ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

অগোছালো বাংলাদেশকে লজ্জায় ডোবাল পাকিস্তান

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৩, ২৫ জানুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অগোছালো বাংলাদেশকে লজ্জায় ডোবাল পাকিস্তান

‘এক সপ্তাহে গিয়ে তিন টি-টোয়েন্টি খেলে আসব…’- পাকিস্তানের নিরাপত্তা ইস্যুতে বিসিবি সভাপতির এমন কথায় দেশটিতে সফরের মনোভাব স্পষ্ট ছিল!

পাকিস্তানে টি-টোয়েন্টি খেলাটাই জরুরি। সোজা বাংলায় অংশগ্রহণ করা জরুরি! মাঠের পারফরম্যান্স কী হবে, তা নিয়ে কোনো ভাবনাই ছিল না! যদি ভাবনা থাকত, তাহলে হতো দৃঢ় পরিকল্পনা। মাঠের ক্রিকেটে পড়ত সেই ছাপ।

কিন্তু পাকিস্তানে পরপর দুদিন যে ক্রিকেট খেলল বাংলাদেশ, তাতে বোঝাই যাচ্ছে, পাকিস্তান সফর শুধুমাত্র অংশগ্রহণ করার জন্যই করা! লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা যে ক্রিকেট খেলেছে, তাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, লড়াকু, দৃঢ়চেতা- শব্দগুলো হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য বিরল কিছু।

মাঠ, উইকেট, প্রতিপক্ষ; সবই এক। বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্সও এক। বরং প্রথম টি-টোয়েন্টির থেকে হতশ্রী। গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আবারও টস জয় মাহমুদউল্লাহর। আবারও ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত। আগের দিন ১৪১ করলেও এবার করতে পারল ১৩৬, যা লাহোরে আগে ব্যাট করে সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ। দলীয় পুঁজি যেমন কমেছে, তেমন বেড়েছে ডট বলের সংখ্যা। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ডট বল ৪৫, দ্বিতীয়টায় ৪৭।

১২০ বলের ইনিংসে অর্ধেকের থেকে মাত্র ৭ বল কম খেলেছেন তামিম ইকবাল। রান করেছেন দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি। কিন্তু তার ৫৩ বলে ৬৫ রানের ইনিংস কতটুকু সময়োপযোগী, তা ভাববার সময় এসেছে। স্কোয়াডে ছয় ওপেনার। তামিমের সঙ্গী হয়ে আজও নেমেছিলেন নাঈম শেখ

বাঁহাতি ব্যাটসম্যান রানের খাতা খোলার আগে আউট হলে নামানো হয় একাদশে ফেরা মেহেদী হাসানকে! লিটন দাস, সৌম্য সরকার, আফিফ হোসেন কেন একাদশে, সেই উত্তর জানা নেই কারও। আবার মধ্যভাগে ব্যাটিংয়ের তেমন অভিজ্ঞতা নেই এদের কারও। সেখানে মোহাম্মদ মিথুন প্রথম ম্যাচে পর্যাপ্ত ব্যাটিংয়ের সুযোগ না পেয়েও কেন দলের বাইরে? এমন জোড়াতালির ব্যাটিং অর্ডার দিয়ে প্রত্যাশা কতটুকু করা যায়?

তামিমের ধীরগতির ব্যাটিংয়ের পর সবার চোখ ছিল মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে। কিন্তু পাকিস্তানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাহমুদউল্লাহও দলের দাবি মেটাতে পারেননি। পারেননি ঝড় তুলতে। ১২ বলে ১২ করে যখন বিদায় নেন অধিনায়ক, তখন বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডের করুণ দশা। তামিমের ৬৫ রানের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান করেন আফিফ। ব্যাটিংয়ের ভুল পরিকল্পনায় সংগ্রহ বড় হয়নি।

বোলাররা লড়াইয়ের পুঁজি পাননি ঠিকই, কিন্তু নুন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বিতা কি আশা করা যায় না? একেবারে নির্বিষ বোলিং। কোনো ধার নেই। কোনো বৈচিত্র্য নেই। নেই ভালো করার তাড়না, ভুল শোধরানোর চেষ্টা। একেবারে অসহায় আত্মসমর্পণ।

দলের স্ট্রাইক বোলার হিসেবে বিবেচনা করা হয় যাকে, সেই মুস্তাফিজুর রহমান ৩ ওভার বোলিং করে দিয়েছেন ২৯ রান। প্রথম ম্যাচে ৪ ওভারে দিয়েছিলেন ৪০। শফিউল ইসলাম শুরুতেই পেয়েছিলেন এহসান আলীর উইকেট। কিন্তু প্রথম ওভারের পর ডানহাতি পেসারও বিবর্ণ। ৩ ওভারে দিয়েছেন ২৭ রান।

আল-আমিন আগের দিনের মতো আজও একটু হিসেবী। ৩ ওভারে দিয়েছেন ১৭ রান। বাকিরা গড়পড়তার নিচে। আগের দিন তাও একটু ক্যাচের সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন, আজ তেমন কিছুই হলো না। এমন ছন্নছড়া বোলিংয়ের বিপক্ষে দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান বাবর আজম ও মোহাম্মদ হাফিজ দ্যুতি ছড়িয়ে যান। রান তোলেন অনায়াসে। দুজনই পেয়েছেন ফিফটির স্বাদ। তাদের ব্যাটে তৃতীয়বারের মতো পাকিস্তান পেল ৯ উইকেটে জয়ের স্বাদ।

দুই টি-টোয়েন্টির পারফরম্যান্সে স্পষ্ট, এ ফরম্যাটে বাংলাদেশ এগোচ্ছে হ-য-ব-র-ল ভাবে। অথচ সামনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ! তার আগে সোমবার হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারবে তো বাংলাদেশ?

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৬/৬

পাকিস্তান: ১৬.৪ ওভারে ১৩৭/১

ফল: পাকিস্তান ৯ উইকেটে জয়ী

সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে পাকিস্তানে ২-১-এ এগিয়ে

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: বাবর আজম।

 

ঢাকা/ইয়াসিন/পরাগ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়