ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

২০২১ সালের ফ্রি এজেন্ট হতে পারেন তারা

ক্রীড়া ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১৬, ১ জানুয়ারি ২০২১   আপডেট: ০৭:০৭, ২ জানুয়ারি ২০২১
২০২১ সালের ফ্রি এজেন্ট হতে পারেন তারা

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির মধ্যেও ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের ক্লাবগুলো গ্রীষ্মের দলবদলের বাজারে সাড়ে চারশ কোটিরও বেশি ইউরো খরচ করেছে। যদিও তা ২০১৯ সালের তুলনায় ৪৩ শতাংশ নেমে গেছে। করোনাভাইরাস মহামারির এখনও শেষ হয়নি। অর্থনৈতিক বাস্তবতা মাথায় রেখে আগামী কয়েক মাসে তাই ফ্রি ট্রান্সফার হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

বেশ কিছু বড় খেলোয়াড়ের নাম শোনা যাচ্ছে, যারা শিগগিরই চুক্তিপত্রে সই না করলে ২০২১ সালে ফ্রি ট্রান্সফারে চলে যেতে পারেন অন্য ঠিকানায়। যদি আর্থিকভাবে তারা লাভবান হতে চান, তাহলে এই মাসের দলবদলের বাজারের সহায়তায় নিজ লিগের বাইরের ক্লাবের সঙ্গে আলাপ শুরু করতে পারেন।

লিওনেল মেসি (বার্সেলোনা)

১৩ বছরের সম্পর্কে ইতি প্রায় টেনেই ফেলেছিলেন মেসি। কিন্তু রিলিজ ক্লজ জটিলতায় বাধ্য হয়ে আর এক মৌসুম থাকতে হলো। তাতে প্রথম প্রচেষ্টায় তাকে নিতে ব্যর্থ হলেও হয়তো এই বছর আবার তার দিকে হাত বাড়াবে ম্যানচেস্টার সিটি, যেখানে আছেন তার ‍গুরু পেপ গার্দিওলা। অবশ্য কদিন আগে মেসি বলে দিয়েছেন, বর্তমান চুক্তি শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্য কোনও ক্লাবের সঙ্গে কথা বলবেন না তিনি। এরই মধ্যে মেজর সকার লিগে খেলার বাসনা প্রকাশ করেছেন ছয়বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী।

অন্যরা: কিছু ফ্রি ট্রান্সফারের ফায়দা নিলেও নিতে পারে বার্সা। ডাচ কোচ রোনাল্ড কোমান লিভারপুলের জর্জিনিয়ো উইনালডাম ও লিওঁর মেম্ফিস ডিপেকে নজরে রেখেছেন। অবশ্য কোচ হিসেবে মৌসুমের শেষ পর্যন্ত তিনি টিকতে না পারলে তা হবে না। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে তরুণ মিডফিল্ডার রিকুই পুইগকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কাতালানদের।

দাভিদ আলাবা (বায়ার্ন মিউনিখ)

২০০৮ সাল থেকে বায়ার্নে আছেন আলাবা। সম্প্রতি চুক্তি নবায়নের সম্ভাবনা ভেস্তে গেছে তার এজেন্ট পিনি জাহাভির আর্থিক চাহিদার কারণে। তাকে ‘অর্থখেকো পিরানহা’ বলেছিলেন বায়ার্নের সাবেক প্রেসিডেন্ট উলি হোয়েনেস। ক্লায়েন্টের জন্য বার্ষিক আয় অনেক বেশি নাকি চেয়েছিলেন জাহাভি। আলাবার বয়স ২৮ এবং বিশ্বমানের ডিফেন্ডার, হয়তো অন্য কোথাও ঠিকানা খুঁজে নেবেন তিনি।

অন্যরা: বায়ার্ন হয়তো ছেড়ে দেবে জেরোমে বোয়েটাংকে। গ্রীষ্মে অ্যাথলেটিক বিলবাওতে প্রায় চলেই যাওয়া হাভি মার্তিনেজও সুবিধা করতে পারছেন না। হয়তো তাদের এই জানুয়ারিতে কিংবা চুক্তি শেষ হলে অন্য কোথাও দেখা যাবে।

জিয়ানলুইজি দোন্নারুমা (এসি মিলান)

গ্রীষ্মের বাজারে এই সেরা তরুণ গোলকিপারকে নিয়ে মাতামাতি না হওয়া বিস্ময়কর কিছু। মাত্র ২১ বছর বয়স তার, কিন্তু গোলপোস্টের নিচে দুর্দান্ত। এই মৌসুমে চুক্তি শেষ হচ্ছে তার। কিন্তু দোন্নারুমার সঙ্গে নতুন ‍চুক্তি না করা হবে মিলানের জন্য বোকামি। কারণ দীর্ঘদিন পর আবারও সিরি আ শিরোপার গন্ধ পাচ্ছে তারা।

অন্যরা: দোন্নারুমার ভাই আন্তোনিওর চুক্তি প্রায় শেষের পথে। এছাড়া মিডফিল্ডার হাকান কালহানোগলু, ডিফেন্ডার মাতেও মুসাচ্চিও ও ৩৯ বছর বয়সী স্ট্রাইকার জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ শেষ মৌসুম খেলছেন।

