ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

শীতকালে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে যা খাবেন (শেষ পর্ব)

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৩, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ১১:৪০, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০
শীতকালে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে যা খাবেন (শেষ পর্ব)

চলতি শীতকালে আমাদের শরীর প্রচলিত সংক্রমণের পাশাপাশি একটি নতুন সংক্রমণের জটিলতায় পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রচলিত সংক্রমণ ঠান্ডা-ফ্লুকে আমরা ততটা গুরুত্ব না দিলেও নতুন সংক্রমণ কোভিড-১৯ এড়াতে বেশ সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে।

চলতি মহামারি কোভিড-১৯ বিভিন্ন দেশে শীতকালেই বেশি মৃত্যু ঘটাচ্ছে। ঠান্ডার প্রভাবে ও এসময় লাইফস্টাইলের কিছু অসংগতি আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে বেশ দুর্বল করে দিতে পারে। হয়তো একারণেই শীতকালে কোভিড-১৯ জনিত মৃত্যু বেশি হচ্ছে। কেবল কোভিড-১৯ নয়, আপনার অসচেতনতায় প্রচলিত সংক্রমণ ঠান্ডা-ফ্লুও মারাত্মক পরিণতি সৃষ্টি করতে পারে। তাই ঠান্ডার দিনগুলোতে নিজেকে বিভিন্ন সংক্রমণের ভয়াবহতা থেকে রক্ষার্থে ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে পারে এমন খাবারে মনোনিবেশ করা উচিত। ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করার মানে হলো রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। শীতকালে সংক্রমণের জটিলতা থেকে বাঁচাতে পারে এমনকিছু খাবার নিয়ে দুই পর্বের প্রতিবেদনের আজ থাকছে শেষ পর্ব।

* সূর্যমুখী বীজ: শরীরে সংক্রমণ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রতিদিন ৩০ গ্রাম সূর্যমুখী বীজ খেতে পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন ই ও সেলেনিয়াম উপাদান রয়েছে সূর্যমুখী বীজে, যা শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে সাপোর্ট দিতে পারে।

* গ্রিন টি: গ্রিন টি ও ব্ল্যাক টি উভয় চায়েই প্রচুর ফ্লেভানয়েড রয়েছে। ফ্লেভানয়েড হলো এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ইমিউন সিস্টেমের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে থাকে। গ্রিন টি-তে বেরি ও কোকোয়াতে পাওয়া যায় এমন পুষ্টিও রয়েছে। এটা হলো ফেনলিক কম্পাউন্ড ক্যাটেচিন, যা ইমিউন ফাংশনের উন্নয়ন ঘটায়। অন্যদিকে ব্ল্যাক টি এর ফার্মেন্টেশন প্রসেসের সময় অনেক ক্যাটেচিন ধ্বংস হয়ে যায়। গ্রিন টি-কে ফার্মেন্ট না করে স্টিম করা হয় বলে ক্যাটেচিন নষ্ট হয় না। ২০১৮ সালের একটি গবেষণায় জানা গেছে, গ্রিন টি পানে ফ্লু সংক্রমণের হার কমেছে ও ইমিউন কার্যক্রম বেড়েছে। গবেষণা বলছে, ব্ল্যাক টি এর ফার্মেন্টেশনের সময় উৎপন্ন থিয়াফ্লাভিনও ইমিউনিটি বাড়াতে পারে।

* আদা: আদার ম্যাঙ্গানিজ শরীরের প্রদাহ কমাতে পারে, বমিভাব কাটাতে পারে ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা উপশম করতে পারে। আদার প্রদাহ প্রশমক ও ক্যানসার প্রতিরোধী প্রতিক্রিয়া ছাড়াও এটি ইমিউনিটিকে সাপোর্ট করতে পারে। এর জন্য ধন্যবাদ পাবে এতে বিদ্যমান ভিটামিন বি৬।

* হলুদ: তরকারিতে ব্যবহৃত অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হলো উজ্জ্বল হলুদ রঙের মসলা হলুদ। শতশত বছর ধরে হলুদকে বাতের (অস্টিওআর্থ্রাইটিস ও রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস) চিকিৎসায় প্রদাহ প্রশমক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। হলুদের কারকুমিন প্রদাহ কমিয়ে থাকে। হলুদকে হলুদ রঙ প্রদানকারী এই কারকুমিন এক্সারসাইজের পর মাসল রিকভারিতেও সাহায্য করে। গবেষণা ইঙ্গিত দিয়েছে, হলুদের কারকুমিন ইমিউন সিস্টেমের শক্তিমত্তা বাড়াতে পারে ও ভাইরাস-বিরোধী পুষ্টি হিসেবে কাজ করতে পারে।

* রসুন: ব্যাকটেরিয়া-বিরোধী প্রতিনিধি ও সংক্রমণ প্রতিরোধক ইমিউন বুস্টার হিসেবে রসুন অনেকেরই প্রশংসা পেয়েছে। রসুনকে কাঁচা খেলে সালফারে সমৃদ্ধ অ্যালিসিন পাওয়া যায়, যা ইমিউন সিস্টেমের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে। রসুনের অ্যালিসিন কেবল ভাইরাস সংক্রমণ নয়, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ দমনেও সহায়তা করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা তিন মাস ধরে প্রতিদিন রসুনের সাপ্লিমেন্ট সেবন করেছেন তাদের ঠান্ডা-ফ্লুর হার সেই গ্রুপের তুলনায় কম ছিল যারা সাপ্লিমেন্টটি গ্রহণ করেননি।

* চিকেন স্যূপ: ঠান্ডা-ফ্লুতে আক্রান্ত হলে অনেকেই চিকেন স্যূপ খেয়ে থাকেন। সংক্রমণে ভুগলে চিকেন স্যূপ খেলে আসলেই উপকার পাওয়া যায়। চিকেন স্যূপের ভিটামিন বি৬ ঠান্ডা-ফ্লু নিরাময়ে সাহায্য করে। এছাড়া এই খাবারে ভিটামিন ডি ও কোবালামিনও রয়েছে, যা পরিপাক নিরাময় ও ইমিউনিটি বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে।

* সামুদ্রিক খাবার: যেসব সামুদ্রিক খাবারে প্রচুর জিংক রয়েছে তা খেলে ইমিউন সিস্টেমের কোষগুলো সঠিকভাবে ফাংশন করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, সামুদ্রিক চিংড়িতে উচ্চ মাত্রায় জিংক পাওয়া যায়। জিংকের আরো কিছু উৎস হলো মাংস, মাছ, ডিম, মিষ্টি কুমড়ার বীজ ও কাঠবাদাম।

পড়ুন: শীতকালে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে যা খাবেন (প্রথম পর্ব)

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়