মাঠে ফিরে মনের লড়াইয়ে জিততে হবে মুমিনুলদের
পৃথিবী নিশ্চয়ই একদিন আলোর ঝলকানি দেখবে। সেদিন করোনামুক্ত হবে গোটা পৃথিবী। প্রাণ ভরে নেওয়া যাবে বিশুদ্ধ শ্বাস। নীল আকাশের নিচে ২২ গজে সেদিন ব্যাটিং করবেন ক্রিকেটের রাজারা। সবুজ ঘাসের উপর বল হাতে ছুটবেন গতির তারকারা। স্পিনাররা ছড়াবেন বিষ।
সেদিন ব্যাট-বলের ঠুকঠাক শব্দের সঙ্গে সৌরভে ভরে উঠবে স্টেডিয়ামপাড়া। ক্রিকেটপ্রেমিদের করতালিতে সৃষ্টি হবে উন্মাদনা। চোখ বুঝলেই এমন কিছুর স্বপ্ন দেখেন বাংলাদেশের টেস্ট দলপতি মুমিনুল হক সৌরভ। তবে তার স্বপ্ন আরও দীর্ঘ হচ্ছে।
ক্রিকেটারদের মাঠে ফেরানোর সকল পরিকল্পনা নিয়ে রাখলেও বিসিবি এখনই তাদের ফেরাবে না। চার দেয়ালে বন্দি জীবন কাটিয়ে হাঁপিয়ে উঠেছেন মুমিনুল। তবে বেঁচে থাকতে আরও কয়েক দিন, সপ্তাহ কিংবা মাস ঘরের ভেতরে থাকতে আপত্তি নেই তাঁর। মুমিনুলের সোজাসুজি কথা, ‘দিনদিন করোনা বাড়ছে। যদি আরও দুইমাসও ঘরে থাকতে হয় তাহলেও আমি রাজি। আমি চাই সবাই সুস্থ থাকুক।’
ক্রিকেট ফিরবে কোনও না কোনও দিন। মাঠে ক্রিকেট ফিরলে ব্যাট-বলের লড়াইয়ের পাশাপাশি মানসিক যুদ্ধও করতে হবে বলে ধারণা দিয়ে রাখলেন মুমিনুল, ‘আমাদের অভ্যস্ত হতে কিছুদিন সময় লাগবে। কারণ অনেকদিন বাইরে। সাথে আমাদের মানসিকভাবে মানিয়ে নিতে হবে। এই লড়াইটাই সবচেয়ে কঠিন হবে। মানসিকভাবে যে এগিয়ে থাকবে সে তত দ্রুত ফিট হয়ে যাবে। ফিটনেস নিয়ে কোনও সমস্যা হবার কথা না। কারণ প্রত্যেকেই এখন ফিটনেস নিয়ে সচেতন।’
টেস্ট ক্রিকেটে যুক্ত হচ্ছে কিছু অস্থায়ী নিয়ম। যেমন, বোলাররা বলের শাইন ধরে রাখার জন্য লালা ব্যবহার করতে পারবেন না। আবার কনকাসন সাবের মতো করোনার জন্য আসছে করোনা সাব। এছাড়া স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে বেশ কিছু নিয়ম যুক্ত হচ্ছে। সেগুলিকে স্বাগত জানিয়েছেন টেস্ট অধিনায়ক, ‘কিছু জিনিস তো অবশ্যই ভালো। যেমন করোনা-সাব। কেউ যদি আক্রান্ত হয়ে যায় বা যদি তার উপসর্গ ধরা পড়ে তাহলে তাকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা যাবে। শুধু খেলোয়াড়ই নয়, আম্পায়ার, অফিসিয়াল যে কেউই হতে পারে।’
এগুলি মানিয়ে নেওয়া কষ্ট হবে না বলে মনে করছেন মুমিনুল। তাঁর ভাষ্য, ‘আমরা এগুলিতে অভ্যস্ত না। তবে এগুলি আমাদের উপকার করবে। করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য আমাদেরকে এগুলি মানিয়ে নিতে হবে।’
তবে বোলারদের জন্য ভিন্ন কিছু পরিকল্পনার কথা চিন্তা করছেন মুমিনুল। আইসিসির দিক নির্দেশনার অপেক্ষায় টেস্ট অধিনায়ক, ‘পুরনো বল ব্যবহার পেসারদের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই ওদের বোলিংয়ে ধার থাকতে হবে। তবে বলের শাইন ধরে রাখার জন্য ভিন্ন কিছুর পরিকল্পনা করতে হবে। আইসিসি একটি দিক নির্দেশনা অবশ্যই দেবে। সেটা পেলে ভালো হবে।’
২২ গজে ফেরার আশায় বসে আছেন মুমিনুল। স্বপ্ন দেখছেন সাদা প্যাড, হাতে গ্লাভস আর নিজের ব্যাট নিয়ে নেমেছেন ব্যাটিংয়ে। সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কবে? প্রায় তিন মাস হতে চলল!
ঢাকা/ইয়াসিন
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন