বাড়ছে করোনায় মৃত্যু-সংক্রমণ, শঙ্কায় বিশেষজ্ঞরা
মেসবাহ য়াযাদ || রাইজিংবিডি.কম
বিশ্বব্যাপী চলছে মহামারি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। দেশেও এই ঢেউ লেগেছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস প্রতিদিন কেড়ে নিচ্ছে প্রাণ। সর্বশেষ ১৪ এপ্রিল ৯৬ এবং ১৫ এপ্রিল ৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১০ হাজার ৮১ জনে। করোনায় মৃত্যু-সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগামী হারকে আশঙ্কাজনক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, স্বাস্থ্যবিধি না মানা, অকারণে বাসা-বাড়ি থেকে বের হওয়া, নিয়মিত ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ না-রাখা, সঠিক সময়ে হাসপাতালে না-যাওয়া নানা কারণে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। একই কারণে বাড়ছে মৃত্যুর হারও।
করোনায় আক্রান্তের হার ঊর্ধ্বগামী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, ‘আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তাই মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে। এবার বেশি আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছেন তরুণ-যুবকরা। তারা আক্রান্ত হলেও তেমন উপসর্গ না থাকাতে পাত্তা দেন না। বাইরে ঘুরে বেড়ান। অন্যদেরও সংক্রমিত করেন। ডাক্তারের সঙ্গে সময়মতো যোগাযোগ করেন না। একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে যখন ডাক্তারের কাছে যান, তখন আর তাকে ডাক্তাররা বাঁচাতে পারেন না।’
নাজমুল হক আরও বলেন, ‘করোনা আমাদের দেশের রোগ নয়, এটা বাইরে থেকে শরীরে বহন করে নিয়ে আসা হয়েছে। তাই অবশ্যই বাইরের সঙ্গে সব ধরনের বিমান যোগাযোগ বন্ধ করতে হবে। সেটা একেবারে বন্ধ করা না গেলে, যারা বাইরে থেকে আসবেন, বাধ্যতামূলক তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হবে। এই ব্যাপারে জিরো টলারেন্সনীতিতে যেতে হবে সরকারকে।’
এ বিষয়ে মিরপুর এম আর খান শিশু হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. ফরহাদ মনজুর বলেন, ‘এবারের করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার সম্ভবত নতুন স্ট্রেইনের কারণে বেশি হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে বডির ইমিউন সিস্টেম কাজ করতে পারছে না। প্রথম ধাপে ভাগ্য আমাদের সহায় ছিল। কিন্তু ভাগ্য সব সময় আমাদের পক্ষে কাজ না-ও করতে পারে।’
ডা. ফরহাদ মনজুর বলেন, ‘সংক্রমণ ঠেকানোর নতুন কোনো পরামর্শ নেই। একটাই পরামর্শ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যাওয়া যাবে না। সংক্রমিত হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।’
ঢাকা মেডিক্যোল কলেজ হাসপাতালের ভাইরোলজির সিনিয়র মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. এস. এম আশেকুর রহমান বলেন, ‘মানুষকে ঘরে থাকতে হবে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া যাবে না। লকডাউনের প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে হবে। বাইরে না বের হলে আক্রান্ত হবেন না। আর আক্রান্ত না হলে মৃত্যুর হারও কমে যাবে।’
র্যাপি অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৩-এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসুও প্রায় একই কথা বললেন। তিনি বলেন, ‘প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বের হওয়া যাবে না। বিশেষ প্রয়োজনে বের হতে হলে মাস্কসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বের হতে হবে। যত বেশি বাসায় থাকা যাবে, তত সংক্রমণ কম হবে।’
/এনই/
আরো পড়ুন