সুযোগ নষ্টে জয় হাতছাড়া
ক্রীড়া প্রতিবেদক, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম থেকে || রাইজিংবিডি.কম
হিমালয়ের দেশটিকে নিশ্চিতভাবেই দুর্ভাগা বলতে হবে! নয়তো তাদের নিশ্চিত গোল পাওয়া বল কীভাবে গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসে?
বাংলাদেশ ও নেপালের দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটেই ম্যাচের সবচেয়ে বড় সুযোগটি তৈরি করেছিল সফরকারীরা। কিন্তু ভাগ্যদেবীকে পাশে পায়নি। তাইতো শ্রেষ্ঠার ক্রস গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসে। বদলি খেলোয়াড়ের বাঁপায়ের বাঁকানো শটে গোলরক্ষক আশরাফুলও ধোঁকা খেয়েছিল। বিলম্ব প্রতিক্রিয়ায় বামদিকে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু বলের স্পর্শ পাননি।
গোলপোস্টে লেগে গোলটা হয়নি। তাইতো রেফারি মিজানুর রহমান যখন শেষ বাঁশি বাজালেন তখন বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তির নিঃশ্বাস। গোল হজম না করার আনন্দ, ম্যাচ না হারার সুখ। অথচ চারদিন আগেও প্রায় একই দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতেছিল হেসেখেলে, ২-০ গোলে। চারদিন পর দুই দলের ম্যাচের ফল ০-০।
অথচ ম্যাচটা হতে পারতো বাংলাদেশের। মুহুর্মুহু আক্রমণে নেপালের রক্ষণদুর্গ কাঁপিয়ে দিচ্ছিলেন সাদ, জীবন, সুমনরা। কিন্তু নড়বড়ে ফিনিশিংয়ে বাংলাদেশ স্কোরলাইনও খুলতে পারেননি। প্রথম ২০ মিনিটে বাংলাদেশকে ম্যাচে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না।
মাঝমাঠ ছিল এলোমেলো। ফরোয়ার্ডরা বল প্লেসিং করতে পারছিলেন না। বল ফিনিশিংয়ের আগেই প্রতিপক্ষের নিয়ন্ত্রণে বল। ২৩ মিনিটে বাংলাদেশ প্রথম সুযোগ সৃষ্টি করে। জীবনের ক্রস থেকে ডি বক্সের খানিকটা বাইরে বল পান ফরোয়ার্ড সুমন রেজা। আলতো টোকায় বল নিয়ে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। তবুও বল নিয়ন্ত্রণে রেখে বাঁপায়ে বাঁকানো শট নেন। ভাগ্যদেবী পাশে ছিল না। গোলপোস্টের একটু ওপর দিয়ে বল বেরিয়ে যায়।
২৭ মিনিটে জীবন ও সাদ রসায়নে আক্রমণ। প্রথম ম্যাচে তাদের জুটিই দিয়েছিল গোলের স্বাদ। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে জমেনি তাদের আক্রমণ। ডি বক্সের ভেতরে সাদকে বল এগিয়ে দেন জীবন। সাদ এক-দুই টোকায় বল নিয়ে আরও ভেতরে ঢুকে ক্রস করেন। কিন্তু নেপালের রক্ষণের খেলোয়াড় ঝাঁপিয়ে দলকে গোল হজমের থেকে বাঁচান।
মিনিট তিনেক পর এগিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে বড় সুযোগটি পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সুমন রেজার দুর্বল শট ফেরাতে নেপালের গোলরক্ষকের বেগ পেতে হয়নি। ফিরতি আক্রমণে জীবন একক প্রচেষ্টায় মধ্য মাঠ থেকে বল নিয়ে এগিয়ে যান। তাকে তিন খেলোয়াড় আটকানোর চেষ্টা করলেও পারেননি। বল নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখে সুমনকে এগিয়ে দিলেও ফরোয়ার্ড ঠিক মতো শট নিতে পারেননি।
বিরতি পর ৪৭ মিনিটে রহমতের ক্রস থেকে পেনাল্টি বক্সের সামান্য ভেতর থেকে বল পাওয়া মানিক মোল্লার দুর্বল শট সহজেই ধরে ফেলেন নেপালের গোলরক্ষক।১১ মিনিট পর জীবন, সুফিল ও ইয়াসিনের ত্রিমুখী আক্রমণ। বাঁপ্রান্ত থেকে বল নিয়ে ভেতরে ঢুকেছিলেন জীবন। সেখানে বল বাড়িয়ে দেন সুফিলকে। বল নিজের কাছে না রেখে ইয়াসিনকে পাস দেন সুফিল। ইয়াসিন শট নিলেও নেপালের জমাট রক্ষণ ভাঙতে পারেনি বাংলাদেশ। সম্মিলিত আক্রমেণেও বাংলাদেশ পায়নি গোলের স্বাদ।
এভাবেই ম্যাচ গড়িয়ে যায়। সুযোগ হাতছাড়ার মহড়া দেয় দুই দলই। তবে বাংলাদেশের সুযোগগুলো লাগছিল দৃষ্টিকটু। বারবার ডি বক্সের ভেতরে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলেন ফরোয়ার্ডরা। মধ্যমাঠও ছিল এলোমেলো। অন্তিম মুহূর্তে সফরকারীরা ম্যাচের সবচেয়ে বড় সুযোগ তৈরি করলেও শেষ হাসি হাসতে পারেনি।
প্রথম ম্যাচের দাপুটে জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-০ তে জিতে নেয় বাংলাদেশ। দীর্ঘ বিরতির পর ফুটবলে ফিরে বাংলাদেশ সিরিজ জিতলো, এটাই একমাত্র সান্ত্বনা।ট্রফির সঙ্গে বাংলাদেশের আরেকটি প্রাপ্তি মাহবুবুর রহমান সুফিলের মোস্ট ভ্যালুয়েবল খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি।
ঢাকা/ফাহিম
আরো পড়ুন