ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

যাত্রী সংকটে দূরপাল্লার পরিবহন

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৮, ১৬ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
যাত্রী সংকটে দূরপাল্লার পরিবহন

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল দেশের গণপরিবহন। গত ১ জুন থেকে সরকার সীমিত পরিসরে ৫০ শতাংশ যাত্রী ও ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করে পরিবহন চলাচলের নির্দেশনা দেয়। নির্দেশনা পাওয়ার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিবহন চলাচল করা শুরু করলেও দূরপাল্লার বাসগুলোতে যাত্রী পাওয়া যাচ্ছেনা বলে জানিয়েছে গণপরিবহন খাতের সংশ্লিষ্টরা।

রাজধানীর গাবতলি, সায়েদাবাদ, কলাবাগান, আরামবাগের দূরপাল্লার বাস কাউন্টারে গিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১ জুন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের প্রায় সকল স্থানেই পরিবহন চলাচল শুরু করে। ঢাকা মহানগরীর গণপরিবহনে মোটামুটি যাত্রী পাওয়া গেলেও ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার, বান্দরবন, যশোর, বেনাপোল, বরিশালসহ আর কিছু অঞ্চলের পরিবহনে তেমন যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না।   

এ বিষয়ে ঢাকা-কক্সবাজার রুটের সেন্টমার্টিন পরিবহনের কলাবাগান কাউন্টার ম্যানেজার মোহাম্মদ নাজমুল হোসেন বলেন, মহামারি করোনাভাইরাসের জন্য প্রায় ৬৭ দিন গনপরিবহন বন্ধ ছিল। গত ১ জুন স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ও ৬০ শতাংশ ভাড়া বেশি নিয়ে পরিবহন চলাচল শুরু করলেও আশানুরূপ যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। যেখানে আমাদের পরিবহন ঢাকা থেকে কক্সবাজার, টেকনাফের উদ্দেশে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০টি গাড়ি যেত, সেখানে এখন চলাচল করছে একটি বা দুইটি গাড়ি। সেটাও আবার যাত্রীদের সংখ্যা দেখে ছাড়তে হচ্ছে।

সেন্টমার্টিন পরিবহনের মালিক ও কুমিল্লা জেলা বাস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, গত ১ জুন সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চলাচল করতে আদেশ দেওয়ার পর কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলাম, কিন্তু এখন যাত্রী একেবারেই নেই। হাতেগোনা কয়েকজন যাত্রী হচ্ছে প্রতিদিন। তাই অধিকাংশ কাউন্টার বন্ধ রেখেছি। বাস ও অল্প কিছু চলছে। লস দিয়েত বাস চালানো যাবে না।

রাজধানীর আরামবাগ হানিফ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার মোহাম্মদ মহসিন হোসেন বলেন, স্বাভাবিক দিনে আমাদের ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-টেকনাফ-বান্দরবন এই রুটে প্রায় ৫০টি গাড়ি চলাচল করে। কিন্তু করোনায় যাত্রী নেই। পর্যটন এলাকাগুলোতে এখন কোন পর্যটক যাচ্ছে না। এখন আমাদের প্রতিদিন গড়ে চার/পাঁচটা বাস ছাড়া হচ্ছে।

বরিশালের ঝালকাঠি থেকে ঢাকা এসেছেন এস এম ইমরান। তিনি বলেন, আমি গতকাল রাতের বাসের টিকিট কেটেছিলাম ঢাকা আসার জন্য। রাতে বাস কাউন্টারে গিয়ে শুনি যাত্রী কম থাকায় বাস ছাড়বে না। রাতের যাত্রীদের নাকি সকালের বাসে যেতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে সকালের বাসে ঢাকা আসি।

ঢাকা-বরিশাল রুটের সাকুরা (এসি) পরিবহনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, করোনার কারনে বাসে যাত্রী হচ্ছে না। আগে যেখানে যাত্রীদের টিকিট দিতে পারতাম না আর এখন টিকিট বিক্রি করার জন্য যাত্রী খুঁজে পাচ্ছিনা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব ও এনা পরিবহনের মালিক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, মানুষ এখন অনেক সচেতন হয়ে গেছে। করোনার ঝুঁকি মাথায় নিয়ে এখন আর কেউ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া যাওয়া-আসা করছে না। পর্যটন এলাকায় পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় ঢাকা-কক্সবাজার- চট্টগ্রাম-বান্দরবনসহ দেশের অন্যান্য স্থানে মানুষ যাচ্ছে না। আমার এনা পরিবহন ও এই সকল এলাকায় খুব কম সংখক বাস ছাড়া হচ্ছে যাত্রী না পাওয়ায়

রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনাল ও বাস কাউন্টারে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় প্রতিটি পরিবহনের অধিকাংশ শ্রমিক এখনো বেকার অবস্থায় আছে। পরিবহন কোম্পানি এই সকল শ্রমিকদের পুরোপুরি বেতন দিতে পারছে না। তাই খুব কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তারা।


ঢাকা/হাসিবুল/সাজেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়