেখা দিতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি করোনার প্রাথমিক পর্যায়ের একটি লক্ষণ। তাই ডায়রিয়া বা বমি বমি ভাবের সমস্যা থাকলে করোনা টেস্ট করতে পারেন।  

অণ্ডকোষ ব্যথা: করোনার স্বল্প পরিচিত একটি উপসর্গ হচ্ছে, অণ্ডকোষে ব্যথা। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষকরা আমেরিকান জার্নাল অব ইমারজেন্সি মেডিসিনে এ ধরনের একটি কেস স্টাডি প্রকাশ করেছেন। সেখানে বলা হয়, ৪২ বছর বয়সি একজন ব্যক্তি অণ্ডকোষে তীব্র ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। চিকিত্সকরা তার অণ্ডকোষে কোনো ধরনের সমস্যা খুঁজে পাননি এবং সিটি স্ক্যানে ফুসফুসের ক্ষতি দেখা গিয়েছিল। দুইদিন পর লোকটির কোভিড-১৯ রোগ ধরা পড়ে।

ক্ষুধাহীনতা: করোনার উপসর্গ হিসেবে অনেক কোভিড-১৯ রোগী তাদের ক্ষুধা নষ্ট হয়ে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।  খাওয়ার ইচ্ছা কমে যাওয়া বা একেবারেই খেতে ইচ্ছা না করাটা করোনার অন্যতম উপসর্গ হতে পারে।

শরীর জ্বলাপোড়া: কোভিড-১৯ রোগের অনেক রোগী শরীর জ্বলাপোড়া করার কথা চিকিৎসকদের জানিয়েছেন।

পায়ে ক্ষত: করোনায় আক্রান্ত হলে পায়ের আঙুলে ক্ষুদ্র ক্ষত, র‌্যাশ বা ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। এ উপসর্গ সাধারণত কম বয়সীদের মধ্যে দেখা দেয় এবং বেশ কিছু দিন স্থায়ী হয়।

পেট ব্যথা: ক্ষুধাহীনতার মতো পেট ব্যথাও সাধারণ সমস্যা হিসেবে অনেকে মনে করতে পারেন। তবে আমেরিকান জার্নাল অব গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজির একটি নতুন গবেষণায়, পেটের সমস্যাগুলোর সঙ্গে কোভিড-১৯ রোগের সঙ্গে যোগসূত্র পাওয়া গেছে।

শ্বাসকষ্ট: বুকে চাপ বোধ বা শ্বাস নিতে সমস্যা হলে, করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে ধরে নিতে পারেন। তবে তরুণ বয়সী বা যাদের আগে থেকে স্বাস্থ্য সমস্যা নেই তাদের এই উপসর্গে ভোগার সম্ভাবনা কম।

চোখ জ্বলাপোড়া: চোখে চুলকানি, জ্বলাপোড়া করা বা চোখ লাল হয়ে যাওয়াটাও করোনার উপসর্গ হতে পারে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন।

শীত শীত অনুভূতি: শরীরে শীত শীত অনুভূতি বা প্রবল শীত বোধ থেকে কাপুনি হওয়াটাও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ হতে পারে। তবে এই উপসর্গটি বিরল বলা চলে, খুব বেশি সংখ্যক রোগীর মধ্যে এ লক্ষণ দেখা যায়নি।   

পেশী বা শরীর ব্যথা: যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) সম্প্রতি করোনার উপসর্গের তালিকায় পেশী বা শরীর ব্যথা অন্তর্ভুক্ত করেছে।   

অনবরত হেঁচকি: চিকিত্সকরা সতর্ক করে বলেছেন, করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য নতুন উপসর্গ হতে পারে অনবরত হেঁচকি। আমেরিকান জার্নাল অব ইমার্জেন্সি মেডিসিনে এ ধরনের একটি কেস স্টাডি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, এক ব্যক্তি ৪ দিন হেঁচকিতে ভোগার পর করোনা টেস্টে তার কোভিড-১৯ রোগ ধরা পড়ে। হেঁচকি ব্যতীত ওই ব্যক্তির আরো কোনো লক্ষণ ছিল না, এমনকি তার শরীরের তাপমাত্রা ছিল মাত্র ৩৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

শ্রবণশক্তি হ্রাস: জন হপকিন্স স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকরা জানিয়েছেন, ভাইরাসটি কেবল নাক এবং গলাকে সংক্রামিত করে তা নয়, এর পাশাপাশি কান এবং মস্তিষ্কের মাস্টয়েড হাড়েও প্রভাব ফেলতে পারে। গবেষকদের মতে, শ্রবণশক্তি হ্রাস, কানে ব্যথা বা কানের অন্যান্য সমস্যা করোনা আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ হতে পারে।  

ক্লান্তি: করোনার অন্যতম প্রধান একটি উপসর্গ হলো ক্লান্তি। বিশেষজ্ঞদের মতে, মহামারির এ সময়ে ক্লান্তির অনুভূতিকে মোটেই অবহেলা করা যাবে না।

তথ্যসূত্র: মিরর

ঢাকা/ফিরোজ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়