ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

লকডাউনের সময় বাড়ানো নিয়ে যা বললেন বিশেষজ্ঞরা 

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৩, ২৩ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ০৭:৩৬, ২৪ এপ্রিল ২০২১
লকডাউনের সময় বাড়ানো নিয়ে যা বললেন বিশেষজ্ঞরা 

করোনার সংক্রমণ রোধে চলছে লকডাউন। দ্বিতীয় দফায় আরও সাত দিন বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউনের নির্দেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তবে, লকডাউনের সময় বাড়লেও স্বাস্থ‌্যবিধি না মানলে এর উদ্দেশ্য সফল হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, শুধু লকডাউন নয়, পাড়া, মহল্লা, অলি-গলিতে স্বাস্থ‌্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। তাদের মতে, মানুষ মূল সড়কে না এলেও পাড়া-মহল্লায় ঠিকই জটলা পাকাচ্ছে।  তাতে স্বাস্থ‌্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে। তাই সেদিকে জোর দেওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ড. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘সাধারণত এক সপ্তাহের লকডাউন ফলপ্রসূ হয় না। মিনিমাম দুই সপ্তাহ কন্টিনিউ করতে হয়। এর ওপর ভিত্তি করে এর সুফল-কুফল বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। লকডাউন এই বাড়ানো হয়েছে। শুধু এই বাড়ানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ না রেখে সর্বস্তরে যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে তা নিশ্চিত করতে হবে।’

বাংলাদেশ মেডিক‌্যাল অ‌্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল বলেন, ‘লকডাউন বাড়ানোটা যৌক্তিক। আমরা এখনই নয়। এই লকডাউন শেষে এর ফল বুঝতে পারবো। তবে, এ অবস্থায় যেন সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, তা নিশ্চিত করতে জগৎ তৎপরতা চালাতে হবে। বিশ্বাস করুন বাজার, হোটেল রেস্টুরেন্ট, ইফতারের দোকান, অলিগলিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে কি না, সেদিকে জোর দিতে হবে। তাহলে অবশ্যই আমরা এর সুফল পাবো।’

করোনার জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক‌্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মাস্ক পরাটা বাধ‌্যতামূলক করতে হবে।  দূরত্ব মানতে হবে। একটা দোকানের সামনে ১০  ফুট জায়গা আছে, সেখানে দুই জন ক্রেতা যেন থাকেন। দুই জনের কাজ শেষ হয়ে গেলে আরও দুই জন আসবে। এভাবে মানতে পারলে ৯৬ ভাগ প্রটেকশন হবে। এটা করার জন্য সেনাবাহিনী নামিয়ে দিক। আর্মি গাড়িতে করে টহল দিচ্ছে, দেখবেন সবাই মাস্ক পরবে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক বেনজির আহমেদ বলেন, ‘মেয়র, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বসে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। রাস্তাগুলোতে ফাঁকে ফাঁকে বাজার বসবে, একটা দোকান থেকে আরেকটা দোকান ২০ মিটার দূরত্বে বসাবে, জনগণের মধ্যে দূরত্ব বাজায় রাখতে দাগ দিয়ে রাখবে। এগুলো অনেক প্রস্তুতির বিষয় আছে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে জনগণের উদাসীনতা ঠেকাতে নিম্ন আয়ের মানুষের প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে হবে।’

এদিকে, লকডাউনের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট খোলা রাখার দাবি জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। তারা এক আবেদনে বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন। সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেছেন, ‘সোমবার থেকে যেন দোকান ও বিপণিবিতান খুলে দেওয়া হয়, সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছে।’ 

এর আগে গত ৫ এপ্রিল থেকে সারাদেশে শপিং মল, দোকান-পাট, হোটেল-রেস্তোরাঁ, গণপরিবহনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল সরকার। পরে তা শিথিল করে দোকানপাট ও শপিংমল খোলা রাখা এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় সকাল-সন্ধ্যা গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। পরে ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

সর্বশেষ শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে নির্দেশনা জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে ২৫ এপ্রিল থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিদিন  সকাল ১০ টা থেকে বিকেলে ৫টা পর্যন্ত দোকানপাট ও শপিংমল খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

/এনই/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়