ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

হৃদয় ভাঙার আট বছর...

ক্রীড়া ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৬, ২২ মার্চ ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
হৃদয় ভাঙার আট বছর...

‘ক্রিকেটবিশ্ব সাবধান, বাঘ আসছে।’- ২০১২ সালের এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে ২, মাত্র দুই রানের দূরত্বে টাইগারদের হারের পর এমন মন্তব্য করেন ক্যারিবীয় কিংবদন্তি ব্রায়ান চার্লস লারা।

আট বছর আগের এ দিনে কান্নাকে সঙ্গী করে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। অগণিত দর্শক, দেশের রাষ্ট্রপ্রধান সবাইকে সাক্ষী রেখে জানান দেয়, আমরা আর মিনোস নই। চোখে চোখ রেখে লড়তে শিখে গেছি।

২২ মার্চ ২০১২, এশিয়া কাপের ১১তম আসরের ফাইনালে মুখোমুখি বাংলাদেশ-পাকিস্তান। মিরপুরের সে ফাইনাল ছিল বড় কোনো টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের প্রথম শিরোপা লড়াইয়ের যুদ্ধ। টসে জিতে টাইগার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান।

শুরুতে টাইগার বোলাররা চাপে রাখে পাকিস্তানিদের। ২১ ওভারে ৭০ রানের মধ্যে পাকিস্তানিদের ৪ উইকেট তুলে নেয় তারা। মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের মাঝারি ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৩৬/৯ সংগ্রহ করে পাকিস্তান। বাংলাদেশের পক্ষে মাশরাফি, সাকিব ও রাজ্জাক ২টি করে উইকেট শিকার করেন।

২৩৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দলকে ভালো শুরু এনে দেন ওপেনিংয়ে নামা তামিম ও নাজিমুদ্দিন। ১৬ ওভারে ৬৮ রানের জুটি গড়েন তারা। এরপরে কিছুটা ছন্দপতন। ৬৮ রানেই ২ উইকেট হারায় টাইগাররা। দলীয় ৮১ রানে ফেরেন তামিমও। বাংলাদেশের রেকর্ড টানা ৪ ফিফটি তুলে ফেরেন ৬০ রানে।

চতুর্থ উইকেটে বাংলাদেশকে কক্ষপথে ফেরায় নাসির-সাকিব জুটি। ৮৯ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটসম্যান। নাসির ২৮ রানে ফিরলে ভাঙে জুটিটি। এর ৯ রান পরে ফেরেন ৬৮ রান করা সাকিবও। বাংলাদেশের তখন জিততে প্রয়োজন ৩৮ বলে ৫৮ রান।

নিচের দিকে নামা মুশফিক, মাশরাফির ছোট ক্যামিওতে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা বাড়ে। এই দুজন ফিরলেও মাঠে ছিলেন নির্ভরতার প্রতীক মাহমুদউল্লাহ। টেলএন্ডারদের নিয়ে যুদ্ধ করা এ ব্যাটসম্যানের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে ছিলো পুরো দেশ, বিশ্ব।

শেষ ওভারে জিততে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিলো ৯ রান। প্রথম তিন বলে মাত্র ২ রান নিতে পারে মাহমুদউল্লাহ ও রাজ্জাক। চতুর্থ বলে মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে আসে ৩ রান। চতুর্থ রান নেওয়ার সময় এ টাইগারকে বাধা দেন পাকিস্তানি পেসার আইজাজ চিমা। শেষ ২ বলে জিততে বাংলাদেশের তখন প্রয়োজন আর ৪ রান। আবেগে কাঁপছিল পুরো দেশ!

কিন্তু ভুল করে বসেন রাজ্জাক। উচ্চভিলাষী শট খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন। শেষ বলে স্ট্রাইকে আসেন শাহাদাত। জিততে হলে ভাগ্যের পরশ লাগতো বাংলাদেশের। কিন্তু ভাগ্যদেবতা মুখ তুলে তাকাননি। তাই এত কাছে এসেও জয় ধরা দেয়নি টাইগারদের পক্ষে।

প্রথম শিরোপা ছুঁয়েও ছোঁয়া হয়নি তাই। টাইগার কোনো ক্রিকেটারই যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। এত কাছে এসেও! কান্নায় তাই দুঃখে ভাসায় ক্রিকেটাররা—যে কান্না ভালোবাসার, যে কান্না আবেগের, যে কান্না বিশ্বকে জানান দেওয়ার, ‘বাঘ আসছে’ ক্রিকেটের নতুন পরাশক্তি হয়ে।


ঢাকা/কামরুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়