শপিংমলে নেই ঈদের আমেজ
আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম
রাজধানীর ইসলামপুরের কাপড়ের দোকানে ঈদের কেনাকাটা
ঈদুল আজহার আর মাত্র দুই দিন বাকি। প্রতিবছর এ সময়ে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় থাকত রাজধানীর শপিংমলগুলোতে। বিক্রেতারা যেন দম ফেলার সময় পেতেন না। তবে এবারের চিত্র উল্টো। শপিংমলগুলোতে নেই ঈদের আমেজ।
করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের আয় কমেছে। কমেছে ক্রয়ক্ষমতা। এর প্রভাব পড়েছে ঈদের কেনাকাটাতেও। যেখানে মানুষের খাবার কিনে খাওয়ার সামর্থ নেই, সেখানে কাপড়সহ অন্যান্য পণ্য কেনার সুযোগ কোথায়। এছাড়া, করোনা সংক্রমণের ভয়ে অনেক মানুষ ভিড় এড়িয়ে চলছেন। এ কারণেও মার্কেট- শপিংমলেও তাদের উপস্থিতি কমেছে।
বুধবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, অলস সময় পার করছেন বিক্রেতারা। ক্রেতাদের উপস্থিতি কম। স্বাভাবিক দিনের মতোই চলছে বেচাকেনা। এতে হতাশ শপিংমলের ব্যবসায়ীরা।
ইসলামপুরের একরামুদ্দিন প্লাজার স্বত্বাধিকারী সোলাইমান বলেন, ‘আমরা পাইকারি দরে কাপড় বিক্রি করি। এবার অনেকটা বেকার বসে আছি। গতকাল সারা দিনে তিনটা অর্ডার পেয়েছি। তাও ছোট কাস্টমার। ইতোমধ্যে কর্মচারীদের বিদায় করেছি। কারণ, ভাড়া ও কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার পর লাভ থাকে না।’
লায়ন টাওয়ারে বুটিক ও কাজ করা সুতি কাপড়ের থ্রি পিস বিক্রি করেন নোহা ফ্যাশনের মালিক নাঈমুল হাসান। তিনি বলেন, ‘আমার দোকানে নিয়মিত চারজন কর্মচারী কাজ করে। তাদের খাবার ও বেতন দিতে হয়। দোকানভাড়া দিতে হয়। অথচ গত রমজানে যে মালামাল দোকানে তুলেছি সেগুলো এখনো পড়ে আছে। বেচতে পারছি না। ক্রয়মূল্যের চেয়ে কম দামে বেচতে হচ্ছে।’
রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় মার্কেটের ভেতরের চেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে ফুটপাতের দোকানগুলোতে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, স্বাভাবিক দিনের মতোই বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগে যে একটা আমেজ থাকে, সেটি এবার নেই। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দোকান খোলা রেখেও পর্যাপ্ত ক্রেতার দেখা মিলছে না।
নূরজাহান মার্কেটে কথা হয় কাপড় বিক্রেতা মো. মামুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘করোনার সংক্রমণের ভয়ে বিত্তবান বা সামর্থ্যবানরা শপিংমলে আসছেন না। তারা অনলাইনেই প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করছেন।’
আজিজ সুপার মার্কেটের মনি ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘কেনাকাটা চলছে আগের মতোই। ঈদের আলাদা আমেজ দেখছি না।’
মিরপুর-১ এর নিউমার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, বিক্রির অপেক্ষায় পোশাক সাজিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। ক্রেতাদের উপস্থিতি খুব কম।
মার্কেটের রঙ্গজয়ী ফ্যাশন হাউজের ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সব বয়সী মানুষের জন্য ড্রেস আছে আমাদের দোকানে। কিন্তু যে পরিমাণ বিক্রি হচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে না, মালিক আমাদের বেতন-বোনাস দিতে পারবে। ক্রেতা না আসলে আমরা অসহায়। কিছুই করার নেই।’
ঢাকা/ইয়ামিন/রফিক
আরো পড়ুন