ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কিনতে ব্যয় ১২৭১ কোটি টাকা

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:০৮, ১৯ জানুয়ারি ২০২১   আপডেট: ১৯:১০, ১৯ জানুয়ারি ২০২১
৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কিনতে ব্যয় ১২৭১ কোটি টাকা

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ‌্যালয় ও অ‌্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত করোনা ভ্যাকসিন (Oxford AstraZeneca Vaccine, SARS-Cov-2 AZD 1222) কেনার প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করতে যাচ্ছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল‌্যাণ মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কিনতে সরকারের ব্যয় হবে ১ হাজার ২৭১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

স্বাস্থ‌্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কেনার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চাহিদার বিপরীতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দপত্রে ভ্যাকসিন কেনার জন্য অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন নেওয়ার শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রস্তাবটি ক্রয় কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে। আগামী বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে এ সভা হবে।

করোনা মহামারির কারণে পুরো পৃথিবী স্থবির এবং বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভ্যাকসিনের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নীতিগত অনুমোদন দেওয়ার পর গত ৫ নভেম্বর স্বাস্থ‌্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই) ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়।

সমঝোতা স্মারকের আলোকে সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি করা ভ্যাকসিন পরিবহন ব্যয়সহ প্রতি ডোজের দাম পাঁচ ইউএস ডলার নির্ধারণ করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের মোট দাম দাঁড়ায় ১৫ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ২৭১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা (প্রতি ডলার=৮৪.৭৭ টাকা হিসাবে)।

পিপিআর-২০০৮ এর তফসিল-২ এর বিধি-৭৬(১) অনুযায়ী, সরাসরি চুক্তির আওতায় জরুরি পরিস্থিতি বা সংকট মোকাবিলায় পণ্য কেনায় মন্ত্রণালয়/বিভাগের ক্ষমতা ৫ কোটি টাকা হওয়ায় ভ‌্যাকসিন কেনার ক্ষেত্রে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট (পিপিএ)-২০০৬ এর ধারা ৬৮ অনুযায়ী অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন নিতে হয়।

সূত্র জানায়, অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের পর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মধ্যে চুক্তি হয়। ওই চুক্তির অনুচ্ছেদ ২.১ অনুযায়ী সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি করা প্রস্তাবিত ভ্যাকসিনের প্রতি ডোজের দাম চার ইউএস ডলার। চুক্তির অনুচ্ছেদ ৮.১ অনুযায়ী সেবামূল্য হিসাবে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিকাল লিমিটেডের অনুকূলে প্রতি ডোজ ভ্যাকসিনের জন্য ১ মার্কিন ডলার হিসাবে প্রতি ডোজ ভ্যাকসিনের দাম দাঁড়ায় পাঁচ ইউএস ডলার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, গত ১০ নভেম্বর ভ্যাকসিন কেনা ও আনুষঙ্গিক উপকরণ ব্যয়সহ মোট ১ হাজার ৫৮৯ কোটি ৪৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকার বরাদ্দ চাওয়া হয়। অর্থ বিভাগ থেকে মোট ১ হাজার ৪৫৫ কোটি ৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে।

সূত্র জানায়, চুক্তির অনুচ্ছেদ ২.৫.১ এবং ২.৫.২ এর শর্ত অনুযায়ী, প্রথম কিস্তিতে অগ্রিম হিসাবে সিরাম ইনস্টিটিউট-কে ৫ জানুয়ারি ৬০ মিলিয়ন ইউএস ডলার (৫০৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা) দেওয়া হয়। দ্বিতীয় কিস্তিতে অগ্রিম হিসাবে ৬০ মিলিয়ন ইউএস ডলার দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছে সিরাম ইনস্টিটিউট। মোট চুক্তিমূল্য ১২০ মিলিয়ন ইউএস ডলার বা ১ হাজার ২৭১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। ডলার কনভারশন রেট অনুযায়ী টাকার পরিমাণ বাড়তে বা কমতে পারে।

সূত্র জানায়, অর্থ বিভাগ কর্তৃক অর্পিত আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশ, ২০২০ এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুল (পিপিআর), ২০০৮ বিধি ৩৬ এর উপ-বিধি (৩) (৩) এর (অ) ও (আ) অনুযায়ী, অনুন্নয়ন বাজেটে ১০০ কোটির বেশি টাকার পণ্য/যন্ত্রপাতি/সরঞ্জাম কেনার প্রস্তাবের ক্ষেত্রে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন প্রয়োজন। প্রস্তাবিত ক্রয়ের চুক্তি মূল্য ১ হাজার ২৭১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা হওয়ায় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে।

ঢাকা/হাসনাত/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়