ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

নারীর অজান্তে যে কারণে গর্ভপাত ঘটে

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৩, ৫ জানুয়ারি ২০২১   আপডেট: ১২:৫৪, ৫ জানুয়ারি ২০২১
নারীর অজান্তে যে কারণে গর্ভপাত ঘটে

গর্ভধারণ করলেই মাতৃদেহে শিশু সযত্নে বড় হতে থাকবে এমন নয়। অনেক সময় খুব দ্রুতই গর্ভাবস্থার সমাপ্তি ঘটতে পারে। গর্ভাবস্থার সমাপ্তি অথবা গর্ভে ভ্রুণের মৃত্যুই হলো গর্ভপাত। গর্ভধারণের পর খুব কম সময়ের মধ্যে গর্ভপাত ঘটলে মেডিক্যাল সায়েন্সের ভাষায় তাকে ‘কেমিক্যাল প্রেগন্যান্সি’ বলে।

এক্ষেত্রে ভ্রুণ তৈরির আগেই গর্ভপাত ঘটে। দুঃখজনক হলো এ সম্পর্কে অনেক সময় নারী নিজেও বুঝতে পারেন না কীভাবে এই সর্বনাশ হলো! সেনসেটিভ প্রেগন্যান্সি টেস্ট করলে তখনই শুধু বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

কেমিক্যাল প্রেগন্যান্সিতে ভ্রুণ সৃষ্টি হয় না। এ প্রসঙ্গে দ্য ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটি সেন্টারের ম্যাটারনাল-ফেটাল মেডিসিনের অধ্যাপক মাইকেল ক্যাকোভিক বলেন, ‘কেমিক্যাল প্রেগন্যান্সিতে নারীর প্রেগন্যান্সি টেস্টের রেজাল্ট পজিটিভ এলেও আল্ট্রাসাউন্ডে ভ্রুণ দেখা যায় না। তারপরও একে গর্ভধারণ বলা যায়। কিন্তু দ্বিতীয় আল্ট্রাসাউন্ডেও যদি ভ্রুণের লক্ষণ দেখা না যায় তখন ধরে নিতে হবে আপনার কেমিক্যাল প্রেগন্যান্সি হয়েছে।’

এটি এমন একটি অবস্থা যা অলক্ষ্যে সংঘটিত হতে পারে। এ প্রসঙ্গে ডা. ক্যাকোভিক বলেন, ‘নারী অনেক সময় বুঝতেই পারেন না তিনি গর্ভবতী হয়েছেন; তাদের পিরিয়ড দেরিতে হলেও।’

প্রাথমিক গর্ভাবস্থার সাধারণ উপসর্গ হলো সকালে বমিভাব, স্তনে ব্যথা ও ক্লান্তি। আপনার কেমিক্যাল প্রেগন্যান্সি হয়ে গেলে এসব উপসর্গ চলে যাবে এবং রক্তক্ষরণের অভিজ্ঞতা হতে পারে, বলেন নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ফেইনবার্গ স্কুল অব মেডিসিনের গাইনোকলোজির সহযোগী অধ্যাপক মাউরা কুইনলান।

কেমিক্যাল প্রেগন্যান্সির হার কেমন তা এখনো স্পষ্ট নয়, তবে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি অনেক নারীর এ ধরনের গর্ভপাত হয়েছে। ডা. কুইনলান বলেন, ‘আগে কোনো নারী দুটি পিরিয়ড মিসড করলে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতেন। ফলে তখন এ ধরনের গর্ভপাত হয়েছে কিনা জানা যেত না। কিন্তু আজকাল খুবই সেনসিটিভ টেস্ট প্রচলিত রয়েছে বলে অকাল গর্ভপাতের ঘটনা ধরা পড়ছে।’

কেমিক্যাল প্রেগন্যান্সি অনেক কারণে হতে পারে। সবচেয়ে প্রচলিত কারণটি হলো পুরুষের শুক্রাণু অথবা নারীর ডিম্বাণুর ক্রোমোজোমে সমস্যা। স্বাভাবিক গর্ভধারণের সময় পুরুষ থেকে ২৩টি ক্রোমোজোম এবং নারী থেকে ২৩টি ক্রোমোজোম আসে। কিন্তু কখনো কখনো ক্রোমোজোমের সংখ্যা বেড়ে বা কমে গিয়ে কেমিক্যাল প্রেগন্যান্সি ঘটিয়ে থাকে।

ক্রোমোজোমের সংখ্যার তারতম্য বা অস্বাভাবিকতার কারণে সংঘটিত কেমিক্যাল প্রেগন্যান্সির ওপর মানুষের নিয়ন্ত্রণ নেই। এটা নিয়ে হতাশ হওয়ারও কিছু নেই। এটাকে ইতিবাচক লক্ষণ হিসেবে মেনে নিতে পারেন, কারণ এ ধরনের গর্ভপাত ইঙ্গিত দেয় যে আপনি ভবিষ্যতেও গর্ভবতী হতে পারেন।


 

ঢাকা/তারা

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়