ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বাংলাদেশে বন্যার পূর্বাভাস দেবে গুগল

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২৭, ১৪ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৯:৫৬, ১৪ ডিসেম্বর ২০২০

মানুষকে বন্যার পূর্বাভাস সম্পর্কিত তথ্য জানাতে ও তাদেরকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে- এমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি নিয়ে বিভিন্ন দেশের সরকারের সঙ্গে কাজ করছে গুগলের ফ্লাড ফোরকাস্টিং ইনিশিয়েটিভ। তারই ধারাবাহিকতায় এবার বাংলাদেশে ফ্লাড ফোরকাস্টিং ইনিশিয়েটিভ চালু করতে যাচ্ছে গুগল। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বিডব্লিউডিবি) এবং অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের অংশীদার হয়েছে গুগল। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবছরই বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়।

বর্তমানে বাংলাদেশের ৪ কোটি মানুষ গুগলের কাছ থেকে বন্যার পূর্বাভাস পেয়ে থাকেন, তবে সারা দেশের মানুষ যাতে বন্যার পূর্বাভাস পায় সে লক্ষ্যে কাজ করছে গুগল। এখন পর্যন্ত, সারা দেশের বন্যা কবলিত মানুষের কাছে প্রায় ১০ লাখ নোটিফিকেশন পাঠিয়েছে গুগল।

এ নিয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ‘চলতি বছর, দেশের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি অঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে এবং এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাংলাদেশের পঞ্চাশ লাখের অধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমতাবস্থায়, বন্যা পরিস্থিতিতে মানুষকে আগাম সতর্কতা দেয়ার মাধ্যমে সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে ফ্লাড ফোরকাস্টিং ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। বিশেষ করে, বন্যাকালীন সময়ে চ্যালেঞ্জ উত্তরণে বিডব্লিউডিবি-এটুআই-গুগলের যৌথ ফ্লাড ফোরকাস্টিং ইনিশিয়েটিভ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে যমুনা-পদ্মা নদী সংলগ্ন ১৪টি জেলায় ইনানডেশন মডেলিং সিস্টেম চালু করেছে। এখন পর্যন্ত আমাদের পার্টনারশিপ যেভাবে দেশের মানুষকে সাহায্য করছে তাতে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আগামী দিনগুলোতে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি থেকে মানুষকে রক্ষা করতে গুগলের সঙ্গে এ অংশীদারিত্ব ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।’

সরকারের এটুআই প্রোগ্রামের নীতিমালা উপদেষ্টা আনীর চৌধুরী বলেন, ‘প্রাথমিক ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের মতো বন্যাপ্রবণ দেশে বন্যার পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে এই সিস্টেমটির সম্ভাবনা দেখে আমরা বেশ আশাবাদী। বাংলাদেশ সরকারের ফ্ল্যাগশিপ ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন প্রোগ্রাম হিসেবে এটুআই প্রত্যন্ত এলাকায় এই সিস্টেমটি পৌঁছে দিতে গুগল এবং বিডব্লিউডিবি’র সঙ্গে আরো বিস্তৃত পরিসরে কাজ করার পরিকল্পনা করছে।’

অ্যালার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে গুগল ইতিবাচক অগ্রগতি অর্জন করেছে। টেক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানটি এক বিবৃতিতে বলেছে, বন্যা কবলিত অঞ্চলের মানুষজনকে রক্ষায় প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল সরঞ্জামগুলোর বিকাশ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং উন্নতিসাধনে অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করে যাবে ‍গুগল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে বন্যার বেশ কয়েকদিন আগেই মানুষজনের কাছে সতর্ক নোটিফিকেশন পাঠানো হবে।

বন্যাকবলিত অঞ্চলের যেকোনো ব্যবহারকারী যার অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে লোকেশন সার্ভিস চালু রয়েছে, তার কাছে এই সতর্ক বার্তাগুলো পৌঁছে যাবে। এই সতর্কতাগুলো সময়োপযোগী, আপডেটেড এবং গুরুত্বপূর্ণ  তথ্য সরবরাহ করে, যা ব্যবহারকারীদের তাদের পরিবার-পরিজনদের সুরক্ষা সম্পর্কে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। 

এছাড়া নির্দিষ্ট বন্যাক্রান্ত অঞ্চলের পরিস্থিতি জানা যাবে গুগল সার্চের মাধ্যমে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন সম্ভাব্য এলাকার কালার-কোডেড রিস্ক ম্যাপ দেখাবে গুগল ম্যাপস। ব্যবহারকারীরা প্রয়োজনীয় তথ্যের ভিজ্যুয়াল ইনফরমেশনের ওভারভিউ দেখতে পাবেন। যার মধ্যে থাকবে নির্দিষ্ট স্থানে পরের দিন পানির স্তর বৃদ্ধি বা পতনের বিবরণ। এক্ষেত্রে, গুগল প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা বা করণীয় দেখানোর চেষ্টা করবে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়