সার্জিও আগুয়েরো (ম্যানসিটি)

প্রিমিয়ার লিগে সর্বকালের শীর্ষ বিদেশি গোলদাতা আগুয়েরো। প্রায় এক দশক ধরে সিটিতে তিনি। ২০১১ সালে আতলেতিকো মাদ্রিদ থেকে তাকে কিনে নেয় ম্যানসিটি। ৩৭৮ ম্যাচে ২৫৬ গোল করে সিটিতে প্রতিষ্ঠিত হওয়া আগুয়েরো সবসময় তার পরের গন্তব্য নিয়ে পরিষ্কার ছিলেন। ২০১৫ সালে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, বর্তমান চুক্তি শেষ হলে যেতে চান শৈশবের ক্লাব ইন্দেপেন্দিয়েন্তেতে। তারপর ২০১৯ সালে ক্লাব ছাড়ার ইঙ্গিত দিলেও তা হয়নি। ৩২ বছর বয়সী আগুয়েরোর চুক্তি শেষ হতে চলেছে, হয়তো স্বপ্ন পূরণও হবে।

অন্যরা: কিছু অর্থ উপার্জন করতে ম্যানসিটি আসন্ন দলবদলের বাজারে সেন্টার-ব্যাক এরিক গার্সিয়াকে বিক্রি করতে পারে বার্সার কাছে। গ্রীষ্মে তার সঙ্গে নতুন চুক্তি করতে ব্যর্থ তারা। ৩৫ বছর বয়সী ফের্নান্দিনিয়োর শূন্যতা পূরণ করা কঠিন, কিন্তু তিনিও চলে যেতে পারেন।

মেসুত ওজিল (আর্সেনাল)

২০১৩ সালে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে প্রায় সাড়ে চার কোটি ইউরোতে ওজিলকে নিয়ে এসে সাড়া ফেলেছিল আর্সেনাল। কিন্তু ২০১৮ সালে তাকে সাড়ে তিন লাখ পাউন্ড সাপ্তাহিক বেতন দেওয়ার আফসোসে পুড়েছে তারা। ইনজুরি, ফর্ম হারানো ও আকাঙ্ক্ষার অভাবে ৩১ বছর বয়সী মিডফিল্ডারের জন্য দলে জায়গা পাওয়া হয়ে গেছে বিরাট চ্যালেঞ্জের। হতাশ এই জার্মান মিডফিল্ডার ইঙ্গিত দিয়েছেন চলে যাওয়ার।

অন্যরা: আর্সেনালে সেন্টার ব্যাকের অভাব নেই। শাখোদরান মুস্তাফিজ, সক্রেতিস কিংবা ডেভিড লুইজদের সঙ্গে নতুন চুক্তি করা হতে পারে বিলাসিতা।

সার্জিও রামোস (রিয়াল মাদ্রিদ)

৪০ বছরের মধ্যে প্রথমবার গ্রীষ্মের দলবদলের বাজারে খরচ করেনি রিয়াল। কারণটা বোঝা যায়, দলে যখন ৩৪ বছর বয়সী রামোসের মতো খেলোয়াড় তাদের আছে। ২০০৫ সালে স্প্যানিশ ডিফেন্ডার যোগ দেন বার্নাব্যুতে, তারপর থেকে অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ক্লাবটির। কিন্তু শেষ হচ্ছে চুক্তির মেয়াদ, তার চাওয়া আরও দুই বছর রিয়ালেই থাকার। কী হয় শেষ পর্যন্ত, দেখার অপেক্ষা।

অন্যরা: ইন্টার মিলানে প্রায় যোগ দিয়েই ফেলেছিলেন লুকা মদরিচ, কিন্তু ৩৫ বছর বয়সী তারকা মাদ্রিদে তার ক্যারিয়ার শেষ করতে চান। তবে লুকাস ভাজকেজকে যে আর নতুন চুক্তির প্রস্তাব তারা দেবে না, বলাই যায়।

চুক্তির বাইরে যারা: কিছু খেলোয়াড়ের চুক্তি এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে এবং তারা নতুন ক্লাবের খোঁজ করছেন। আগেভাগে চুক্তির ইতি টেনেছেনব আতলেতিকো মাদ্রিদের সাবেক স্ট্রাইকার ডিয়েগো কস্তা। ম্যানচেস্টার সিটি, চেলসি ও লিভারপুলের মতো বড় তিনটি প্রিমিয়ার লিগে খেলা ড্যানিয়েল স্টুরিজ আছেন নতুন ঠিকানার খোঁজে। ওয়েস্ট হ্যাম ছেড়ে দেওয়ার পর সাবেক আর্সেনাল মিডফিল্ডার জ্যাক উইলশিয়ার ফিট থাকতে এখন বোর্নমাউথের সঙ্গে ট্রেনিং করছেন। জুভেন্টাস, আতলেতিকো মাদ্রিদ ও বায়ার্ন মিউনিখের সাবেক স্ট্রাইকার মারিও মানজুকিচ সর্বশেষ ক্লাব কাতারের আল দুহাইল ছেড়েছেন। ব্রাজিলের সাবেক তারকা আলেক্সান্দ্রে পাতো ও আর্জেন্টাইন এজেকুয়েইল গ্যারে আছেন এই তালিকায়।

ঢাকা/ফাহিম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়