ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

চীনা রকেট সত্যিই কি ধেয়ে আসছে পৃথিবীর দিকে?

প্রকাশিত: ১৬:২৩, ৮ মে ২০২১   আপডেট: ২০:১৯, ৮ মে ২০২১
চীনা রকেট সত্যিই কি ধেয়ে আসছে পৃথিবীর দিকে?

বিশাল একটি চীনা রকেটের মূল অংশ মহাকাশ থেকে বেরিয়ে এ সপ্তাহে পৃথিবীতে প্রবেশ করবে। রকেটটির নাম ‘লং মার্চ ৫বি’ এবং এটির ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে চীন। ফলে রকেটটি অনিয়ন্ত্রিতভাবে পৃথিবীতে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।

কিন্তু তাই বলে এটি মানুষজনের ওপর এসে আছড়ে পড়বে, এমন আশঙ্কা নেই। মহাকাশ বর্জ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো বলা যায় কিছুই নেই। 

গত ২৯ এপ্রিল পৃথিবীর কক্ষপথে নতুন চীনা স্পেস স্টেশনের প্রথম মডিউল চালু করার জন্য লং মার্চ ৫বি উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। রকেটটি সফলভাবে স্পেস স্টেশনের মডিউলকে কক্ষপথে স্থাপন করতে পারলেও পরে সেটি অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে। এরপর থেকে এটি কক্ষপথে ঘুরপাক খেতে খেতে ক্রমশ নিচের দিকে নেমে পৃথিবীর দিকে আসছে।

সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, রকেটটির ধ্বংসাবশেষ আজ শনিবার রাতে অথবা রোববার পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে। ফলে অনেকের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে। 

হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের জ্যোতির্বিজ্ঞানী জোনাথন ম্যাকডোয়েলের মতে, রকেটটি কোনো ব্যক্তি বা ভবনে আঘাত হানার ঝুঁকি বলা যায় ‘কয়েক বিলিয়ন শতাংশের মধ্যে এক শতাংশ। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, রকেটের অনিয়ন্ত্রিত অবশিষ্টাংশের গতিপথের দিকে নজর রাখছে দেশটি। ২৩ টন (২১ মেট্রিক টন) ওজনের এই রকেটের ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীর কোনো জনবসতি অঞ্চলে পড়ার ঝুঁকি কম। 

চীনা রকেট নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পৃথিবীতে পুনঃপ্রবেশ করার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। গত বছর একই ধরনের বিশাল আকৃতির আরেকটি রকেটের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল চীন। সেবার পশ্চিম আফ্রিকার আইভরি কোস্টের গ্রামে রকেটটির ধ্বংসাবশেষ পড়ে। যার মধ্যে ১০ মিটার বা ৩০ ফুট দীর্ঘ ধাতব পাইপও ছিল। তবে ওই ঘটনায় কেউ আহত হয়নি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রকেট বর্জ্যর আকৃতির সাধারণত রকেটের আকারের ওপর নির্ভর করে। পৃথিবীর ঘন বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় ‘লং মার্চ ৫বি’ রকেটের ধ্বংসাবশেষের বেশিরভাগ আগুনে পুড়ে যাবে। তবে উচ্চ গলনাঙ্ক এবং অন্যান্য প্রতিরোধী উপকরণের ধাতবঅংশগুলো টিকে থাকার যেহেতু সম্ভাবনা রয়েছে, তাই সেগুলো পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে। ‘লং মার্চ ৫বি’ রকেট বেশ বড় হওয়ায় ধ্বংসাবশেষও সম্ভবত বড় হতে পারে। কিন্তু তা জনবসতিপূর্ণ কোনো এলাকায় পড়ার আশঙ্কা খুবই কম। 

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পিপলস ডেইলি’র ট্যাবলয়েড গ্লোবাল টাইমস এক প্রতিবেদনে মহাকাশ বিশেষজ্ঞ সং ঝংপিংয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, ‘পরিস্থিতি মোটেই আতঙ্কিত হওয়া মতো নয়। এর বেশিরভাগ অংশই পৃথিবীতে পুনঃপ্রবেশের সময়ই পুড়ে যাবে, খুবই ক্ষুদ্র একটি অংশ সমুদ্রে পড়তে পারে।’

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়