৩৬ বছর পর কথা বললেন তিনি
প্রযুক্তির ছোঁয়ায় প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে আমাদের প্রতিদিনের জীবন। কিন্তু এবার প্রযুক্তি একটু ভিন্ন ভাবেই বদলে দিল পাউলিন ওয়ারাল নামের যুক্তরাজ্যের একজন নারীর জীবন। প্রযুক্তির মাধ্যমে ৩৬ বছর পর জীবনে প্রথমবারের মতো পরিবারের সাথে কথা বললেন তিনি।
পাউলিন ওয়ারাল, যিনি মাত্র ২ বছর বয়স থেকেই ‘রেট সিনড্রোম’ নামক এক দুর্লভ নিউরোলজিক্যাল রোগে আক্রান্ত। এই রোগের সংক্রমণে সম্পূর্ণভাবে অচল হয়ে যেতে হয় তাকে। ২ বছর বয়স থেকে কথা বলাও বন্ধ হয়ে যায় তার। যার কারণে হুইল চেয়ারই হয়ে ওঠে তার প্রতিদিনের একমাত্র সঙ্গী। মুখের অভিব্যক্তি ছাড়া আর কিছুই তার পক্ষে করা সম্ভব হয়ে উঠে না।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের টবি ডায়নাভক্সের ‘অগমেন্টেটিভ অ্যান্ড অল্টারনেটিভ কমিউনিকেশন’ নামক বিশেষ কম্পিউটার প্রযুক্তি হঠাৎ করেই আশার আলো দেখাল তার জীবনে। এই কম্পিউটারটি কেনার জন্য পাউলিন ওয়ারালের পরিবারকে গুনতে হয়েছে ৯ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড। এই কম্পিউটার প্রযুক্তি চোখের ইশারাকে কথায় রূপান্তর করতে পারে। এটি পাউলিন ওয়ারালের চোখের নড়াচড়া অনুসরণ করে তা কথায় রুপান্তর করে। এর কল্যাণেই ৩৬ বছরের জীবনে এই প্রথমবারের মতো পরিবারের সবার সাথে কথা বলতে পারছেন পাউলিন। আবেগী এই মুহূর্ত আরো আবেগী হয়ে ওঠে যখন প্রথম কথাতেই তার মাকে বললেন, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’।
তার মা জানান, এই কথাটি শোনার পর মনে হয়েছিল আমি এখন পৃথিবীর সবচেয়ে আনন্দময় মুহুর্তটি উপভোগ করছি। তিনি আরো জানান যে, স্বাভাবিক একটি মেয়ে হঠাৎ করে জীবনে এভাবে অচল হয়ে সবার থেকে পিছিয়ে পড়বে এটি মেনে নেয়া অনেক কষ্টের। পাউলিন তবুও হাসিমুখে এই জীবনকে মেনে নেয়েছে।
ছোট্ট এই কম্পিউটারটি হুইল চেয়ারের সাথে নিয়েই চলাচল করা সম্ভব। তাই তার এখন কেমন লাগছে বা সে এই মুহূর্তে ঠিক কি করতে চাচ্ছে, এমন সব অনুভূতি চোখের ইশারায় এই ডিভাইসের কল্যাণে পরিবারের কাছে এখন বলতে পারছেন পাউলিন।
ঢাকা/ফিরোজ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন