ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

পিঠের ব্যথা কমাতে ঘুমাবেন যেভাবে

দেহঘড়ি ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১০, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ১২:৩৪, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
পিঠের ব্যথা কমাতে ঘুমাবেন যেভাবে

সমগ্র স্বাস্থ্যের জন্য সঠিক ঘুম গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, এটি আমাদের মাংসপেশি মেরামত করে ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যথার কারণে দীর্ঘমেয়াদে ঘুমের ঘাটতিতে থাকলে অথবা ভুল পজিশনে ঘুমালে হার্টের রোগ, স্থূলতা ও সংক্রমণের মতো স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

একারণে সঠিক পজিশনে ঘুমাতে হবে, যা আপনাকে প্রতিরাতে যথেষ্ট পরিমাণে ঘুমাতে সাহায্য করবে। আপনার কি উপুর হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস আছে? তাহলে জেনে রাখুন এতে ঘাড় বেশি প্রলম্বিত হয়ে সমস্যা হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুমানোর জন্য দুটি ভালো পজিশন হচ্ছে- চিৎ হয়ে ঘুমানো ও কাত হয়ে ঘুমানো।পজিশন দুটি কিছু সমস্যা উপশম করতে পারে। এখানে এ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।

চিৎ হয়ে ঘুমানো

সারাদিন দাঁড়িয়ে বা বসে থাকলে মেরুদণ্ড ও জয়েন্টের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। চিৎ হয়ে ঘুমালে মাধ্যাকর্ষণের প্রতিনিয়ত টান থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া চিৎ হয়ে ঘুমালে স্পাইনাল ডিস্ক থেকে চাপও দূর হয়ে যায়- এটা সেসব রোগীদের জন্য ভালো যাদের ডিজেনারেটিভ ডিস্ক ডিজিজের মতো রোগে কশেরুকাতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। একারণে অনেক বিশেষজ্ঞ একমত হয়েছেন, বেশিরভাগ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য ঘুমানোর সর্বোত্তম পজিশন হচ্ছে চিৎ হয়ে ঘুমানো।

চিৎ হয়ে ঘুমালে ডেস্কে দীর্ঘসময় সামনে ঝুঁকে কাজ করার ফলে যে প্রতিক্রিয়া হয় তা থেকেও কিছুটা পরিত্রাণ পাওয়া যেতে পারে। ঝুঁকে কাজ করার সময় উপরের বাহুর হাড় সামনের দিকে স্লাইড করার প্রবণতায় থাকে, এর ফলে শোল্ডার ইমপিনজ্মেন্ট নামক ইনজুরি হতে পারে। শোল্ডার ইমপিনজ্মেন্ট রাতের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। চিৎ হয়ে ঘুমালে কাঁধ ও পেক্টোরাল মাংসপেশি প্রসারিত হবে এবং ঝুঁকে কাজ করার প্রতিক্রিয়া কমে যাবে।

চিৎ হয়ে আরামে ঘুমাবেন যেভাবে

১. আপনার মাথাকে খুব উঁচুতে তুলবেন না। একটি সমতল ও নরম বালিশে মাথা রেখে ঘুমান অথবা নেক রোল ব্যবহার করুন, বলেন হসপিটাল ফর স্পেশাল সার্জারির ফিজিয়াট্রিস্ট জর্জ সিরিল।

২. যাদের স্লিপ অ্যাপনিয়া অথবা অ্যাসিড রিফ্লাক্স রয়েছে তারা যেন শরীরের উপরিভাগকে উঁচুতে রাখেন- এটা করতে ফোমের ওয়েজ পিলো (ত্রিভুজাকৃতির বালিশ, যা মাথা থেকে নিচের দিকে ক্রমান্বয়ে চ্যাপ্টা) ব্যবহার করতে পারেন, বলেন অর্থোপেডিক ফিজিক্যাল থেরাপির ক্লিনিক্যাল স্পেশালিস্ট থেরেসা মার্কো।

৩. শরীরের অন্যান্য স্থানের নিচে বালিশ রেখে এক্সপেরিমেন্ট করতে পারেন। আপনার হাঁটুর নিচে একটি শক্ত বালিশ রাখলে মেরুদণ্ড ও নিতম্বস্থ জয়েন্টের চাপ দূর হবে, বলেন ডা. সিরিল। অথবা নিম্নস্থ কোমরের ব্যথা কমাতে নিম্নস্থ কোমরের নিচে শক্ত সমতল বালিশ রাখতে পারেন।

৪. শক্ত ম্যাট্রেস ব্যবহার করুন।এটি আপনার মেরুদণ্ড ও জয়েন্টকে নিরপেক্ষ অবস্থানে রাখবে।

কাত হয়ে ঘুমানো

অনেকের জন্য কাত হয়ে ঘুমানো স্বস্তিকর হতে পারে। কিছু শারীরিক সমস্যা থাকলেও এভাবে ঘুমালে সহায়ক হতে পারে। আপনার এ সমস্যাগুলোর কোনোটা থাকলে কাত হয়ে ঘুমালে ঘুমের মাত্রা বাড়তে পারে:

১. অ্যাসিড রিফ্লাক্স: ডা. সিরিল বলেন, ‘প্রমাণ রয়েছে যে বাম কাতে ঘুমালে পাকস্থলি ও অন্ত্রের সমস্যা কমতে পারে- তেমন একটি সমস্যা হলো অ্যাসিড রিফ্লাক্স। এর সম্ভাব্য কারণ হচ্ছে, পাকস্থলি ও খাদ্যনালীকে পৃথককারী ইসোফ্যাজিয়াল স্ফিংকটার মাসল অধিক শিথিল হতে পারে।’

২. পিঠ ব্যথা: হাঁটলে অথবা দাঁড়ালে কি পিঠের ব্যথা বেড়ে যায়? তাহলে আপনার জন্য ডা. সিরিলের পরামর্শ হলো, ব্যথা প্রশমিত করতে হাঁটুকে বুকের দিকে রেখে কাত হয়ে ঘুমাবেন।

৩. লুম্বার স্টেনোসিস: এটা এমন একটা কন্ডিশন যেখানে নিম্নস্থ পিঠে মেরুদণ্ডের স্নায়ুগুলো সংকুচিত হয়ে পড়ে। বয়স্কদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। এসব রোগীরা পিঠ বাঁকালে আরাম অনুভব করেন। ডা. শামি বলেন, ‘লুম্বার স্টেনোসিস রয়েছে এমন লোকেরা কাত হয়ে ঘুমিয়ে অধিক স্বস্তি পেতে পারেন, কারণ এ পজিশনে পিঠ প্রলম্বিত হয় না।’

৪. প্রেগন্যান্সি: গর্ভবতী নারীদেরও কাত হয়ে ঘুমানো উচিত, বিশেষ করে গর্ভাবস্থার চার মাস পর থেকে।

কিছু লোক কাত হয়ে ঘুমালে জয়েন্ট ও মেরুদণ্ডে অস্বস্তি হতে পারে। আপনার বারসাইটিসের মতো নিতম্ব সম্পর্কিত সমস্যা থাকলে কাত হয়ে ঘুমালে ব্যথা তীব্র হতে পারে।

ঢাকা/ফিরোজ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়