ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ক্রিকেটার বাবার দেখানো স্বপ্নের পথে হাঁটছেন আহনাফ (ভিডিও)

কামরুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৮, ১৩ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
ক্রিকেটার বাবার দেখানো স্বপ্নের পথে হাঁটছেন আহনাফ (ভিডিও)

বাবা মানেই এমন এক শক্ত খুঁটি, যার ওপর পাহাড়সম দায়িত্ব। আর তিনি সন্তানদের পরম নির্ভরতার ছাউনি। বাবা শুধু তার নিজের স্বপ্নের বাহক-ই নন, তাকে পরম মমতা ও যত্নের সঙ্গে লালন করতে হয় পরিবারের প্রতিটি স্বপ্নকে।

আর বাবার স্বপ্ন? হ্যাঁ সন্তান যদি বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন তাহলে তো কথাই নেই, গর্বে বুক ফুলে যায় বাবাদের। সেই দলের সদস্য হওয়ার পথে বাংলাদেশের সাবেক ঘরোয়া ক্রিকেটার হাসানুজ্জামান ঝরু। তার ছেলে আহনাফ আজমাঈন হাঁটছেন বাবার দেখানো পথে। বাবা যেমন ব্যাট-বল নিয়ে ২২ গজে ছড়িয়েছেন দ্যুতি, আহনাফও একই স্বপ্ন লালন-পালন করে বড় হচ্ছে।

রাইজিংবিডি’র ‘যেমন বাবা তেমনি ছেলে’– আয়োজনের চতুর্থ পর্বে আজ হাসানুজ্জামান ঝরু ও আহনাফ আজমাঈনের গল্প জানাবো।

জাতীয় দলের জার্সি গায়ে তুলতে না পারলেও ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত মুখ ছিলেন হাসানুজ্জামান ঝরু। মাঠের খেলা ছেড়েছেন ২০০৫ সালে, তবে ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে পারেননি। ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন। ফলে বড় সন্তান আহনাফ আজমাঈন ছোট থেকেই ক্রিকেটীয় পরিবেশে বড় হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই তাই ক্রিকেটে চলে আসেন আহনাফ। এমনটাই জানিয়েছেন বাবা হাসানুজ্জামান।

তার ভাষ্যে, ‘ক্রিকেট পরিবারে জন্ম আহনাফের। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট অনুসরণ করছে, দেখছে। তার উপর আমার সঙ্গ তো আছে। স্বাভাবিকভাবেই তাই ক্রিকেটে চলে আসা তার।’

তবে ক্রিকেটে অনুরক্ততা কীভাবে? সেই উত্তরও জানালেন সাবেক ক্রিকেটার বাবা, ‘ক্রিকেটের প্রতি ওর আগ্রহ আসে ক্রিকেটাঙ্গন থেকে। এরপর সবসময় আমাকে দেখেছে ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত থাকতে, ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলতে। তার নিজেরও মাঠে যাওয়া হয়েছে। ক্রিকেটের সরঞ্জামাদি তো তার খেলার সঙ্গী হয়ে উঠেছিল। এভাবে ক্রিকেটের প্রতি তার অনুরক্ততা চলে এসেছে।’

বাবা ক্রিকেটার ছিলেন, ক্রিকেটের সঙ্গে আছেন; ক্রিকেটার হওয়ার জন্য পরোক্ষভাবে কী কোনো চাপ ছিল আহনাফের প্রতি? উত্তরে ক্রিকেটার বাবা জানালেন, কখনোই চাপিয়ে দেওয়া হয়নি কিছু। সেজন্য আহনাফের কেবল ক্রিকেট নয়, সংস্কৃতির দিকেও মন আছে।

তার ভাষ্যে, ‘আমি কখনো তার উপর ক্রিকেট চাপিয়ে দেইনি। সে কিন্তু অন্য কো কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিসেও অনেক পারদর্শী। ওর স্কুল থেকে যতটুকু জানলাম, ও কিন্তু গানও করে। তবে ক্রিকেট ওর কাছে প্রধান।’

হাসানুজ্জামান আরও যোগ করেন, ‘আমি চাই সে শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেট খেলুক। তবে জাতীয় দল বা অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলা নিয়ে তার প্রতি আমার কোনো চাপ নেই।’

তবে বাবা হিসেবে হাসানুজ্জামান ঝরু চান তার সন্তান ক্রিকেটারই হোক। আর এই চাওয়ার পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান সময়ে বাঁচতে গেলে তারকা বা সফল ব্যক্তিত্ব হওয়া খুব প্রয়োজন। বাংলাদেশে ক্রিকেটার হওয়ার মাধ্যমে তারকাখ্যাতি পাওয়া সবচেয়ে সহজ। আর এই দেশে ক্রিকেটারদের মতো এতটা আশীর্বাদ আর কেউ পায় না। তার যেহেতু ক্রিকেটের প্রতি অনুরক্ততা আছে, তাই আমি চাই সে ক্রিকেটার হোক।’

১১ বছর বয়সী আহনাফ এখন স্কলাসটিকায় পঞ্চম শ্রেণিতে আছেন। এই মুহূর্তে সন্তানের পড়াশুনার দিকে লক্ষ্য ক্রিকেটার বাবার। আরও দুই তিন বছর পর অবস্থা বিবেচনায় নিবেন অন্য পদক্ষেপ।

‘ওর জন্য পড়াশুনা এবং ক্রিকেটে মন দেওয়া খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তবে এখনকার তরুণরা অনেক স্মার্ট। এরা ম্যানেজ করে নিতে পারে। তবে আরও দুই-তিন বছর দেখতে চাই আমি। যদি দেখি সে ক্রিকেটে ভালো করছে, মন দিচ্ছে, তখন প্রয়োজনে ওর পড়াশুনার চাপ কিছুটা কমিয়ে দিতে রাজি আমি।’- যোগ করেন ৪৫ বছর বয়সী হাসানুজ্জামান।

এই মুহূর্তে সাবেক এই ক্রিকেটারের চাওয়া সন্তান আহনাফ আরও পরিশ্রম করে নিজেকে শাণিত করে নিবেন। টেকনিক্যালি স্ট্রং হবেন। ক্রিকেটকে নিজের জীবনের পাথেয় করে তুলবেন। তবে একইসঙ্গে সন্তানের শিক্ষা এবং ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার দিকেও মনে দিতে চান তিনি।

তার ভাষ্যে, ‘টেকনিক্যালি সে এখনো অত দৃঢ় নয়। যে পরিশ্রম করছে, সেটিও যথেষ্ট নয়। আরও বেশি পরিশ্রম করতে হবে। তবে এই মুহূর্তে সে পড়াশুনায় ভালো হয়ে উঠুক সেটা চাই। কারণ ক্রিকেটে এটা খুব প্রয়োজন। ক্রিকেটার হওয়ার পাশাপাশি সর্বোপরি সে ভালো মানুষ এবং শিক্ষিত হয়ে উঠুক।’

**বাবার পথ ধরে ক্রিকেটের মাঠে নামির

**ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর নাফীসপুত্র শাহওয়ার

**আমিনুলের স্বপ্ন মাহদির কাঁধে

রাইজিংবিডি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়