ড্রয়ে হৃদয় ভাঙল ওয়ালটনের
রোমাঞ্চ ছড়ানো এক লড়াই। যেখানে ব্যাট-বলের উত্তেজনা থাকল শেষ পর্যন্ত!
শেষ বল পর্যন্ত অপেক্ষা। শেষ মিনিট পর্যন্ত জয়ের ক্ষুধা। সময় ফুরিয়ে যায়। ওভার ফুরিয়ে যায়। তবুও হার মানে না ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন। উত্তেজনা, রোমাঞ্চ আর শিহরণের দারুণ এক সমন্বয় হয়ে রইল ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন ও বিসিবি সাউথ জোনের লড়াই।
কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে শেষমেশ হৃদয় ভাঙে ওয়ালটনের। ম্যাচ ড্রয়ে বিসিএলের ফাইনালে ওঠা হয়নি তাদের। অন্যদিকে ড্র করেও বিসিবি সাউথ জোন বিসিএলের অষ্টম আসরের ফাইনালে।
ফাইনালের টিকিট পেতে শেষ দিনে ৬ উইকেটের খোঁজে ছিল ওয়ালটন। পুরোদিন ৯২ ওভার বোলিং করে দলটি। কিন্তু ৫ উইকেটে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদের। দিনের নির্ধারিত সময়ের থেকে ২ ওভার বেশি খেলা হয়েছিল। তাতেও কাজের কাজ হয়নি। শেষ বিকেলে ১ উইকেটের আক্ষেপে পোড়ে বিসিএলের দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা।
সাউথ জোনের আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যানই ভুগিয়েছে ওয়ালটনকে। নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা নাসুম আহমেদ পুরোদস্তর হয়ে উঠলেন ব্যাটসম্যান। পঞ্চম উইকেটে দারুণ সঙ্গ দেন শামসুর রহমান শুভকে।
দুজনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় প্রথম সেশনে কোনো উইকেট হারায়নি সাউথ জোন। এ সময়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন শুভ। আর নাসুম একের পর এক বল মোকাবেলা করেছেন দারুণ দক্ষতায়। অবশ্য ওয়ালটনের বোলারদের বোলিংয়েও আহামরি ধার ছিল না।
মধ্যাহ্ন বিরতির পর মিরাজের হাত ধরে আসে প্রথম সাফল্য। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে টানা বোলিংয়ে সাফল্য পান এ স্পিনার। শুভ এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন ১৩৩ রানে। আরেক স্পিনার শুভাগত হোম বেশিক্ষণ টিকতে দেয়নি কাজী নুরুল হাসান সোহানকে।
চা-বিরতির আগে ২ উইকেট তুলে চাঙ্গা হয়ে উঠে ওয়ালটন শিবির। বিরতির পরপরই মিরাজের শিকার হন মাহেদী হাসান। দ্রুত ৩ উইকেট নিয়ে ওয়ালটন জয়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছিল ভালোভাবেই। কিন্তু পরের এক ঘন্টায় তাদের হতাশায় ডোবান নাসুম ও ফরহাদ রেজা।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির পথে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান নাসুম। তাকে সঙ্গ দেন ফরহাদ রেজা। দুজনের প্রায় ২০ ওভারের জুটি দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু সেঞ্চুরি থেকে ১৫ রান দূরে থাকতে পথ হারান নাসুম। বড় শট খেলতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ দেন ইরফান হোসেনের হাতে, সানীর বলে। শুভাগত পুরোনো বলে হাত ঘুরিয়ে দ্রুত ফেরান রাজ্জাককে।
জয়ের থেকে ওয়ালটন মাত্র ১ উইকেট দূরে। উইকেটে শফিউল ও ফরহাদ। মনে হচ্ছিল হাতের মুঠোয় থাকা জয় মিলবে সহজে। কিন্তু তাদের ৫৮ বলের প্রতিরোধে হৃদয় ভাঙে ওয়ালটনের।
শফিউল ২৬ বলে ১ ও ফরহাদ ৯১ বলে ২৭ রান করেন। নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা নাসুম ২৪৬ বলে, ৩৪২ মিনিট ক্রিজে থেকে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ক্যারিয়ার সেরা ৮৫ রানের ইনিংসটি সাজান। তার দৃঢ়তায় শেষ হাসি হাসতে পারেনি ওয়ালটন। ম্যাচসেরার পুরস্কারও উঠে তার হাতে।
এদিকে কক্সবাজারে আরেক মাঠে জয় পাওয়ায় ইসলামী ব্যাংক উঠেছে ফাইনালে। সিঙ্গেল লিগ পদ্ধতিতে লিগ হওয়ায় পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুই দল খেলবে ফাইনালে।
শিরোপা প্রত্যাশী ওয়ালটন প্রথম ম্যাচে হোঁচট খাওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায়। শেষ রাউন্ডেও জয়ের পথে ছিল তারা। কিন্তু শেষটা রাঙাতে না পারায় জয় বঞ্চিত হয় ওয়ালটন।
ঢাকা/ইয়াসিন/কামরুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন