ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

কেমোর যন্ত্রণা আর সহ্য হচ্ছে না মোশাররফ রুবেলের

সাইফুল ইসলাম রিয়াদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৩৭, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১   আপডেট: ০৮:৩১, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১
কেমোর যন্ত্রণা আর সহ্য হচ্ছে না মোশাররফ রুবেলের

ফের ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মোশাররফ হোসেন রুবেল। মূলত পুরোনো টিউমারই নতুন করে দেখা দিয়েছে। গত ২৪ জানুয়ারি দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবরটি জানান এই স্পিনার। কেমন আছেন তিনি? খোঁজ-খবর নিতে ফোনে কথা হচ্ছিল তার স্ত্রী ফারহানা চৈতির সঙ্গে। মুঠোফোনের অন্য প্রান্ত থেকে শোনা গলো ব্যাকুল কণ্ঠ, রুবেলের আকুতি, ‘কেমোর যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে আমি আর যেতে চাই না। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’

২০১৯ সালের মার্চে ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে রুবেলের। এক বছর ধরে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। কিন্তু গত জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে এমআরআই করার পর দেখা গেছে, পুরোনো টিউমারটি আবার নতুন করে বাড়ছে। তারপর থেকে আবার শুরু হয়েছে কেমোথেরাপি। দুই দফায় চারটি কেমো দেওয়া হবে। ২৪ জানুয়ারি প্রথম কেমো দেওয়ার পর গতকাল রোববার নেন দ্বিতীয় কেমো। তৃতীয় ও চতুর্থ কেমো দেওয়ার কথা রয়েছে ২১ ফেব্রুয়ারি ও ৭ মার্চ।

দেশের একটি ক্যান্সার হাসপাতালে বিদেশি চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রুবেলের কেমো চলছে। তার পরিবারের সঙ্গে রাইজিংবিডির কথা হয় দ্বিতীয় কেমোর পরেই। যন্ত্রণায় কাতর রুবেল কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। তাই তার স্ত্রীর মুখেই শুনতে হয় যাতনাময় দিনকালের কথা। তবে কথার একেবারে শেষ দিকে মুখ না খুলে পারেননি রুবেল।

রুবেলের বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে ফারহানা বলেন, ‘কেমোথেরাপি নিলে বিভিন্ন শারীরিক যন্ত্রণা দেখা দেয়। কেমোথেরাপির কিছু প্রতিক্রিয়া তো হয়ই। এর জন্যই মূলত এখন সে অসুস্থ। ব্রেন টিউমারটা বাড়ছে, এটাই মূলত এখন সমস্যা। তাছাড়া অন্য কোনও জটিলতা নেই। আল্লাহ-আল্লাহ করছি, যেন ব্রেন টিউমারটা দ্রুত চলে যায়।‘

ফারহানা জানান, সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সর্বশেষ কেমো দেওয়া হয়। এরপরে প্রায় এক বছর ফলোআপে ছিলেন রুবেল। তারপর নভেম্বরে এমআরআই করলে দেখা দেয় যে টিউমার বাড়ছে। তবে তখনও নিশ্চিত ছিলেন না চিকিৎসকরা। শেষে জানুয়ারিতে এমআরআইয়ের পর পুরোপুরি নিশ্চিত হলে কেমোথেরাপি দেওয়া শুরু হয়।

ক্রিকেট অঙ্গনের সহযোগিতায় এর আগে রুবেলের চিকিৎসা হয় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথে। এবার কি সেখানে নেওয়ার ইচ্ছে আছে? ফারহানার উত্তর, ‘ইচ্ছে তো আছে। তবে করোনার কারণে আসলে নেওয়াটা সম্ভব হচ্ছে না। এখন ভিসাটা করে রাখবো। কেমোথেরাপি শেষ হলেই যাবো। তবে চিকিৎসা হচ্ছে সিঙ্গাপুর থেকেই। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চিকিৎসকরা সব বুঝিয়ে দিচ্ছেন। আর ওখানে গিয়ে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হতো, এদিকে রুবেলের চিকিৎসাও খুব দ্রুত শুরু করা জরুরি বলে আর যাওয়া হয়নি।’

ফারহানা জানিয়েছেন, রুবেলের অসুস্থতার পর থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও সরকারের সহযোগিতা পেয়েছেন। এ ছাড়া তার সতীর্থরাও ছিলেন পাশে। রুবেলের এই চিকিৎসা ব্যয়বহুল। ইতোমধ্যে খরচ হয়ে গেছে অনেক টাকা। ফারহানা বলেন, ‘আমাদের নির্দিষ্ট কোনও চাওয়া-পাওয়া নেই। তবে আশা করি বিসিবি, সরকার আমাদের পাশে থাকবে। বিসিবি যদি আমাদের কোনও সহযোগিতা করে, তা অবশ্যই নেবো।’

ব্যাট-বল নিয়ে ২২ গজের পিচে যার ব্যস্ত থাকার কথা, তিনি এখন অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। কবে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ফিরবেন, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাই তো সবার কাছে দোয়া চাইলেন রুবেল, যাতে মার্চের কেমোথেরাপিই যেন শেষ কেমোথেরাপি হয়, দ্রুত যেন ফিরতে পারেন সুস্থ হয়ে।

ঢাকা/ফাহিম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়