ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

কম্পিউটারের সবচেয়ে বড় চিপ উদ্ভাবন

মোখলেছুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:০৮, ২০ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কম্পিউটারের সবচেয়ে বড় চিপ উদ্ভাবন

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক একটি স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠান বিশ্বের সবচেয়ে বড় কম্পিউটার চিপ উন্মোচন করেছে। ‘ওয়েফার স্কেল ইঞ্জিন’ নামের নতুন এই চিপসেটের আকার অ্যাপলের আইপ্যাডের তুলনায় কিছুটা বড়।

প্রসেসরটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠাতা সেরিব্রাস সিস্টেমস জানিয়েছে, এই সিঙেল চিপসেটের মাধ্যমে চালকবিহীন গাড়ি থেকে শুরু করে নজরদারির সফটওয়্যার পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির জটিল কাজগুলো পরিচালনা করা যাবে।

যদিও একজন বিশেষজ্ঞা বলেছেন যে, এই উদ্ভাবনটি বেশিরভাগ ডেটা সেন্টারে স্থাপনের ক্ষেত্রে বাস্তবসম্মত হবে না।

এই উদ্ভাবন কেন গুরুত্বপূর্ণ?

বছরের পর বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, কম্পিউটারের চিপসেটগুলো সাধারণত আরো ক্ষুদ্রাকৃতির ও দ্রুতগতির করা হচ্ছে। একটি সিলিকন ওয়েফার কেটে প্রায় ১০০টি চিপসেট তৈরি করা হয়। বর্তমানে সবচেয়ে শক্তিশালী ডেস্কটপ সিপিইউগুলো (সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট) ৩০টি প্রসেসর কোর সমৃদ্ধ- যার প্রত্যেকটি আলাদাভাবে কাজ করে। জিপিইউগুলোতে (গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট) আরো বেশি কোর থাকে, যদিও তা কম শক্তিশালী।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির কাজে এই প্রথাগত কম্পিউটার চিপসেটের বিকল্প সমাধান দেবে বড় আকৃতির নতুন চিপসেটটি। এর প্রতিটি কোরে কাজগুলো বিভক্ত হয়ে একত্রে পরিচালিত হয় এবং কোরগুলো স্বতন্ত্র কাজ করে। বর্তমানে যেখানে সবচেয়ে শক্তিশালী চিপসেটের জিপিইউতে ৫ হাজার কোর থাকে সেখানে সেরিব্রাসের নতুন চিপসেটটিতে ৪ লাখ কোর রয়েছে- প্রতিটি কোর একে অপরের সঙ্গে উচ্চ ব্যান্ডউইথ কানেকশনে যুক্ত।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এর ফলে অন্যান্য চিপসেটগুলোর তুলনায় এটি কম ল্যাগিং এবং কম বিদ্যুৎ ব্যয়ে জটিল মেশিন লার্নিং ল্যাঙ্গুয়েজ পরিচালনায় বেশি সুবিধা দেবে।

সেরিব্রাস দাবি করেছে, ওয়েফার স্কেল ইঞ্জিন চিপসেটটি কিছু জটিল ডেটা প্রক্রিয়া কয়েক মাসের পরিবর্তে কয়েক মিনিটে সম্পন্ন করতে পারে! প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী অ্যান্ড্রু ফিল্ডম্যান বলেন, ‘এর মাধ্যমে বহু বছরের পুরোনো প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠা যাবে।’ যা ক্ষুদ্র আকৃতির চিপসেটের কারণে করা যাচ্ছিল না। তিনি আরো যোগ করেন, ‘ডেটা প্রক্রিয়ায় সময় কমানো- প্রযুক্তি শিল্পের অগ্রগতির একটি বড় বাধা দূর করবে।’

প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে তাদের অল্প কিছু গ্রাহককের কাছে সরবরাহ শুরু করেছে। তবে চিপসেটটির দাম সম্পর্কে এখনো কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি।

এই চিপসেটে অসুবিধা কী?

চিপসেটটি তথ্য প্রক্রিয়া দ্রুতগতিতে করতে পারলেও, নিউজ পোর্টাল আনন্দটেক-এর সিনিয়র এডিটর ড. ইয়ান কাট্রেস বলেন, প্রযুক্তির এই অগ্রগতিটি ব্যবহারে বেশ ব্যয় করতে হতে পারে। তিনি ব্যাখা করে বলেন, ছোট আকৃতির কম্পিউটার চিপসেটগুলোর অন্যতম সুবিধা হলো কম বিদ্যুৎ খরচ হয় এবং সহজে শীতল রাখা যায়।

তিনি বলেন, ‘এ ধরনের বিশাল চিপসেট ব্যবহার করতে গেলে কোম্পানিগুলোর বিশেষ অবকাঠামো তৈরির প্রয়োজন হবে, যা বাস্তবিক অর্থে এর ব্যবহার কমাতে পারে।’

তার মতে, এ কারণেই হয়তো চিপসেটটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ক্ষেত্রে উপযুক্ত কারণ বর্তমানে এ খাতে লাখ লাখ ডলার বিনিয়োগ চলছে।

তথ্যসূত্র : বিবিসি

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ আগস্ট ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়