ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জাপানি বিনিয়োগের সমস্যা দূর করতে কাজ করছে ওয়ার্কিং গ্রুপ

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১২, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ২২:৩১, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
জাপানি বিনিয়োগের সমস্যা দূর করতে কাজ করছে ওয়ার্কিং গ্রুপ

জাপানিদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে সব ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেসব সমাধানে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ কাজ করছে। আগামী অক্টোবরে ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রতিবেদন জমা দেবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

যেসব জাপানি বিনিয়োগকারী চীন থেকে তাদের বিনিয়োগ অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে, তাদের বাংলাদেশে আনার চেষ্টা করছে সরকার। তবে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কর, শুল্ক ও পদ্ধতিগত সমস্যা আছে। দ্রুত এসব জটিলতা দূর করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

চীনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে দেশটিতে জাপানি কোম্পানিগুলোর উৎপাদন এবং সরবরাহের ক্ষেত্রে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তাই জাপান সরকার চীনে বিনিয়োগকারী ৮৭টি কোম্পানিকে করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে দেশে ফেরার অথবা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সুবিধাজনক দেশে বিনিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে।

জাপানি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করার বিষয়ে গত ২৪ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জুম প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশ-জাপান যৌথ অর্থনৈতিক সংলাপে কিছু প্রতিবন্ধকতা উঠে আসে। ওই সংলাপে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি জাপানি বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন বলে এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংলাপে জাপান ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়। জাপানের বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগ উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে কী কী করণীয়, তা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। পরবর্তীতে সেসব বিষয় নিয়ে সরকারে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে আলোচনার কথা উঠে আসে।

বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ নিয়ে সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ফোনালাপের বিষয় তুলে ধরেন জাপানি রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিনিয়োগ বিষয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। এ সময় তিনি জাপানি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেসব বাধা আছে সেগুলো দূর করার আশ্বাস দিয়েছেন।’

জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এসব সমস্যা সমাধান না হলে জাপানি উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন না। বাধাগুলোর মধ্যে ট্যাক্স, শুল্ক ছাড় এবং মুনাফার প্রত্যাবাসন অন্যতম। বর্তমানে বাংলাদেশে যেসব জাপানি বিনিয়োগকারী আছেন, তারা এখনও এসব সমস্যা মোকাবিলা করছেন। খুব শিগগির এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সুনির্দিষ্ট সুপারিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে।’

আগামী অক্টোবরের মধ্যে পর্যালোচনার জন্য বাংলাদেশ পরবর্তী সভার ব্যবস্থা করবে, যেখানে যৌথ সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের অগ্রগতি তুলে ধরা হবে। অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য এই পর্যালোচনা সভার আগে জাপানের বিভিন্ন নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

বৈঠকে জাপানের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহকারী পরিচালক ওন্দেরা ওসামু বলেছেন, ‘গত সাত বছরে বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ দ্বিগুণ হয়েছে। কোভিড-১৯ শুধুমাত্র সমগ্র বিশ্বকেই ভাবিয়ে তোলেনি, দুই দেশের অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি করেছে।’

তিনি বলেন, ‘জাপানি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের বাণিজ্য পরিবেশ, স্বচ্ছতা এবং নির্ভরযোগ্য ব্যবসায়িক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সভায় জাপানের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি বিষয় উত্থাপন করা হয়েছে। অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব‌্য সভায় এ বিষয়গুলোর সমাধানের ক্ষেত্রে কতটা অগ্রগতি হয়েছে, তা পর্যালোচনা করা হবে।’

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এসডিজি-বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, বর্তমান এসডিজি-বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজসহ শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, জ্বালানি বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এমসিসিআই) সভাপতি এবং জাপান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহকারী পরিচালক ওন্দেরা ওসামু উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়