ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জাতীয় দলের খেলোয়াড় প্রস্তুত করার জায়গা এইচপি: দুর্জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৪৪, ৭ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ০৮:৪৮, ৮ অক্টোবর ২০২০
জাতীয় দলের খেলোয়াড় প্রস্তুত করার জায়গা এইচপি: দুর্জয়

এইচপি দলের সঙ্গে নাঈমুর রহমান দুর্জয়

২৫ ক্রিকেটার নিয়ে বুধবার থেকে মিরপুরে শুরু হয়েছে বিসিবির হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) ইউনিটের কার্যক্রম। জাতীয় দল ও এই দলের জন্য খেলোয়াড় তৈরি করার কাজটা করে এইচপি ইউনিট। বছরের বিভিন্ন সময় ক্যাম্প ও দেশ-বিদেশে সিরিজ আয়োজন করে তাদের বড় মঞ্চের জন্য প্রস্তুত করে দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিসিবি। ঘরোয়া ক্রিকেট ও বয়সভিত্তিক দলগুলো থেকে প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটারদের বাছাই করে সংশ্লিষ্টরা। 

ক্যাম্পের প্রথম দিন উপস্থিত ছিলেন এইচপির প্রধান নাঈমুর রহমান দুর্জয়। সেখানে ক্রিকেটারদের নিজের বার্তা দেন তিনি। বেশ কিছুক্ষণ ছেলেদের অনুশীলনও দেখেন। সেখান থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন এইচপির প্রধান। তার কথা শুনেছিল রাইজিংবিডি এবং তা পাঠকদের জন্য প্রশ্নোত্তর পর্বে তুলে ধরা হলো:

এইচপির কার্যক্রম আজ থেকে শুরু হলো। সার্বিক পরিস্থিতি কেমন দেখছেন? 

দুর্জয়: খেলোয়াড়রা ঘরবন্দি ছিল। আমাদের পরিস্থিতিও বুঝতে সময় লেগেছে এবং খেলাধুলা শুরু করার ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের একটা দিক ব্যাপার ছিল। এখন সেই সময় এসেছে, আমরা সুযোগ পেয়েছি। তারপরও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্দেশনার আমরা শুরু করার চেষ্টা করছি। পরবর্তীতে কী পরিস্থিতি হয় সেটার উপর নির্ভর করবে। আমরা এখন অন্যদের দেখে, যেসব জায়গায় খেলা হচ্ছে সেসব পর্যবেক্ষণ করে শুরু করেছি। সেই ধারাবাহিকতায় আজ থেকে শুরু হলো এইচপির কার্যক্রম। 

এবারের এইচপি প্রোগ্রামের লক্ষ্য?  

দুর্জয়: এইচপির প্রোগ্রাম কোনও লক্ষ্য তৈরি করে করা হয় না। এখানে প্লেয়ার ডেভেলপমেন্ট করার যে প্রোগ্রাম সেটা পরিচালনা করা হয়। শুধুমাত্র সিরিজ টার্গেট করে আগে হয়তো করা হয়েছে, কিন্তু এখন না। এইচপি স্কোয়াড সেভাবেই করা হয়, যেন তারা সবসময় ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের মধ্যে থাকে। এই লক্ষ্যেই ক্যাম্প শুরু হচ্ছে। এর ভেতর ম্যাচ বা সিরিজ আয়োজনও অনুশীলনের পর্যায়েই পড়ে।

এবারের কার্যক্রম কতদিন চলবে?

দুর্জয়: আমরা ২৬ নভেম্বর অর্থাৎ নভেম্বরের শেষদিক পর্যন্ত এ কার্যক্রম চালাবো।

বিদেশি কোচিং স্টাফ ছাড়াই শুরু হচ্ছে এ ক্যাম্প?

দুর্জয়: আপনারা জানেন কোচিং স্টাফদের দুজন বাইরের, যাদের সমস্যা ছিল। আমাদের যে লঙ্কান বোলিং কোচ চাম্পাকা রামানায়েক, তার মা অসুস্থ এবং টবি র‌্যাডফোর্ডের ভ্রমণেও বাধ্যবাধকতা আছে বলে এখনই যোগ দিতে পারছেন না। কিন্তু হয়তো ১১-১২ তারিখের দিকে চলে আসতে পারেন।

আপাতত স্থানীয়রাই দায়িত্বে?

