ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ইয়াবার বিকল্প ব্যথার ট্যাবলেট

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:০২, ২০ মার্চ ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ইয়াবার বিকল্প ব্যথার ট্যাবলেট

ইয়াবার বিকল্প হিসেবে ব‌্যথানাশক ট‌্যাবলেটের ব‌্যবহার বেড়েছে। ইয়াবার মতো করেই ব‌্যথানাশক এসব ট‌্যাবলেট গ্রহণ করেন মাদকসেবীরা। দামে সস্তা ও হাতের নাগালে থাকায় তাই এর ব‌্যবহারও বেড়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বাড়ার ফলে ইয়াবার সহজলভ‌্যতা কমেছে। একইসাথে দামও বেড়েছে। তাই ইয়াবার বিকল্প খুঁজতে গিয়ে ব‌্যথানশক ট‌্যাবলেটকে বেছে নিয়েছে মাদকসেবীরা।

বিশ্ববিদ‌্যালয় পড়ুয়া আতিক (ছদ্মনাম) একসময় ইয়াবা সেবন করতেন। ইয়াবার সহজলভ‌্যতা না থাকায় এখন তিনি ব‌্যথানাশক ট‌্যাবলেটের মাধ‌্যমে নেশা করছেন। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কথা হয় এই যুবকের সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘মগবাজারের এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে আমি এই ট‌্যাবলেটে আসক্ত হয়ে পড়ি। প্রথমদিন সেবন করার পর খুবই ভাল লেগেছিল। এরপর এর নেশায় পড়ে যাই। সেবনের পর ঝিমুনি ভাব আসে। কয়েক রাত ঘুম ছাড়াই থাকা যায়। এর আগে ইয়াবা সেবন করতাম। কিন্তু দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন নিয়মিত ব্যথার ট্যাবলেট সেবন করি।’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে থাকা তথ‌্য মতে, শতকরা ৬০ ভাগ ইয়াবাসেবী এখন এ ট্যাবলেটে আসক্ত হয়ে পড়েছে। তারা এর নাম দিয়েছে ‘বিকল্প ইয়াবা’। এসব ট‌্যাবলেটের দাম সাধারণত ১৮ থেকে ২০ টাকার মতো। তবে ফার্মেসিগুলো সুযোগ বুঝে এর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা সেগুলো ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করছে।

ফার্মেসি থেকে সহজেই এসব ট‌্যাবলেট সংগ্রহ করা যায়। প্রেসক্রিপশনও লাগে না। রাজধানীর প্রান্তিক এলাকাগুলোতেই এর ব্যবহার বেশি। মূলত নিম্নবিত্তের মাদকসেবীরাই এ ট‌্যাবলেট বিকল্প ইয়াবা হিসেবে ব‌্যবহার করছে।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান বলেন, ‘লাভের আশায় এক শ্রেণির অসাধু ফার্মেসি ব্যবসায়ী প্রেসক্রিপশন ছাড়াই এসব ওষুধ বিক্রি করছে। এ ট‌্যাবলেটের মাধ‌্যমে নেশা করে যেহেতু অপরাধ সংঘঠিত হয়েছে, তাই রেফারেন্স ব্যতীত এসব ওষুধ বিক্রি বন্ধে কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা চিঠি দিয়েছি। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারিও অব্যাহত আছে। গত দুই বছরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর মাদকবিরোধী অব্যাহত অভিযানের কারণে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। নেশার খোরাক মেটাতে নিত্য নতুন নেশাদ্রব্যের খোঁজে থাকে তারা। তবে আমরাও বসে নেই।’

শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ওষুধ তো পানি দিয়ে গিলে খাওয়ার কথা। কিন্ত ইয়াবার মতো করে নাক দিয়ে গ্রহণ করার ফলে ব্রেইন, কিডনিসহ জটিল রোগের আশঙ্কা থাকে। আস্তে আস্তে এসব মাদকসেবীরা মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়।’


ঢাকা/মাকসুদ/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়