ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

টেস্ট ক্রিকেটের কুড়ি বছরে টাইগারদের যত অর্জন

কামরুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৩, ১০ নভেম্বর ২০২০   আপডেট: ১১:৪১, ১০ নভেম্বর ২০২০
টেস্ট ক্রিকেটের কুড়ি বছরে টাইগারদের যত অর্জন

সময় তার আপন গতিতে চলতে চলতে জানান দিলো, ক্রিকেটের সবচেয়ে প্রাচীন ফরম্যাট টেস্ট অঙ্গনে ২১ বছরে পা দিলো বাংলাদেশ। দেখতে দেখতে পার হয়ে গেলো কুড়ি বছর। ২০০০ সালের ঠিক এদিনেই ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণে অভিষেক ঘটেছিল টাইগারদের। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সাদা পোষাকের অভিষেকে স্বাগতিক বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল ভারত।

সেই থেকে এই কুড়ি বছরে চড়াই-উতরাই পেরিয়ে টেস্ট অঙ্গনে এগিয়ে চলার চেষ্টায় বলা চলে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে টাইগাররা। রঙিণ পোষাকের ক্রিকেটে মোটামুটি ধরনের উন্নতি ঘটলেও টেস্ট ক্রিকেটে যেন বিবর্ণ বাংলাদেশ। পরিসংখ্যানও প্রমাণ দেয় সেই ব্যর্থতার।

এই দুই দশকে বাংলাদেশ ১১৯টি টেস্ট খেলেছে। কিন্তু জিততে পেরেছে সর্বসাকুল্যে ১৪টি। যার মধ্যে ১০টি ছিল ঘরের মাঠে। প্রথম জয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০০৫ সালে চট্টগ্রামের মাঠে। দেশের বাইরে ওয়েস্ট ইন্ডিজে দুটি, জিম্বাবুয়ের হারারেতে একটি আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শততম টেস্টে জয় আসে কলম্বোতে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে হারের সংখ্যা ৮৯টি এবং ড্র করেছে ১৬ ম্যাচে, যার বেশিরভাগই বৈরি আবহাওয়ার বদৌলতে। দলগত বা ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে বাংলাদেশের পরিসংখ্যান খুব একটা সমৃদ্ধ নয়। তবে এরই মাঝে বাংলাদেশ দল এবং ক্রিকেটাররা অর্জন করে নিয়েছে কিছু স্বীকৃতি। কুড়ি বছরের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সেসব অর্জনে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।

নিজেদের অভিষেক টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে শতক হাঁকিয়েছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। করেছিলেন ১৪৫ রান। এই ইনিংসের মাধ্যমে অনন্য এক কীর্তিতে নাম লিখিয়েছিলেন এই ক্রিকেটার। দেড়শ বছরের ক্রিকেট ইতিহাসে নিজেদের অভিষেক টেস্টে শতক হাঁকিয়েছিলেন আমিনুলসহ মাত্র চারজন। অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ব্যানারম্যান, জিম্বাবুয়ের ডেভ হটন এবং সর্বশেষ আয়ারল্যান্ডের কেভিন ও’ব্রায়েন।

টেস্ট ক্রিকেটের অভিষেকে সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে এখনো উচ্চারিত হয় বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুলের নাম। ২০০১ সালে নিজের অভিষেকে ১৭ বছর ৬৩ দিনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শতক হাঁকান আশরাফুল।

সবচেয়ে কম বয়সে টেস্ট ম্যাচে ১০ উইকেট শিকারের রেকর্ডটি বাংলাদেশী বোলার এনামুল হক জুনিয়রের। ২০০৫ সালে ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১২ উইকেট শিকারের ম্যাচের শুরুর দিন তার বয়স ছিল ১৮ বছর ৪০ দিন।

একই টেস্টে সেঞ্চুরি ও হ্যাটট্রিকের অনন্য রেকর্ড টাইগার ক্রিকেটার সোহাগ গাজির। ২০১৩ সালে চট্টগ্রামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ইতিহাসের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে এ কীর্তি গড়েন তিনি।

ইতিহাসে এক টেস্টে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট শিকার করা তৃতীয় খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান। ২০১৪ সালে খুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি এবং ম্যাচে ১০ উইকেট নেন তিনি। তার আগে কেবল ইংল্যান্ডের ইয়ান বোথাম ও পাকিস্তানের ইমরান খানের এ কীর্তি ছিল।
চতুর্থ ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ হিসেবে নিজেদের শততম টেস্ট ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চার উইকেটের সেই জয় এসেছে প্রতিপক্ষের মাঠে ২০১৭ সালে। বাংলাদেশের আগে এই কীর্তি ছিল কেবল অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং পাকিস্তানের।

বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন মুশফিকুর রহিম। সাবেক এই টেস্ট অধিনায়কের খেলা ৭০ টেস্ট থেকে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডও নিজের করে নিয়েছেন মুশফিক। এই ক্রিকেটারের সংগ্রহ ৪৪১৩ রান। তার চেয়ে ১০ টেস্ট কম খেলেও মাত্র ৮ রানে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন তামিম ইকবাল (৪৪০৫ রান)। আর তৃতীয় অবস্থানে থাকা সাকিবের সংগ্রহ ৩৮৬২ রান। বাংলাদেশের পক্ষে টেস্টে এই তিনজনেরই কেবল ডাবল সেঞ্চুরির কীর্তি রয়েছে। যার মধ্যে মুশফিকেরই তিনটি। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ স্কোর অপরাজিত ২১৯ রানের ইনিংসও তার সংগ্রহে।

বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ড সাকিবের দখলে। ৫৬ টেস্ট থেকে ২১০ উইকেট নিয়েছেন এই বাঁহাতি। তার পরের অবস্থান তাইজুল ইসলামের। এই বাঁহাতি মাত্র ২৯ ম্যাচেই নিয়েছেন ১১৪ উইকেট। এছাড়া আর উইকেটের সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন কিংবদন্তি মোহাম্মদ রফিক। ৩৩ ম্যাচে রফিকের সংগ্রহ বরাবর ১০০ উইকেট।

উল্লেখযোগ্য অন্যান্য অর্জনের মধ্যে রয়েছে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট জয়। এছাড়াও সাকিবের টেস্ট অলরাউন্ডারদের মধ্যে শীর্ষস্থান অর্জন। মুমিনুল হকের ৭ টেস্টের ১৩ ইনিংসে ফিফটির রেকর্ড। যা মুমিনুল ছাড়া কেবল স্যার ডন ব্র্যাডমানের রয়েছে।

ঢাকা/কামরুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়