ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

প্রথমবারের মতো অন্তঃসত্ত্বা নারীর মমি আবিষ্কার

প্রকাশিত: ১৭:০৯, ২ মে ২০২১   আপডেট: ১৭:১৩, ২ মে ২০২১
প্রথমবারের মতো অন্তঃসত্ত্বা নারীর মমি আবিষ্কার

২০০০ বছর পুরোনো একটি মমিকে এতদিন পুরুষ যাজকের মৃতদেহ বলে ভেবে এসেছিলেন বিজ্ঞানীরা। এবার ভাঙল সেই ধারণা। কফিনের মধ্যে শুয়ে থাকা মমিটি আসলে পুরুষের নয়, একটি নারীর! এবং আশ্চর্যের বিষয় তিনি অন্তঃসত্ত্বা। ইতিহাসে এই প্রথমবার বিজ্ঞানীরা সন্ধান পেলেন এমন মমির।

প্রায় ২০০ বছর আগে ওই মমি মিশর থেকে আনা হয়েছিল পোল্যান্ডের ওয়ারস শহরে। সেখানেই সংরক্ষণ করা হয়েছিল সেটি। কফিনের মধ্যে থেকে পাওয়া গিয়েছিল বেশ কিছু সামগ্রী এবং একটি প্রাচীন শিলালিপি। যা দেখে বিজ্ঞানীরা ধরে নিয়েছিলেন মমিটি একজন যাজকের। 

সায়েন্স অ্যালার্টের খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ওয়ারস মমি প্রকল্পের গবেষণার জন্য ওয়ারস জাদুঘরে সংরক্ষিত মমিগুলো নিয়ে নতুন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করা হয়। এসময় এই মমিটির এক্স-রে স্ক্যান করতেই চমকে ওঠেন বিজ্ঞানীরা। নজরে আসে, মমিটির গর্ভে রয়েছে ছোট্ট ছোট্ট হাত-পায়ের অস্তিত্ব। ফলে আর বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে, মমিটি আসলে একটি অন্তঃসত্ত্বা নারীর। গর্ভস্থ ভ্রুণ পরিণত হওয়ার আগেই মৃত্যু হয়েছিল ওই নারীর।

ওয়ারশ মমি প্রকল্পে কাজ করা বিজ্ঞানীদের প্রাথমিক ধারণা, ওই নারীর বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং তিনি ২৬ থেকে ৩০ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। স্ক্যানিং-এ ধরা পড়েছে তাঁর কাঁধ পর্যন্ত লম্বা কোঁকড়ানো চুল ছিল। তবে এখনও পর্যন্ত মমিটির কাপড়ের আবরণ খুলে পরীক্ষা করেননি গবেষকরা।

বিজ্ঞানীদের যে বিষয়টি অবাক করেছে তা হলো, মমিফিকেশনের সময় মৃতদেহের ভেতর থেকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বের করে আনা হয়ে থাকে। সুতরাং এক্ষেত্রেও মমির গর্ভ থেকে জরায়ু বের করে আনারই কথা ছিল। কিন্তু তেমনটা করা হয়নি। বরং গর্ভজাত সন্তানকেও মমি করে দেওয়া হয়েছে নারীর সঙ্গে। এই রহস্যের সমাধান এখনও খুঁজে পাননি গবেষকরা।

পোলিশ একাডেমি অব সায়েন্সেসের প্রধান গবেষক ওয়াজসিচ এজসমন্ড বলেন, ‘কেন মমি করার সময় মৃত নারীর পেট থেকে ভ্রূণটি বের করা হয়নি, এটি আমরা এখনো জানি না। এই মমিটি সত্যই অনন্য। আমরা এর আগে এমন ঘটনা দেখিনি। হতে পারে, এই নারীই পৃথিবীতে একমাত্র, যিনি অনাগত সন্তানের সঙ্গেই মমি হয়ে আছেন।’

বিজ্ঞানীদের অনুমান, হয়তো মমি করার সময় অনাগত সন্তানের কথা গোপন করা হয়েছিল কিংবা সম্ভবত পুনর্জন্ম সম্পর্কিত কোনো ধারণা থেকেই এমনটা করেছিলেন প্রাচীন মিশরীয়রা।

অদ্ভুত এই আবিষ্কার প্রকাশিত হয়েছে জার্নাল অব আর্কিওলজিকাল সায়েন্স-এ।। আগামীতে বিস্তারিত গবেষণা আরও অজানা তথ্য সামনে আনবে পৃথিবীর একমাত্র অন্তঃসত্ত্বা মমির- সে ব্যাপারে আশাবাদী বিজ্ঞানী দল।

ঢাকা/ফিরোজ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়