ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

পেসারদের দিনে অনিন্দ্য সুন্দর রুবেল

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩২, ১৩ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ১০:৩০, ১৪ অক্টোবর ২০২০
পেসারদের দিনে অনিন্দ্য সুন্দর রুবেল

পেসার রুবেল হোসেনের ডাকে সাড়া দিলেন আম্পায়ার গাজী সোহেল। রুবেল ফিরে গেলেন অ্যাডিলেডে! মনে পড়ে ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের ম্যাচে স্টুয়ার্ট ব্রডকে বোল্ড করে কেমন উদযাপন করেছিলেন এই পেসার? জায়গায় দাঁড়িয়ে দুই হাত প্রসারিত করে গগনবিদারী চিৎকার। পেছনে এসে জড়িয়ে ধরেছিলেন সাকিব আল হাসান। পাশেই ছিলেন দলনেতা মাশরাফি। 

মিরপুরের সবুজ ঘাসে রুবেল ফিরে গেলেন পাঁচ বছর আগে। উদযাপন দিয়ে, আকর্ষণীয় বোলিংয়ে। তামিম ইকবালকে এলবিডব্লিউ করে তার উদযাপনে বোঝা যাচ্ছিল দেশসেরা ওপেনারের উইকেটে বেশ উৎফুল্ল। তামিমের উইকেটের থেকেও হয়তো রুবেল ওই বলটা নিয়ে খুশি। 

লেন্থে পড়েই ‘বানানা সুইং’, সঙ্গে দুর্দান্ত গতি। কিছু বোঝার আগেই বল আঘাত করে তামিমের প্যাডে। স্পেলের দ্বিতীয় বলে এমন আকর্ষণীয় ডিলেভারিতে তামিমকে বধ করার আনন্দ ঘটা করে পালন রুবেলের। ওই এক বলেই রুবেল থেমে থাকেননি। 

মাহমুদউল্লাহ একাদশের এ পেসার মাত্র ৫ ওভার বোলিংয়ের সুযোগ পেয়েছেন। ইনিংস শেষে বোলিং স্পেল ছিল এরকম, ৫-০-১৬-৩। আগুন ঝরানো এ স্পেলের ২১ বল-ই ছিল ডট। রাউন্ড আর্ম অ্যাকশনের কারণে সুইং করানো খানিকটা সহজ। তবে ছন্দ হারিয়ে রুবেল ফুরিয়ে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে নতুনের আগমনে পিছিয়ে যাচ্ছিলেন। 

দীর্ঘদিন পর চেনা কন্ডিশনে রুবেল দেখালেন কারিশমা। সেই পুরোনো গতি। সঙ্গে দুর্ভাবনায় ফেলানো সুইং। পরিচিত বাউন্স আর আগ্রাসন। তামিমকে দ্বিতীয় বলে আউট করার পর এনামুল হক বিজয় ও তানজিদ হাসান তামিমকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলেন। দুই ব্যাটসম্যান কোনোভাবেই তার বোলিংয়ের জবাব দিতে পারছিলেন না। 

বিজয় অফ স্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ ও কাট করতে গিয়ে বারবার পরাস্ত হচ্ছিলেন। জুনিয়র তামিম গতিতে হারাচ্ছিলেন ব্যাটিং ছন্দ। টাইমিংয়ে হচ্ছিল গড়বড়। যুব দল পেরিয়ে আসা তরুণ তুর্কি পথ হারান সেই গতিতে। লেগ স্টাম্পের উপরের বল আলগা শটে মিড উইকেট দিয়ে উড়াতে চেয়েছিলেন। ব্যাট-বলের রসায়ন মেলেনি। মুমিনুল হক একটু লাফ দিয়ে বল নাগালে পেয়ে যান। এক বল পর রুবেলের শিকার মোহাম্মদ মিথুন। লেগ স্টাম্পের উপরের বল ফ্লিক করতে গিয়ে কভারে ক্যাচ তোলেন। 

আকাশ ছিল মেঘলা। গুমোট আবহাওয়া বোলারদের জন্য এমনিতেই পোয়াবারো। সেখানে রুবেলের গতি, সুইং তামিমদের ২২ গজে টিকে থাকা দুরূহ হয়ে উঠে। পাঁচ ওভারে রুবেল ছিলেন ধ্রুপদী ও ধারাবাহিক। প্রথম ওভারে ৫ ডট। পরবর্তীতে চার ওভারে দিয়েছেন যথাক্রমে ৩, ৫, ৪ ও ৪ ডট।  

মিরপুরের ২২ গজে শুরুটা করেছিলেন রুবেল। পরবর্তীতে সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন সুমন খান, মুস্তাফিজুর রহমান, সাইফ উদ্দিন। রুবেলের দলের সুমন ৫ ওভারে ৩১ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। তামিম একাদশের সাইফ উদ্দিন ২ ও মুস্তাফিজুর রহমান ১ উইকেট নিয়ে পেয়েছেন। 

সব মিলিয়ে মঙ্গলবার শের-ই-বাংলায় দিনটা ছিল পেসারদের। ১৫ উইকেটের ৯টি তাদের পকেটে, সেখানে রুবেল ছিলেন অনিন্দ্য সুন্দর।

ঢাকা/ইয়াসিন/ফাহিম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়