ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

স্বাস্থ্যখাত নিয়ন্ত্রণে রাখতে ‘যত কাণ্ড’ মিঠু সিন্ডিকেটের

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪০, ১৪ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
স্বাস্থ্যখাত নিয়ন্ত্রণে রাখতে ‘যত কাণ্ড’ মিঠু সিন্ডিকেটের

বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) কেনাকাটার সঙ্গে লেক্সিকন মার্চেন্ডাইজ ও টেকনো ট্রেড লিমিটেডের মালিক মো. মোতাজ্জেরুল ইসলাম ওরফে মিঠুর নেতৃত্বাধীন সিন্ডিকেটের কেটের আধিপত‌্য থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।  এই প্রসঙ্গে স্বাস্থ‌্য মন্ত্রণালয়কে লেখা এক চিঠিতে সিএমএসডির পরিচালক জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে বাজেট সংগ্রহ, প্রকিউরমেন্ট প্ল্যান ও পণ্যের তালিকা ঠিক করতো ‘মিঠু সিন্ডিকেট’।

আর এসব কাজে নিয়ন্ত্রণ করতে সিন্ডিকেটটি প্রতি বছর নামে-বেনামে নতুন সরবরাহ কোম্পানি খুলতো বলেও ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।    দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রাথমিক অনুসন্ধানেও ‘মিঠু সিন্ডিকেট’ সম্পর্কে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।  যদিও এই বিষয়ে অনুসন্ধান দলের প্রধান দুদক পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীর কাছে জানতে চাইলে এখনই তিনি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, মিঠু বাহিনীর সরবরাহকারী কোম্পানি‘মেডিকেট ইমেজিং লিমিটেড’-এর পরিচালক হুমায়ুন কবির (পিটু)।   এর আগে তিনি লেক্সিকন নামে মিঠু গ্রুপের আরও একটি কোম্পানিতে উচ্চপদে কর্মরত ছিলেন।

এদিকে, গত ৯ জুলাই দুদকের অনুসন্ধান দলের প্রধানকে লেখা চিঠিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন মিঠু।  আর মাস্ক-পিপিই কেনার কাজে দুর্নীতির অনুসন্ধানে মিঠুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করলেও তিনি উপস্থিত না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে পাঠানো লিখিত বক্তব্য পাঠান।  এতে তিনি বলেন, ‘আমার মালিকানাধীন লেক্সিকন মার্চেন্ডাইজ ও টেকনো ট্রেড লিমিটেড করোনা চিকিৎসায় নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই কোনো দিনই আমদানি অথবা সরবরাহ করেনি। ’ তিনি আরও বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান করার উদ্দেশ্যে কিছু মিডিয়া ও সরকারি অফিসের সাহায‌্যে ‘মিঠু সিন্ডিকেট’ নামে একটি জুজু তৈরি করা হয়েছে।  এতে করোনার সময়ে যারা নিম্নমানের মালামাল সরবরাহ করে অধিক মুনাফা করেছেন, তারা বেঁচে যাচ্ছেন। ’’

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক সচিব দিলোয়ার বখত বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়েই মাস্ক-পিপিই দুর্নীতির সঙ্গে কারা জড়িত, সে বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। জড়িতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।  অনুসন্ধানের সময় সরকারি-বেসরকারি খাতের যার নাম আসবে, তাকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।  মাস্ক দুর্নীতিতে সরকারি কোনো কর্মকর্তা জড়িত আছেন কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, মাস্ক-পিপিই কেনায় দুর্নীতির অনুসন্ধানে এরই মধ্যে মেসার্স জেএমআই হাসপাতাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমাটেডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রাজ্জাক, তমা কনস্ট্রাকশনের সমন্বয়কারী (মেডিক্যাল টিম) মো. মতিউর রহমান ও মেডিটেক ইমেজিং লিমিটেডের পরিচালক মো. হুমায়ুন কবিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক। মো. মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুর মতো অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে হাজির হননি এলান করপোরেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম আমিনও।

এদিকে, একই অভিযোগে সম্প্রতি সিএমএসডির ৪ ডাক্তারসহ ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুদক।  যাদের আগামী ১৯ ও ২০ জুলাই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

উল্লেখ‌্য, সম্প্রতি এন-৯৫ মাস্ক ও পিপিই কেনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন মাধ্যমে অনিয়ম-দুর্নীতির কিছু অভিযোগ আসে দুদকের হটলাইন ১০৬ নম্বরে।  অভিযোগকারীরা জানান, সিএমএসডির ৯০০ কোটি টাকার কেনাকাটায় দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে।  এরপর গত ১০ জুন জরুরি বৈঠকে এসব দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।


এমএরহমান/এনই

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়