ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

রেলের ৫ বছরের প্রকল্প শেষ হতে একযুগ: ব‌্যয় বেড়েছে ৩ গুণ

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৭, ১০ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
রেলের ৫ বছরের প্রকল্প শেষ হতে একযুগ: ব‌্যয় বেড়েছে ৩ গুণ

রেলের ‘সিগন্যালিংসহ টঙ্গী-ভৈরববাজার সেকশনে ডাবল লাইন নির্মাণ’ প্রকল্পটি ৭২৪ কোটি টাকা সম্ভাব‌্য ব‌্যয়ে মেয়াদ ধরা হয়েছিল ৫ বছর।  সেই হিসেবে ২০০৬ সালে অনুমোদিত এই প্রকল্পের কাজ হওয়ার কথা ছিল ২০১১ সালের জুনে।

কিন্তু কয়েক ধাপে সময় বাড়িয়ে কাজ শেষ করার জন‌্য ২০১৮ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।  আর এই একযুগে অর্থ ব‌্যয় ধরা হয় ২ হাজার কোটি টাকারও বেশি। সম্প্রতি এই প্রকল্প নিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ‘বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমডি)’-এর খসড়া প্রতিবেদনে এমন এই চিত্র উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে প্রকল্প বাস্তবায়নের বিভিন্ন দুর্বল দিক তুলে ধরা হয়েছে।  এতে বলা হয়েছে—প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে।   প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানোর পাশাপাশি সময় বাড়ানো হয়েছে ৪ ধাপে।  প্রথম ধাপে ২০০৬ সালের জুলাই থেকে ২০১১ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য ঠিক করা হয়।  পরে প্রথম সংশোধনী এনে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়।  কাজ শেষ না হওয়ায় দ্বিতীয় সংশোধনী আনা হয় ২০১৬ সালের জুনে। পরের দফায় ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।  শেষ পর্যন্ত ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়িয়ে ১২ বছরে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয়।

এতে  তুলে ধরা হয়—মূল প্রকল্পের ব্যয় ছিল মাত্র ৭২৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।  পরবর্তী সময়ে সংশোধনীতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ১৭৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা।  এর বিপরীতে প্রকৃত ব্যয় হয়েছিল ২ হাজার ১৭৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।   

প্রসঙ্গত, প্রকল্পের আওতায় ৮৬ কিলোমিটার ট্র‌্যাক (৬৪ কিমি মেইন ও ২২ কিমি লুপ ও সাইড লাইন), ৭১ সেতু, ১১ স্টেশন ভবন, ২ সিগন্যালিং ইক্যুইমেন্ট ভবন ও ১৩ স্টেশনে কম্পিউটার বেইজড ইন্টারলকিং সিগন্যালিং বসানো হয়েছে।  এর ফলে ডাবল লাইনে উন্নীতকরণের মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-ভৈরব-ময়মনসিংহ—এই ৩ করিডোরের লাইন ক্যাপাসিটি প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে।  আগের লাইন ক্যাপাসিটিতে বর্তমানে এই সেকশনে ২২ আন্তঃনগর, ১৮ মেইল এক্সপ্রেস ও ৬ কন্টেইনার ট্রেনসহ মোট ৪৬টি ট্রেন চলাচল করছে।  ট্রেনের সংকট মিটিয়ে সম্পূর্ণ ক্যাপাসিটি কাজে লাগানো গেলে চলবে ৮৪টি ট্রেন।

প্রকল্পের অতিরিক্ত সময় ও অর্থ ব‌্যয় প্রসঙ্গে আইএমইডি’র পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘প্রকল্পটি সরেজমিন পরিদর্শন করে কিছু দুর্বল দিক খুঁজে পেয়েছি।  রেল লাইনের কিছু কিছু কুশন ব্যালাস্ট (রেলপথের দুই পাশের ঢালু অংশ)  নিচু হয়ে গেছে। ফলে রক্ষণাবেক্ষণ জোরদার করার প্রয়োজন রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এসব ত্রুটির বিষয়ে রেলওয়েকে  প্রতিবেদন দিয়েছি।  এখন তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’

এসব বিষয়ে জানার জন‌্য বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেনকে একাধিকবার ফোন করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।


ঢাকা/হাসিবুল/এনই

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়