ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

আর্থিক বিবরণীতে ভুল তথ্য দিয়েছে ডিএসই’র ৪২ ব্রোকার

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০৬, ৫ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৭:০৭, ৫ ডিসেম্বর ২০২০
আর্থিক বিবরণীতে ভুল তথ্য দিয়েছে ডিএসই’র ৪২ ব্রোকার

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত ৪২টি ব্রোকারেজ হাউজের (ট্রেকহোল্ডার) বিরুদ্ধে আর্থিক হিসাব বিবরণীতে ভুল ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরীক্ষিত আর্থিক হিসাব বিবরণী পরীক্ষা করে এমন তথ্য পেয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

ভবিষ্যতে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি। অপরদিকে, ব্রোকারেজ হাউজগুলো এ বিষয়ে আরও সতর্কতা অবলম্বন করবে বলে বিএসইসিকে আশ্বাস দিয়েছে।

ব্রোকারেজ হাউজগুলোর বার্ষিক আর্থিক হিসাব বিবরণী পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজে বিএসইসিকে সার্বিক সহযোগিতা করেছে ডিএসই।

২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে ডিএসইর সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউজের সংখ্যা ১৯৩টি। তবে এর মধ্যে বার্ষিক আর্থিক বিবরণী দাখিল করেছে ১৮৬টি ব্রোকার। বাকিরা বার্ষিক প্রতিবেদন দাখিল করেনি। ওই ১৮৬টি ব্রোকারের বার্ষিক প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে বিএসইসি। এর মধ্যে ৪২টি ব্রোকারেজ হাউজের নিরীক্ষিত আর্থিক হিসাব বিবরণীতে অসামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য পেয়েছে বিএসইসি। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে ডিএসইর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

বিএসইসি ও ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, ৪২টি ব্রোকারেজ হাউজের মধ্যে ২৭টি তাদের নিরীক্ষিত আর্থিক হিসাব বিবরণীতে তথ্য প্রকাশে বিভিন্ন ধরনের ভুল করেছে। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিষয়ে বিএসইসির কাছে ক্ষমা চেয়েছে। তারা ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকবে বলে বিএসইসিকে আশ্বস্ত করেছে।

ভুল তথ্য দেওয়া ব্রোকারেজ হাউজগুলো হলো- মোহাম্মদী স্টক মার্কেট, এআর চৌধুরী সিকিউরিটিজ, এবি অ্যান্ড কোম্পানি, ফেডারেল সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ইমতিয়াজ হোসেন সিকিউরিটিজ, মইন আব্দুর রশিদ সিকিউরিটিজ, বানকো সিকিউরিটিজ, শাহজাহান সিকিউরিটিজ, এএসইএনজেড সিকিউরিটিজ, স্কয়ার সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট, আলহাজ্ব সিকিউরিটিজ অ্যান্ড স্টক, জামাল আহমেদ সিকিউরিটিজ, মোরশেদ সিকিউরিটিজ, হারপুন সিকিউরিটিজ, ডিএসএফএম সিকিউরিটিজ, মশিউর সিকিউরিটিজ, এলোকো সিকিউরিটিজ, ফরচুন সিকিউরিটিজ, পিস সিকিউরিটিজ, আনোয়ার সিকিউরিটিজ, টাইমস সিকিউরিটিজ, মার্চেন্ট সিকিউরিটিজ, ডেল্টা ক্যাপিটাল, জাহান সিকিউরিটিজ, কোয়াস্ট টু কোয়াস্ট সিকিউরিটিজ, টোটাল কমিউনিকেশন এবং প্রাইলিংক সিকিউরিটিজ।

এদিকে, ১৫টি ব্রোকারেজ হাউজ তাদের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে অসামঞ্জস্য তথ্য দিয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো বিএসইসিকে ব্যাখ্যা দিয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আরও সতর্ক থাকার জন্য ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।

আর্থিক প্রতিবেদনে অসামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য দেওয়া ব্রোকারেজ হাউজগুলো হলো—শ্যামল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট, একে খান সিকিউরিটিজ, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ, এমএএম সিকিউরিটিজ, শহীদুল্লাহ সিকিউরিটিজ, জে রহমান প্রাইভেট, হাওলাদার ইক্যুইটি সার্ভিসেস, শেলটেক ব্রোকারেজ, কে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড কনসালট‌্যান্ট, মিডওয়ে সিকিউরিটিজ, পার্কওয়ে সিকিউরিটিজ, স্টক অ্যান্ড বন্ড, বিআরবি সিকিউরিটিজ, আকিজ সিকিউরিটিজ এবং এএনডব্লিউ সিকিউরিটিজ।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘বর্তমানে এ বিষয়টি কী অবস্থায় আছে, তা আমার জানা নেই। তবে কমিশন সার্বিক দিক বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’

এদিকে, ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সানাউল হক রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ব্রোকারেজ হাউজগুলোর কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রাখতে তৎপর আছে ডিএসই। হাউজগুলোতে অসামঞ্জস্য পরিলক্ষিত হলেই, সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে ডিএসই।

ঢাকা/এনটি/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়