ইংল্যান্ড সফরে বিপর্যস্ত কোহলির বদলে যাওয়ার মন্ত্র কী!
২০১৪ সালের ইংল্যান্ড সফর পর্যন্ত ২৯ টেস্ট খেলে ব্যাটিং গড় ছিল ৩৯.৪৬। সেই সফরের পর থেকে এখনও পর্যন্ত ৫৭ টেস্টে গড় ৬১.১৯।
প্রথম ২৯ টেস্টে ব্যাটিং গড় ৩৯.৪৬। পরের ৫৭ টেস্টে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬১.১৯ এ। অর্থাৎ, ব্যাটিং গড়ের পার্থক্য প্রায় ২২। নিজেকে ঠিক এতটাই বদলেছেন ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি।
আর সে বদলে যাওয়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছেন ২০১৪ সালে। ইংল্যান্ড সফর শেষে। সে সফরে ১০ ইনিংসে করেছেন মাত্র ১৩৪ রান। ক্যারিয়ারে এত বাজে সময় দেখেননি আর কখনো। দুঃসহ সে সময় নিজের ক্রিকেট নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন কোহলি। সম্প্রতি ইনস্টাগ্রাম লাইভে কেভিন পিটারসেনের সঙ্গে আলাপচারিতায় এমন তথ্য জানালেন কোহলি।
২০১৪ সালে ইংল্যান্ডে খেলা সেই সিরিজে কি সমস্যা ছিলো কোহলির। ক্রিকেট বোদ্ধারা তার ব্যাটিং বিশ্লেষণ করে বলেছিলেন সুইংয়ের বিরুদ্ধে দূর্বল কোহলি। স্ট্যাম্পের বাইরে কিংবা ভেতরে আসা বল, সবদিক থেকেই টেকনিকে নড়বড়ে। অবশ্য পরিসংখ্যান তাই বলে। ১০ ইনিংসের ৭টিতে কোহলি আউট হয়েছেন স্লিপে বা কিপারকে ক্যাচ দিয়ে। দুটিতে এলবিডব্লিউ আর একটিতে বোল্ড। তবে কোহলি বলছেন ভিন্ন কথা।
‘আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে সময় ছিলো ২০১৪ সালের ইংল্যান্ড সফর। যখন আমি সকালে ঘুম থেকে উঠে বুঝতাম, রান করার কোনো সম্ভাবনাই নেই আমার। তার পরও বিছানা ছাড়তে হয়েছে, খেলার পোশাক পরতে হয়েছে। একই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। যদিও জানতাম নিশ্চিত ব্যর্থ হতে যাচ্ছি। আসলে এটি আমাকে হতাশ করে দিয়েছিল, পুরোপুরি বিধ্বস্ত। এরপর আমি নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করি, নিজেকে আর ওই অবস্থার ভেতর দিয়ে যেতে দেব না।’
কোহলি মনে করেন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ায় এমন ভরাডুবি হয়েছে তার। টেকনিকে ছিলো না কোনো ঘাটতি, ‘টেকনিকের ব্যাপারটিও কিন্তু পুরোপুরি মানসিক। কোচরা তো আর সব শেখায় না। এও সময়ে এসে উদ্ভাবনী কিছু করতে হয়। প্রতিপক্ষের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে থাকতে হয়।’
সে দুঃসময় পেছনে ফেলে কোহলি নিজেকে নতুন করে গড়েছেন। ইংল্যান্ডের মাটিতে ২০১৮ সালের সফরে করেছেন সিরিজ সর্বোচ্চ ৫৯৩ রান। সাদা বলের ক্রিকেটেও ইংল্যান্ডের মাঠে পেয়েছেন সাফল্য। নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া কোহলি তরুণদের দিয়েছেন উপদেশ, ‘আমি তরুণ ক্রিকেটারদের বলতে চাই, আমি ওই সফরে নিজে খুব ভালো করতে চেয়েছিলাম, রান পেতে মরিয়া ছিলাম। তাই আমার অমন সমস্যা হয়েছে। তখন দলের কথা ভাবিনি। বুঝিনি ওই পরিস্থিতিতে দল আমার কাছে কি চায়।’
নিজেই আরো যোগ করেন, ‘আসলে ওই সফরটি নিয়ে আমি খুব বেশি ভেবে ফেলেছিলাম। মনে হতো, এখানে টেস্টে ভালো করলেই আমি ভাল ব্যাটসম্যানের স্বীকৃতি পাবো। এই ভাবনাগুলোই আমার ক্ষতি করেছে। এটি থেকে বের হতে পারিনি। আমার জন্য বাজে অভিজ্ঞতা।’
ঢাকা/কামরুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন