ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

করোনায় আইপিও ইস্যু বাধাগ্রস্ত, হতাশায় কোম্পানি-মার্চেন্ট ব্যাংক

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৬, ২২ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
করোনায় আইপিও ইস্যু বাধাগ্রস্ত, হতাশায় কোম্পানি-মার্চেন্ট ব্যাংক

চলমান করোনা পরিস্থিতিতে বন্ধ পুঁজিবাজার। তাই এই খাত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রমও বন্ধ। ফলে প্রথমিক গণপ্রস্তাব প্রক্রিয়ার (আইপও) ইস্যু ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কাজ থমকে গেছে। এতে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর পাশপাশি লোকসানে পড়ছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা (পাইপলাইন থাকা) কোম্পানিগুলো।

আইপিও অনুমোদনের পরও করোনার কারণে যেসব কোম্পানি পুঁজিবাজার থেকে এখনো টাকা উত্তোলন করেনিম তারা বেশ বিপাকে পড়েছেন। তারা এখন টাকা তুলতে পারছেন না।

এদিকে, ইতোমধ্যে এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স করোনার প্রভাবে তাদের টাকা উত্তোলনের জন্য পূর্বনির্ধারিত তারিখও স্থগিত করেছে।

সূত্র জানায়, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে আইপিও’র মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য ২৫টি কোম্পানির আবেদন রয়েছে। এর মধ্যে ৫টি কোম্পানি এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায় ছিল। স্থির মূল্য পদ্ধতিতে আইপিও’র অনুমোদনের জন্য পাইপলাইনে রয়েছে অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ও বনিতো এক্সেসরিজ ইন্ডাস্ট্রিজ। আর বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে আইপিও’র জন্য বিডিং অনুমোদনের পাইপলাইনে রয়েছে লুব-রেফ বাংলাদেশ ও মীর আখতার হোসেন। এসব কোম্পানির মধ্যে এপ্রিলে অনুমোদনের অপেক্ষায় ছিল—অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন ও লুব-রেফ বাংলাদেশ। বাকি ৩টি মে-জুনের মধ্যে অনুমোদনের কথা রয়েছে। ফলে করোনার প্রভাবে পাইপলাইনে থাকা কোম্পানিগুলোর আইপিও সংক্রান্ত কার্যক্রম পিছিয়ে গেছে।

কোম্পানিগুলো জানায়, আইপিও ইস্যু অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সিআইবি ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়। ইতোমধ্যে পাইপলাইনে থাকা কোম্পানিগুলো সিআইবি ক্লিয়ারেন্স নিয়ে আবেদন করেছে। ওই সিআইবি ক্লিয়ারেন্সের মেয়াদ থাকে ৩মাস। ফলে সাধারণ ছুটির কারণে কোম্পানির পরিচালকদের সিআইবি ক্লিয়ারেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে, তা পুনরায় করার জন্য আবেদন করতে হবে। সিআইবি ক্লিয়ারেন্সের জন্য কোম্পানিটির আইপিও’র অনুমোদর ফের পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে, করেনার প্রভাবে আইপিও’র অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা কোম্পানিগুলোও বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকায় কোম্পানিগুলো মুনাফার ধারাবাহিকতা কিভাবে বজায় রাখবে, তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে। করোনার প্রভাব দীর্ঘদিন থাকলে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি কেমন হবে, সে বিষয়টি বাজার সংশ্লিষ্টদের ভাবিয়ে তুলছে। এতে কোম্পানিগুলোর মুনাফায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে পাইপলাইনে থাকা কোম্পানি লুব-রেফ বাংলাদেশের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) মো. মফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা যে উদ্দেশ্য নিয়ে আইপিওতে আসতে চেয়েছিলাম, তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না।  এখন করোনার কারণে আরও পিছিয়ে যাবে। মূলত আইপিওকেন্দ্রিক যেসব পরিকল্পনা ছিল, তাতে বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটেছে।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাধারণ সম্পাদক  মো. রিয়াদ মতিন বলেন, ‘করোনার কারণে পুঁজিবাজারসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ইস্যু ব্যবস্থাপনার কাজ হচ্ছে না। ইতোমধ্যে আমাদের বেশ কয়েকটি ইস্যু আটকে গেছে। আর সার্বিকভাবে ইস্যু ম্যানেজমেন্টের কাজ বন্ধ থাকায় মার্চেন্ট ব্যাংক এবং আইপিও’র জন্য আবেদন করা কোম্পানিগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’ এতে কোম্পানিগুলোর পরিকল্পনায় বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটছে বলেও তিনি জানান।


ঢাকা/এনটি/নাসিম /এনই

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়