ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

২০ মিনিটেই রক্তাক্ত হলি আর্টিজান

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২০ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
২০ মিনিটেই রক্তাক্ত হলি আর্টিজান

ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে ভয়ংকর হামলার ঘটনা ঘটে ২০১৬ সালের ১ জুলাই। জঙ্গিরা যেন সেদিন রক্তের হলি খেলায় মেতে উঠেছিল। তাদের হামলায় দুই পুলিশ সদস্য, ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ নিহত হন ২২ জন। ঢাকার কূটনৈতিক এলাকায় এরকম একটি হামলা হবে তা কারও কল্পনাতেও ছিল না।

সে দিনের সেই ভয়ংকর হামলার চিত্র ফুটে ওঠে পুলিশের দেয়া চার্জশিটে। ওই চার্জশিটের আলোকে ঘটনার বিশদ রাইজিংবিডি পাঠকদের জন্য তুলে ধরছেন নিজস্ব প্রতিবেদক মামুন খান। ধারাবাহিক বর্ণনার আজ তৃতীয় পর্ব।

হলি আর্টিসানে জঙ্গি হামলায় সেদিনের সেই হত্যাকান্ডের ঘটনা এতটাই নির্মম ছিলো যে বর্ণনা করার মত নয়। জঙ্গিরা মাত্র ২০ মিনিটে গুলি ও গলাকেটে একে একে হত্যা করে ২২ জনকে। জীবন্ত একজনের সামনে অন্য একজনকে নির্মমভাবে হত্যা করার পৈচাশিক নৃশংসতায় মেতে ওঠে জঙ্গিরা। তারা এতটাই নিষ্ঠুর ছিল যে লাশের সারি মেঝেতে রেখেই খাবার খায়। হত্যাকান্ডের ছবি তুলে অ্যাপস-এর মাধ্যমে শীর্ষ নেতাদের কাছে পাঠায়।

পুলিশের দেয়া মামলার চার্জশিটে বলা হয়েছে, ইশতিহাদি (আত্মঘাতি) /ইসাবার পাঁচ সদস্য দুটি দলে বিভক্ত হয়ে বসুন্ধরার বাসা থেকে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ২০১৬ সালের ১ জুলাই বিকেল আনুমানিক ৫টা থেকে সাড়ে ৫টার দিকে অস্ত্র-গুলি, গ্রেনেড, চাকু নিয়ে বের হয় তারা। রাত ৮টা ৪২ মিনিটে প্রথমে নিবরাস ইসলাম ও মীর সামেহ্ মোবাশ্বের, এরপর রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, খায়রুল ইসলাম পায়েল, শফিকুল ইসলাম বাধন কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ৭৯ নম্বর রোড ধরে হলি আর্টিজানের মেইন গেটে যায়। মুল গেটের নিরাপত্তারক্ষী নূর ইসলাম তাদের পরিচয় ও কোথায় যাবেন জিজ্ঞাসা করলে নিবরাস নূর ইসলামের ডান চোখের নিচে ঘুষি মেরে হলি আর্টিজানের ভেতরে ঢুকে যায়। সেখানে ঢুকেই গুলি ও বোমা নিক্ষেপ করে আতঙ্ক তৈরি করে তারা।

তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ২০ মিনিটের মধ্যে পাঁচ জঙ্গি বিভিন্ন রুম, টয়লেট, চিলারঘর, হিমঘর প্রভৃতি স্থান থেকে লোকজনকে বের করে এনে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায়। তারা দেশি-বিদেশিদের গুলি করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে/গলাকেটে করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। হত্যার পর ছবি তুলে অ্যাপস এর মাধ্যমে বাইরে অবস্থানরত তামিম চৌধুরী ও মারজানের কাছে পাঠায়।

চার্জশিটে বলা হয়, ঘটনার পরে নব্য জেএমবির সব সদস্য বাসা পরিবর্তন করে নতুন বাসায় ওঠে এবং সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে আত্মগোপন করে। তামিম চৌধুরী নারায়নগঞ্জ, তানভীর কাদেরী লালবাগ, বাশারুজ্জামান চকলেট ও ছোট মিজান শিবগঞ্জ থানার চককীর্তি ত্রিমোহনী এলাকায়, মেজর (অব.) রূপনগর ধানাধীন রূপনগর আবাসিক এলাকায় অবস্থান করে।

এরপর তারা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শোলাকিয়ার ঈদ জামাতে হামলাসহ সারাদেশে আরো হামলা এবং পুলিশ অফিসার যারা সরকারি কম্পাউন্ডের বাইরে থাকেন তাদের খুঁজে বের করে হত্যা করার পরিকল্পনা করে।

 

ঢাকা/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়