দুর্জয়: আমাদের এইচপির অন্য যারা আছেন, ব্যাটিং কোচ এহসান ভাই। এছাড়া ওয়াহিদুল গনি স্পিন কোচ। সাইফুল ইসলাম আছে বোলিং কোচ হিসেবে, ফিল্ডিং কোচ মর্তুজা, ট্রেনার তুষার কান্তি- ওরা এ কয়দিন আপাতত কাজ চালাবে।

এইচপির জন্য আলাদা নির্বাচক নেই। ভবিষ্যতে নির্বাচক নিয়োগ দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা রয়েছে?

দুর্জয়: জাতীয় দলের নির্বাচকরাও অনেক সময় চাপে থাকে, যদি জাতীয় দলে কার্যক্রম বেশি থাকে। যেহেতু আমাদের বয়সভিত্তিক ও জাতীয় দলের জন্য আলাদা নির্বাচক আছে, সেহেতু এইচপির জন্যও আলাদা নির্বাচকের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি আমি মাঝে মাঝে এবং এটা নিয়ে আলাপ আলোচনাও হয় বোর্ডে। হয়তো আমরা সামনের দিকে সেটাও চিন্তা করবো। অবশ্য এইচপির আলাদা নির্বাচক থাকলেও তাদের জাতীয় দলের নির্বাচকদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। হয়তো জাতীয় দলের নির্বাচকদের কাউকে এইচপির জন্য অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।

এবারের এইচপিতে যুব বিশ্বকাপজয়ী খেলোয়াড়রাই বেশি। সঙ্গে পুরোনো ক্রিকেটারও রয়েছে...

দুর্জয়: হাই পারফরম্যান্সকে আসলে জাতীয় দলের পাইপলাইন ধরি। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটাররাও এখানে আসে, অনূর্ধ্ব-১৯ দলে বেশিরভাগ ক্রিকেটারই এইচপিতে আসে। সবাইকে সুযোগ দেওয়া সম্ভব হয় না, আবার সবার যোগ্যতাও থাকে না। সবার যোগ্যতার মাপকাঠি মেনেই নির্বাচকরা নির্বাচিত করেন এইচপি স্কোয়াড। অবশ্যই নির্বাচকরা তো তাদের প্রতিভা, ভবিষ্যত দেখেই এখানে নিয়ে এসেছে।

এবারের এইচপি দল নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কেমন?

দুর্জয়: জাতীয় দলের জন্য খেলোয়াড় প্রস্তুত করার জায়গাটাকে আমরা হাই পারফরম্যান্স হিসেবে ব্যবহার করি। এই জিনিসটা মাথায় নিয়ে কাজ করি, আজকেও আমি বলেছি। অনেক সময় আমরা কাউকে প্রতিভাবান হিসেবে ধরি কিন্তু অনেকের কিছু সমস্যা থাকে, টেকনিকে দুর্বলতা থাকে; যেগুলো জাতীয় দলে গিয়ে কাজ করতে হয়। কিন্তু আমার আবেদন খেলোয়াড়দের প্রতি, জাতীয় দলে গিয়ে যেন কোনও কাজ না করতে হয়। ওখানে গিয়ে যেন তারা সার্ভিসটা দিতে পারে এবং যার যা টেকনিকে সমস্যা আছে সেগুলো যেন এইচপিতে তারা যতদিন কাজ করবে তাদের সেরা ব্যবহারটা যেন এখান থেকে করে নেয়।

ছেলেদের ফিটনেস কেমন দেখলেন?

দুর্জয়: কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ ক্রিকেটার অনলাইনে কোচ, ফিজিও, ট্রেনারের কাছে বিশেষ করে ফিটনেসটা নিয়ে মনোযোগী হয়েছে যে কারণে আজকে ফিটনেস টেস্টে আমি গর্ব করে বলতে পারি আমাদের প্লেয়াররা খুব ভালো করেছে। ২৫ জনের মধ্যে ২-৩ জনের সমস্যা হতেই পারে কিন্তু সর্বোপরি ফিটনেস টেস্টে খুব ভালো করেছে। তার মানে তারা আন্তরিক এবং গুরুত্ব সহকারে প্রস্তুত হচ্ছে। 

জাতীয় দলের সঙ্গে এইচপির ক্রিকেটাররা প্রতিযোগিতা খেলছে। এটা তাদের জন্য বড় সুযোগ?

দুর্জয়: জাতীয় দলের সঙ্গে যে প্রতিযোগিতা খেলবে, এটা তাদের জন্য বিরাট সুযোগ। কারণ অনেকদিন ম্যাচের বাইরে আছে তারা। যে লেভেলেই হোক ম্যাচ খেলার সুযোগ পাওয়া অনেক বড় ব্যাপার।

ঢাকা/ইয়াসিন/ফাহিম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়